‘দাবিতে অটুট, অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবো না’

নিরাপদ সড়কের দাবিতে সড়কে দুর্নীতি, লুটপাট ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ব্যঙ্গচিত্র এঁকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাংশ। রামপুরা ব্রিজ, ৫ ডিসেম্বর ২০২১। ছবি: মুনতাকিম সাদ/স্টার

নিরাপদ সড়কের দাবিতে সড়কে দুর্নীতি, লুটপাট ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ব্যঙ্গচিত্র এঁকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে রামপুরা ব্রিজে অবস্থান নিয়ে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।

আগামীকাল দুপুর ১২টায় সড়কে নিহতদের স্মরণে রামপুরা ব্রিজে কালো ব্যাজ ধারণ করবেন তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে খিলগাঁও মডেল কলেজের ছাত্রী সোহাগী সামিয়া বলেন, 'আন্দোলন নিয়ে যারা অপপ্রচার করছে তারা বহিরাগত, আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কেউ নয়।'

তিনি আরও বলেন, 'যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বহিরাগতরা এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের ১১ দফা দাবিতে এই আন্দোলন চলমান থাকবে।'

১১ দফা দাবি

১. সড়কে নির্মম কাঠামোগত হত্যার শিকার নাঈম ও মাঈনউদ্দিন হত্যার বিচার করতে হবে। তাদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। গুলিস্তান ও রামপুরা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় পথচারী পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।

২. সারাদেশে সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফপাস সরকারি প্রজ্ঞাপন দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। হাফপাসের জন্য কোনো সময় বা দিন নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে না। বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সব রুটে বিআরটিসির বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।

৩. গণপরিবহনে ছাত্র-ছাত্রী এবং নারীদের অবাধ যাত্রা ও সৌজন্যমূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

৪. ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি এবং লাইসেন্সবিহীন চালককে নিয়োগ দানকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বিআরটিএর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৫. সব রাস্তায় ট্রাফিক লাইট, জেব্রা ক্রসিং নিশ্চিত করাসহ জনবহুল রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

৬. বাসগুলোর মধ্যে বেপরোয়া প্রতিযোগিতা বন্ধে এক রুটে এক বাস এবং দৈনিক আয় পরিবহন মালিকের মধ্যে তাদের অংশ অনুযায়ী সমান ভাবে বণ্টন করার নিয়ম চালু করতে হবে।

৭. শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র নিশ্চিত করতে হবে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। চুক্তিভিত্তিতে বাস দেওয়ার বদলে টিকেট ও কাউন্টারেরভিত্তিতে গোটা পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। শ্রমিকদের জন্য বিশ্রামাগার ও টয়লেটের ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. গাড়ি চালকের কর্মঘণ্টা একনাগাড়ে ৬ ঘণ্টার বেশি হওয়া যাবে না। প্রতিটি বাসে ২ জন চালক ও ২ জন সহকারী রাখতে হবে। পর্যাপ্ত বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে। পরিবহন শ্রমিকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৯. যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক ও সরকারের প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করতে হবে এবং এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

১০. ট্রাক, ময়লার গাড়িসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সময় নির্ধারিত করে দিতে হবে।

১১. মাদকাসক্তি নিরসনে সমাজ জুড়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। চালক-সহকারীদের নিয়মিত ডোপ টেস্ট ও কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

Comments