গোলটেবিল বৈঠক

নগর সুশাসনের নতুন মাত্রা – দুর্যোগ ‍সহনশীলতা

সম্প্রতি প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার ও সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে একটি  অনলাইন সম্মেলন সভা/ ওয়েবিনার আয়োজন করেছে দ্য ডেইলি স্টার। গত ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারটির শিরোনাম ছিল ‘পেইভিং রেজিলিয়েন্স থ্রু সিটি গভর্নেন্স’। এখানে সে আলোচনার সারমর্ম প্রকাশ করা হলো।

সম্প্রতি প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার ও সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে একটি  অনলাইন সম্মেলন সভা/ ওয়েবিনার আয়োজন করে দ্য ডেইলি স্টার। গত ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারটির শিরোনাম ছিল 'পেইভিং রেজিলিয়েন্স থ্রু সিটি গভর্নেন্স'। এখানে সে আলোচনার সারমর্ম প্রকাশ করা হলো।

সেশন-১: 'নগরের বিভিন্ন দুর্যোগ পরিস্থিতির মোকাবিলায় নগরভিত্তিক সুশাসন প্রক্রিয়ার প্রতিষ্ঠা'

শুভাশিস রায়, হেড অব বিজনেস, দ্য ডেইলি স্টার

এই সেশনের উদ্দেশ্য হচ্ছে দুর্যোগ ঘটার পর তার ব্যবস্থাপনা করার পরিবর্তে দুর্যোগ মোকাবিলা করার পূর্ব- আরও উন্নত করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করা। আমরা আশা করি অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে প্রস্তুতিকে একটি দুর্যোগ সহনশীল শহর তৈরির জন্য ‍প্রয়োজনীয় মতামত এবং বিশ্লেষণী তথ্য পাব।

মো. সিরাজুল ইসলাম, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)

মাননীয় মেয়রের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন একটি সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান তৈরি করার উদ্যোগ হাতে নিয়েছে, যেটি ২০৫০ সাল পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। মাস্টারপ্ল্যানটি স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।

এই পরিকল্পনাটি রাজউকের বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ), সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের দুর্যোগ সংক্রান্ত কনটিনজেন্সি পরিকল্পনা, ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পরিকল্পনাকে অন্তর্ভুক্ত করবে। আমরা নগর ভবনের তত্ত্বাবধানে জরুরি কার্যক্রম পরিচালনা ( ইওসি) কেন্দ্র চালু করতে যাচ্ছি, যেটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হবে। এই কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জনসম্পদকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আশা করা যায়, তাদের প্রশিক্ষণ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হবে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস. এম জুলফিকার রহমান, পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স

ঢাকায় যদি একটি বড় আকারের ভূমিকম্প হয়, তাহলে আমাদেরকে ঢাকার বাইরে অবস্থিত স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা প্রয়োজন হবে। সিটি করপোরেশনের উচিত এসব স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য কিছু উপকরণ উদ্বৃত্ত হিসেবে রেখে দেওয়া। আমাদের একটি সাধারণ পরিচালন পদ্ধতি (এসওপি) তৈরি করতে হবে, যার মাধ্যমে জরুরি পরিস্থিতিতে দমকল বাহিনী প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে।

দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমাদের কোনো বাড়তি সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। বেশিরভাগ সরঞ্জামই একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর বাড়তি বোঝায় পরিণত হয় কিংবা অকেজো হয়ে পড়ে। এ কারণে আরও বেশি করে সরঞ্জাম কেনার দিকে আমাদের নজর দেওয়া উচিত নয়। পরিবর্তে, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে প্রয়োজন অনুযায়ী যথেষ্ট পরিমাণ মানবসম্পদ আমাদের হাতে আছে, যাদেরকে দুর্যোগের সময় কাজে লাগানো যাবে।

ডা. নাজমুন নাহার, ডেপুটি ডিরেক্টর- ডিআরআর এ্যান্ড সিসিএ, সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ

আমি প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত থাকার গুরুত্বের দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। আমাদের জাতীয় নীতিমালার সঙ্গে মিল রেখে সব হাসপাতালের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।  

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনাকে সহায়তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা ও সম্পূরক উপকরণগুলোও আমাদের তৈরি করে রাখতে হবে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সব কর্মীকে সদা-প্রস্তুত রাখার জন্য নিয়মিত বিরতিতে মহড়ার আয়োজন করতে হবে। এ ছাড়াও, বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগের ক্ষেত্রে জরুরি সেবা পাওয়ার জন্যও একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

দুর্যোগের মুহূর্তে কর্মীরা যাতে নিরাপদে দালান থেকে বের হয়ে আসতে পারেন, সে বিষয়টি সব কর্মক্ষেত্রে, বিশেষ করে কলকারখানাগুলোতে নিশ্চিত করতে হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আমাদেরকে একটি সর্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সমন্বয়ে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।

মানিক কুমার সাহা, অ্যাক্টিং ঢাকা অ্যান্ড কান্ট্রি পোর্টফোলিও ম্যানেজার, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

আমরা একটি রিস্ক রিডাকশন প্ল্যান (ঝুঁকি কমানোর পরিকল্পনা) ও কনটিনজেন্সি পরিকল্পনা তৈরি করে আমাদের মূল লক্ষ্যের উদ্দেশ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পথ পাড়ি দিয়েছি।  সিটি করপোরেশনের বার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে আমাদের রিস্ক রিডাকশন কর্মপরিকল্পনা ও কনটিনজেন্সি পরিকল্পনার মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে পারলে তা হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমাদের সমন্বয়ের ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের ঘাটতি আছে, যেটি কমিয়ে আনা দরকার।

এ ছাড়াও, বেসরকারি খাতের জন্য আমাদের একটি অবকাঠামো তৈরি করতে হবে, যাতে তারা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে যে কাজগুলো করছে তা আরও বেশি ফলপ্রসূ হয়।

জীবন রক্ষায় সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল উদ্দেশ্য হতে হবে বড় আকারের দুর্যোগের মধ্যেও কাজ চালিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করা। এ ক্ষেত্রে বেসামরিক ও সামরিক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তহবিলের অভাবে বড় আকারের দুর্যোগের সময় সিটি করপোরেশন তাদের লোকবল ও অন্যান্য সরঞ্জামকে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারে না। আমাদেরকে এটি নিশ্চিত করতে হবে যাতে সিটি করপোরেশন যথেষ্ট পরিমাণ তহবিল জোগাড় করতে পারে এবং দুর্যোগের সময় তাদের লোকবল ও অন্যান্য সম্পদকে প্রয়োজন অনুযায়ী কাজে লাগাতে পারে।

ডা. মো. মাহবুবুল আলম, হেড অব প্রোগ্রাম, পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি)

আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করেছি। কোনো দুর্যোগ হলে তার ক্ষয়ক্ষতিকে কমিয়ে আনার জন্য (অঞ্চলভিত্তিক বাস্তবতা কে ধর্তব্যে নিয়ে) স্থানীয় কমিটি তৈরি করেছি। আমরা এই পরিকল্পনাগুলো সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের কাছে জমা দিয়েছি। এসব পরিকল্পনা তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছ থেকে এসেছে এবং এতে আছে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন ব্যবহারিক উদ্যোগের বিস্তারিত বর্ণনা। দীর্ঘমেয়াদে দুর্যোগের বিরুদ্ধে সহনশীলতা তৈরি ও সেটিকে মজবুত করার জন্য সর্বক্ষেত্রে এই মডেলটির প্রচলন করা উচিত।

মোস্তাফিজুর রহমান, হিউম্যানিটারিয়ান অ্যান্ড রিজিলিয়েন্স ম্যানেজার, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

আমরা স্কুলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন (ডিআরআর) দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করে কিছু পরিকল্পনা তৈরি করেছি যাতে দুর্যোগের সময় অবকাঠামো নিরাপদ থাকে এবং শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত না হয়। দুর্যোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনার বিষয়টি আমাদের শিক্ষা নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবকে জরুরিভাবে বিবেচনা করা উচিত।

স্কুলগুলো কিছু নিজস্ব কমিটি গঠন করতে পারে, যার সদস্যরা দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলোকে বিশ্লেষণ করতে পারে। ঝুঁকি সম্পর্কে ভালো ধারণা পেলে সেগুলো কমিয়ে আনার জন্য পরিকল্পনা করাও সহজ হবে।

ইয়াসনা রহমান, প্রজেক্ট ম্যানেজার, স্ট্রেন্থেনিং আরবান রিজিলিয়েন্স প্রজেক্টস (সার্প -২), প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

আমাদের সার্প -২ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনকে (এনসিসি) নগরভিত্তিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা ও সহনশীলতা প্রস্তুতিতে সহায়তা করা। আমরা আমাদের ওয়ার্ড দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার 'কনটিনজেন্সি' পরিকল্পনাগুলো তৈরির সময় পূর্ববর্তী দুর্যোগের উদাহরণ কাজে লাগিয়েছি এবং বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কারিগরি সহায়তা নিয়েছি। আমরা এই নাগরিক সেবাসংস্থাগুলোর  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সাংগঠনিক অবকাঠামোকে আরও মজবুত করতে চাই, যাতে তারা দুর্যোগ প্রতিরোধ ও মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে আরও সক্ষম হয়ে ওঠে।

সেশন-২: 'স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দৈনন্দিন সেবা ও বেসরকারি খাতের কর্তৃপক্ষের জরুরি অবস্থার প্রস্তুতি'

এই সেশনে আমরা আলোচনা করব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নীতিমালা ও কাঠামো পর্যায়ের দক্ষতা নিয়ে, যাতে একটি দুর্যোগ সহনশীল শহর তৈরি করা যায়। দুর্যোগের সময় বেসরকারি খাত, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে এই নাগরিক সেবাসংস্থাগুলোর দুর্যোগকালীন ও পরবর্তী  সেবা ব্যবস্থাপনায় কী ধরনের সাংগঠনিক প্রস্তুতি দরকার, সেটার ওপর আমরা সার্প -২ প্রকল্পের মাধ্যমে বিশেষ নজর দিয়েছি।

রেজাউল করিম, দুর্যোগ সংক্রান্ত ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ

দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলীকে (এসওডি) ইতোমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি অধিদপ্তরের ভূমিকার কথা নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু দুর্যোগ চলাকালীন সময়ে বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ভূমিকার ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অবকাঠামোর মধ্যে বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। এতে তাদের দুর্যোগ সহনশীলতা তৈরির কার্যক্রমে অংশগ্রহণের আইনি দায়বদ্ধতা তৈরি হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহামারির প্রভাবের সঙ্গে মানিয়ে চলার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে একটি জরুরি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন। নতুন এই পরিকল্পনাটি আগের হাসপাতাল ধারাবাহিকতা রক্ষা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পর তৈরি করা হবে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমাদের তৃতীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোর দুর্যোগের বিরুদ্ধে সংগ্রামের উপযোগিতা পরীক্ষা করতে হবে।

মরিয়ম নেসা, ম্যানেজার – ওম্যান রাইটস অ্যান্ড জেন্ডার ইকুইটি, এ্যাকশনএইড বাংলাদেশ

আমাদেরকে স্থানীয় পর্যায়ের পরিকল্পনার সঙ্গে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিকল্পনাকে সমন্বিত করতে হবে, যাতে দুর্যোগ সহনশীলতা তৈরির সামগ্রিক পরিকল্পনা টেকসই হয়। এ ছাড়াও, চলমান পরিকল্পনা ও নীতিমালার বাস্তবায়ন যেন সঠিকভাবে হয় সেদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।

বেসরকারি খাতের দায়িত্ব নিতে হবে এবং নিজেদের কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। নতুন একটি কারখানা বা দালান তৈরির সময় আমরা যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কিছু খরচ করি, তাহলে সেটি আমাদেরকে শারীরিক ও আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।

ডা. সূচিতা শারমীন, অধ্যাপক, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

যখন আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার আন্তর্জাতিক অবকাঠামোগুলো পর্যবেক্ষণ করি, তখন একইসঙ্গে আমাদের স্থানীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পরিকল্পনা তৈরির দিকেও নজর দিতে হবে।

ইতোমধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কিছু ভালো নীতিমালা রয়েছে এবং আমাদের নিশ্চিত করতে হবে সেগুলো যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়।

এ ছাড়াও, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যেন ফার্স্ট রেস্পন্ডার ও সেবাদাতারা দুর্যোগের সময় পর্যাপ্ত প্রস্তুত থাকেন। তারা নিজেরাই যদি দুর্যোগের মুহূর্তে ঝুঁকিতে থাকেন, তাহলে কীভাবে তারা অন্যদের সহায়তা করবেন?

ড. মাহবুবুল আলম, হেড অব প্রোগ্রাম, পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (পিএসটিসি)

মানব সভ্যতার ইতিহাসে আর কোনো রোগ করোনাভাইরাসের মতো এত দ্রুত ছড়ায়নি। বাংলাদেশে জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্ব ও শহরায়নের কারণে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়েছে। শুধু হাসপাতাল নির্মাণ করে আমরা এই মহামারির হাত থেকে মুক্তি পাব না।

শহর এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা দেওয়ার জন্য মূলত সিটি করপোরেশন দায়বদ্ধ। এই দায়িত্ব পালনের জন্য সংস্থাটির দরকার সুষ্ঠু অবকাঠামো, জনসম্পদ এবং কারিগরি সহায়তা, যা বর্তমানে নেই বললেই চলে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস. এম জুলফিকার রহমান, পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স

আমরা ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। এ পর্যন্ত আমরা প্রায় ৪৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়েছি। আমাদের এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে বড় আকারে পরিচালনা করতে হবে, যাতে আমাদের হাতে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের একটি শক্তিশালী দল প্রস্তুত থাকে, যারা দুর্যোগের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা এই ব্যবধান দূর করার জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করেছি। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিওদেরও এই উদ্যোগে সহায়তা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

সেশন-৩: 'সবার জন্য জ্ঞানের উৎসকে সহজলভ্য করার প্রক্রিয়ার ব্যবস্থাপনা এবং নগর দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়।'

শাহনাওয়াজ ওয়ারা, ম্যানেজার – কোঅর্ডিনেশন, আরবান রিজিলিয়েন্স প্রজেক্ট, সেভ দ্য চিলড্রেন, বাংলাদেশ

নগর প্রেক্ষাপটে ডিআরআর, সামগ্রিক ডিআরআরের একটি বিশেষায়িত অংশ এবং এর বিস্তারিত বর্ণনা বেশ ভিন্নধর্মী। শহরে ডিআরআর বাস্তবায়নের জন্য কারিগরি জ্ঞানের প্রয়োজন হয় এবং এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সকল কার্যক্রমকে আনুষ্ঠানিক হিসেবে বিবেচনা করা যায়।

সিটি কর্পোরেশনের মতো স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কীভাবে তথ্যভিত্তিক সমন্বয় তৈরির মাধ্যমে দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমানো নিশ্চিত করতে পারে এবং কীভাবে সবচেয়ে বেশি দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উদ্যোগের উন্নতি করা যায়, তা নিয়ে আমরা আলাপ করব। ।

আজ আমরা কথা বলব দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে যেসব তথ্য ও জ্ঞান আছে, সেগুলো কীভাবে সবার জন্য সহজলভ্য করা যায়, তা নিয়ে। কীভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয়ের মাধ্যমে জ্ঞানের ব্যবস্থাপনাকে আরও মজবুত করার করা যায়, সেটা নিয়েও আমরা আলোচনা করব।

মো. সিরাজুল ইসলাম, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)

সিটি করপোরেশনের বার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে ভৌগলিক তথ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি দুর্যোগ ঝুঁকি মানচিত্র তৈরির কাজ চলছে। এই মানচিত্রটি তৈরি হলে এর মাধ্যমে অঞ্চলভিত্তিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা যাবে।

অপূর্ব স্বাতী মাহবুব, পলিসি অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিষ্ট, ইউএনডিপি

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িতদের জন্য একটি প্রাথমিক বিবেচনার বিষয় হচ্ছে পূর্বপ্রস্তুতি এবং উন্নয়ন থেকে অর্জিত সাফল্যকে ধরে রাখার সক্ষমতা তৈরি। আমাদের এটা বুঝতে হবে, নগরগুলোতে আমাদের অনেক অংশীজন বস্তিতে বসবাস করেন এবং তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত করা বেশ ঝামেলাপূর্ণ হতে পারে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে বস্তিবাসীরা কয়েক বছর পর পর শহরের এক অংশ থেকে আরেক অংশে যাতায়াত করতে থাকে এবং বিভিন্ন এলাকায় নানা ধরনের ঝুঁকি রয়েছে।

দুর্যোগের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে মনোভাব পরিবর্তন করতে হলে তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি উপায় হচ্ছে স্কুলের পাঠ্যবইতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করা।

সব সরকারি কর্মচারীর জন্য মূল পাঠ্য বিষয়ের তালিকায় দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার প্রশিক্ষণকে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। আমাদের জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির (এনএপিডি) সঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে এই কোর্সগুলো সব বিসিএস ক্যাডারের জন্য আবশ্যক করা যায়।

মুকিত বিল্লাহ, প্রোগ্রাম এ্যাসিস্ট্যান্ট, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন অ্যান্ড হিউম্যানিট্যারিয়ান এইড (ইসিএইচও) বাংলাদেশ

সিটি করপোরেশনগুলো জরুরি পরিচালনা কেন্দ্র (ইওসি) তৈরির কাজ করছে, কিন্তু এটি কতটুকু কার্যকর হবে? ডিআরআর প্রকল্পের কাজ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় সিটি করপোরেশন কোনো সিদ্ধান্ত এককভাবে নিতে পারে না। কোনো ঝুঁকিপূর্ণ দালান বা সড়ক চিহ্নিত করতে পারলেও তাদেরকে গণপূর্ত অধিদপ্তর বা স্থানীয় সরকারের সহায়তা নিতে হয়।

তথ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করা প্রয়োজন, যার সঙ্গে সরকারি তথ্য ভাণ্ডার সংযুক্ত থাকবে। এর মাধ্যমে এই খাতের সব গবেষণাপত্র ও নিরীক্ষণ সহজে খুঁজে পাওয়া যাবে। এই নিরীক্ষাগুলোকে সময়ে সময়ে হালনাগাদ করার প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু প্রতিবার নতুন করে সেগুলো পরিচালনা করার প্রয়োজন নেই।

তথ্যের ব্যবস্থাপনা সব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিচালনা করা উচিত। নগরকেন্দ্রিক ডিআরআরে কোনো ওয়ার্কিং গ্রুপ অথবা নিয়মিত বৈঠকের আয়োজন থাকে না। এনজিও এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা প্রয়োজন অনুযায়ী বৈঠক করেন, কিন্তু সেখানে কোনো কেন্দ্রীয় কমিটি থাকে না।

ড. মাহবুবা নাসরিন, উপাধ্যক্ষ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক, ইন্সটিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আমরা পল্লী ডিআরআরের ক্ষেত্রে বড় আকারের উন্নয়ন দেখতে পেয়েছি। তবে আমাদেরকে শহর এলাকাগুলোতে আরও বেশি নজর দিতে হবে, কারণ অদূর ভবিষ্যতে দেশের সমগ্র জনসংখ্যার ৫০ শতাংশেরও বেশি শহরে থাকবেন।

আমরা আগে ভাবতাম বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন: বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় শুধু পল্লী এলাকাগুলোতেই আঘাত করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বন্যা, অগ্নিকাণ্ড, দালান ধসে পড়া, ভূমিকম্প ইত্যাদি দুর্যোগ শহরকেও প্রভাবিত করে।

একটি জাতীয় সহনশীলতা প্রকল্প (এনআরপি) চলমান রয়েছে, যেখানে নগরকেন্দ্রিক সহনশীলতা অর্জনের বিষয়টির দিকে আলাদা করে নজর দেওয়া হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম আমাদের শক্তির উৎস, কারণ তারা আশ্রয় ব্যবস্থাপনা, প্রাথমিক চিকিৎসা ইত্যাদি নিয়ে নগরগুলোতে কাজ করে থাকে। বস্তুত সব প্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবকদের নেতৃত্ব তরুণ-তরুণীদের হাতেই থাকা উচিত।

আগুন ও দালান ধসে পড়ার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনের মাধ্যমে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

মানিক কুমার সাহা, অ্যাক্টিং ঢাকা অ্যান্ড কান্ট্রি পোর্টফোলিও ম্যানেজার, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তরুণ-তরুণীদের অন্তর্ভুক্ত করার একটি সম্ভাব্য জায়গা হচ্ছে স্বেচ্ছাশ্রম। আমরা দেখতে পেয়েছি শহরগুলোতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবকরা অসাধারণ কাজ করছেন।

যেকোনো দুর্যোগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীরা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এ কারণে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনের সময়ে কম ঝুঁকিতে থাকা সদস্যদের নির্বাচন করা উচিত।

এই নির্বাচন প্রক্রিয়া মেনে চললে তারা দুর্যোগ পরিস্থিতিতে দ্রুত কাজে নামতে পারবেন এবং নিজেদেরকে ঝুঁকিতে না ফেলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের সাহায্য করতে পারবেন।

এ ছাড়াও, আমরা নগর সম্প্রদায়ের স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার তৈরির চেষ্টা করেছি। এই তথ্যভাণ্ডারটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে হোস্ট করা হয়েছে।

দুর্যোগের প্রভাব কমানোর কর্মপরিকল্পনা এবং কনটিনজেনসি পরিকল্পনাগুলোকে নিয়মিত কার্যক্রম হিসেবে পরিচালনা করতে হবে, শুধু প্রকল্পের ভিত্তিতে নয়।

মোস্তাফিজুর রহমান, হিউম্যানিটারিয়ান অ্যান্ড রিজিলিয়েন্স ম্যানেজার, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

তথ্যের সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশের একটি দুর্বল দিক। যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে তথ্য থাকে, তারা কখনও কখনও সেটি অন্যদের জন্য সহজলভ্য করার কথা ভুলে যায়।

এই সমস্যাটি সমাধানের একটি উপায় হচ্ছে সরকারি কর্মীদের প্রশিক্ষণ সহায়িকার সঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য সংযুক্ত করা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার তথ্য জানা সবার জন্য জরুরি। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো নতুন, পরিবর্তনশীল ও নানামুখী দুর্যোগ যেমন সম্পর্কে ভালো করে জানার জন্যেও তথ্যভাণ্ডার থাকা উচিত।

সুপারিশসমূহ:

· দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মপরিকল্পনা এবং কনটিনজেনসি পরিকল্পনাকে সিটি করপোরেশনের বার্ষিক পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করা।

· দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি খাতের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য একটি অবকাঠামো তৈরি করা।

· সিটি করপোরেশন যাতে তাদের নিজ আয়ের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের জোগান দিতে পারে, সে ব্যবস্থা করা।

· এলাকাভিত্তিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় জনমানুষের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা।

· হাসপাতালের জন্য আলাদা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করা।

· আমাদের শিক্ষাক্রমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা।

· স্বেচ্ছাসেবকদের সংখ্যা বাড়ানো এবং তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা।

· দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সব জ্ঞান, পরিকল্পনা ও নথির জন্য একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার তৈরি করতে হবে।

· সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ সহায়িকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

· সব সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার একটি কেন্দ্রীয় ফোরাম তৈরি করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Anontex Loans: Janata in deep trouble as BB digs up scams

Bangladesh Bank has ordered Janata Bank to cancel the Tk 3,359 crore interest waiver facility the lender had allowed to AnonTex Group, after an audit found forgeries and scams involving the loans.

5h ago