‘জিংক সমৃদ্ধ ধানের এক চতুর্থাংশ আসছে দক্ষিণাঞ্চল থেকে’
বাংলাদেশের জিংক সমৃদ্ধ ধানের ৪ ভাগের ১ ভাগ দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসছে এবং ভবিষ্যতে দক্ষিণাঞ্চলে জিংক সমৃদ্ধ ধান চাষের বেশ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে একদিকে যেমন ক্ষুধা ও দরিদ্রতা দূর হবে, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতা থেকেও বাঁচা সম্ভব হবে বলে কৃষি বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন।
আজ রোববার সকালে বরিশাল নগরীর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে 'বায়োফর্টিফাইড জিংক চাল উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধি করা' শীর্ষক এক কর্মশালায় কৃষি বিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্টরা এ সব কথা বলেন।
বক্তারা জানান, বাংলাদেশে গত বছর ১ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে জিংক সমৃদ্ধ ব্রি-৭৪ ধানের চাষ হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ২৯ হাজার ৮ হেক্টর জমিতে এই ধান চাষ হয়েছে, যা মোট কৃষি এলাকার ২৫ ভাগেরও বেশি।
বরিশাল বিভাগের মধ্যে ভোলায় সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ৯৬ হেক্টর জমিতে এই ধানের চাষ হয়েছে, যা বিভাগের মধ্যে প্রায় ৬০ ভাগ বলে অনুষ্ঠানে উল্লেখ করা হয়।
এতে টেকনিক্যাল সেশনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বরিশাল আঞ্চলিক স্টেশনের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন।
তিনি বলেন, 'আগামী দিনগুলোতে যদি জনপ্রিয় যে ধানগুলো কৃষকরা চাষ করে থাকেন, যেমন ব্রি-৫২ এবং অন্যান্য ধানগুলো যদি জিংক সমৃদ্ধ করা যায়, তাহলে দেশে পুষ্টিহীনতা অনেকটাই দূর হবে।'
অনুষ্ঠানে বিএডিসির উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, 'বিএডিসির মাধ্যমে জিংক সমৃদ্ধ ধানের উৎপাদন প্রতি বছর বাড়ছে। আমাদের এ বছর টার্গেট ৩৩০ মেট্রিক টন। গত বছর ৩২০ টন টার্গেট ছিল।'
বক্তারা বলেন, 'ব্রি-৭৪ মোটা জাতের ধান। এটা যদি চিকন ব্রি-৮৪ জাতের মধ্যে চাষ ও ব্যবহার বাড়ানো যায়, তাহলে দেশে পুষ্টি ঘাটতি দূর হবে। জিংক সমৃদ্ধ ব্রি-৭৪ এর গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৭ টন। এর যদি ব্যবস্থাপনা ভালো হয়, তবে এ ফলন ৮ টন পর্যন্ত সম্ভব হবে।'
এই ধান উৎপাদনে কৃষকদের আগ্রহ বাড়লেও এটি সব জায়গার বাজারে পাওয়া যায় না বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।
এটি বাজারে পৌঁছাতে সরকারি-বেসরকারি ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন এবং সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে এই ধানের অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ করেন তারা।
সেমিনারে বক্তারা ধানের পাশাপাশি এ অঞ্চলে মুগ ডালকেও জিংক সমৃদ্ধ করার আহবান জানান।
কৃষি খাতের বেসরকারি সংস্থা হারভেস্ট প্লাসের আয়োজনে এ ওয়ার্কশপে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. তৌফিকুল আলম ও বিশেষ অতিথি ছিলেন হারভেস্ট প্লাসের কান্ট্রি ম্যানেজার খায়রুল বাশার।
Comments