ভুট্টার চারায় সবুজ তিস্তার চর

তিস্তা নদীর চরজুড়ে যে দিকে চোখ যাবে সে দিকে শুধু সবুজের সমারোহ। এ সবুজ ভুট্টাখেতের। তিস্তার বালুচরে ভুট্টা চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন চরের চাষিরা।
লালমনিরহাটের হাতীবান্দা উপজেলায় তিস্তার চর সিন্দুর্নায় ভুট্টাখেত। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

তিস্তা নদীর চরজুড়ে যে দিকে চোখ যাবে সে দিকে শুধু সবুজের সমারোহ। এ সবুজ ভুট্টাখেতের। তিস্তার বালুচরে ভুট্টা চাষ করে ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন চরের চাষিরা।

ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

মাইলের পর মাইল জুড়ে পলি মিশ্রিত বালু মাটিতে সব ধরনের ফসল ফলানো যায়। অন্য ফসলের আশানুরূপ ফলন না পেলেও ভুট্টার ফলন হচ্ছে বাম্পার। তাই চরের চাষিরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকেছেন অনেক আগে থেকেই।

ভুট্টার আশানুরূপ ফলন আর দামে লাভবান চরাঞ্চলের চাষিরা। ফিড কোম্পানিগুলো সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ভুট্টা কিনে নেওয়ায় তাদের তেমন সমস্যায় পড়তে হয় না।

লালমনিরহাট কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার ৫ উপজেলায় ৩৫ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল ৩৪ হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে। অধিকাংশ ভুট্টাই চাষ হচ্ছে তিস্তার চর ও নদী তীরবর্তী বিস্তৃত এলাকায়।

হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তার চর সিন্দুর্না এলাকার কৃষক জহুরুল হক (৬০) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর তিস্তার বালুচরে ১৯৫ শতক জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। গত বছর চাষ করেছিলাম ১৭০ শতক জমিতে। বীজ, সার ও শ্রমিকের খরচ হবে ৬০-৬৫ হাজার টাকা। প্রতি শতক জমি থেকে ৫০-৫৫ কেজি ভুট্টা পাওয়া যাবে।'

'প্রতি মণ ভুট্টা ৭২০-৮০০ টাকায় বিক্রি করা হয়' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'গত ১৫ বছর ধরে তিস্তার চরে ভুট্টা চাষ করছি। প্রথমে তেমন ফলন না পেলেও এখন বাম্পার ফলন পাচ্ছি।'

'ভুট্টা চাষ করে চরের কৃষকরা ভাগ্যের পরিবর্তন করছে,' বলে যোগ করেন তিনি।

পাটগ্রাম উপজেলার তিস্তার চর কুচলিবাড়ী এলাকার কৃষক মন্তাজ আলী (৬২) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চরাঞ্চলে ভুট্টার আবাদ আসার আগে চরের জমি পতিত ছিল। অন্য ফসলের আশানুরূপ ফলন না হওয়ায় এসব জমিতে ফসল ফলানো হয়নি। এখন ভুট্টা চাষে তারা মনোযোগী হচ্ছেন।'

'আমরা ভুট্টা চাষে আশানুরূপ ফলন ও দাম পাচ্ছি। শুধু ভুট্টা চাষ করেই চরের কৃষকরা টিকে আছেন। গত বছর ৮ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছিলাম। এ বছর চাষ করেছি ১০ বিঘায়। আশা করছি, ভালো ফলন ও দাম পাবো।'

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামিম আশরাফ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেলার প্রায় ৪০ হাজার কৃষক ভুট্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বিশেষ করে চরের কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন।'

তিনি জানান, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ভুট্টার চাষ শুরু হয় আর ফসল ঘরে তোলা হয় এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে।

'ভুট্টা চাষে তেমন খরচ নেই কিন্তু রয়েছে আশানুরূপ লাভ। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের ভুট্টা চাষে পরামর্শ ও পরিচর্যার দিকনির্দেশনা দিচ্ছি,' যোগ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

Comments

The Daily Star  | English

An April way hotter than 30-year average

Over the last seven days, temperatures in the capital and other heatwave-affected places have been consistently four to five degrees Celsius higher than the corresponding seven days in the last 30 years, according to Met department data.

10h ago