স্বাক্ষর জাল করে আ. লীগের প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন, কেন্দ্রে অভিযোগ
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা বদলের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে আজ রোববার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী তার স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, যৌথ স্বাক্ষরের রেজলেশনকৃত প্যানেল পরিবর্তন করে সই জাল করে আব্দুল কাদের খোকনের নামের পরিবর্তে গত পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী অহিদুর রহমানের নাম পাঠানো হয়। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৫ম ধাপের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ জানুয়ারী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৯ নভেম্বর প্রতিটি ইউনিয়নে সম্পন্ন হওয়া তৃনমূলের বর্ধিত সভা থেকে পাঠানো তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো করা হয়। তৃণমূল জরিপ অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী এবং সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার যৌথ সই দিয়ে ১৩টি ইউনিয়নের প্রার্থী তালিকা মনোনয়ন বোর্ডে পাঠিয়ে দেন।
কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরকৃত তালিকা পরিবর্তন করে প্রার্থী পরিবর্তন করে ভিন্ন একটি তালিকা কেন্দ্রে জমা দেয়ার অভিযোগ ওঠে।
উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের এরকম দুটি তালিকা যাচাই করে দেখা গেছে দুটি তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় তালিকা পরিবর্তন করা হয়েছে। তালিকা দুটিতে সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকারের সই অবিকল থাকলেও সন্দেহের উদ্রেক হয় সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারীর দুই রকম স্বাক্ষর নিয়ে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন, যেই চিঠিতে তৃণমূলের জরিপ অনুসারে চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের খোকনকে যেই তালিকা দেওয়া হয়েছে সেটিতে তিনি নিজে স্বাক্ষর দিয়েছেন। যার প্রমাণপত্র তার কাছে রয়েছে। কিন্তু ওই ইউনিয়নের প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন করে আরেকটি তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয় বলে তিনি জানতে পারেন। পরে তিনি ওই কপি সংগ্রহ করে দেখেন সেটিতে তার সই জাল করা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি ইউনিয়নে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি নিশ্চিত হন। তাই তাৎক্ষণিক তিনি দলের যুগ্মসম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ সিনিয়র নেতাদের সাথে কথা বলেন। আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাহেদ সরকার বলেন, কে বা কারা এটি করেছে, তিনি তা জানেন না। তার কাছ থেকে অনেকেই এই তালিকা নিয়েছেন।
এদিকে স্বাক্ষর জালিয়াতি করে তৃণমূলের প্রার্থী জালিয়াতির বিষয়ে রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোয়ন প্রত্যাশী আব্দুল কাদের খোকন ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইসকান্দার আলী জানান, এই ধরনের জালিয়াতী আমরা আশা করি না। এভাবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দলের নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমে যাবে। যারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন তাদের চিহ্নিত করতে হবে।
Comments