করোনাকালে পুনাকের মেলা, ঝুঁকি উচ্চ থেকে উচ্চতর
করোনাভাইরাস সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ১২টি জেলার মধ্যে লালমনিরহাট থাকলেও এখানে পুরোদমে চলছে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) শিল্পপণ্য মেলা। এতে করোনাভাইরাস বেশি বেশি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
মেলায় আয়োজন করা হয়েছে সার্কাসসহ বিভিন্ন খেলার। প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় করছেন মেলায়। অধিকাংশ দর্শনার্থীর মুখে নেই মাস্ক, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। মেলায় সীমান্তবর্তী এলাকা ও স্থলবন্দর থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে।
গত ১২ জানুয়ারি থেকে লালমনিরহাট শহরের রেলওয়ে শহীদ হোসেন সোহরাওয়ার্দী মাঠে এ মেলা চলছে। মেলা বন্ধ রাখতে স্থানীয়রা দাবি জানালেও পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনও রয়েছে নীরব ভূমিকায়।
মেলায় আসা দর্শনার্থী আলমগীর হোসেন বাবু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুনাকের শিল্পপণ্য মেলা লালমনিরহাটে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।'
পরিবারের সদস্যদের আবদারে করোনার ঝুঁকি নিয়ে তাকে মেলায় আসতে হয়েছে। বন্ধ না করা হলে এটি লালমনিরহাটবাসীর জন্য চরম ক্ষতির কারণ হয়ে উঠবে বলে জানান তিনি।
অপর দর্শনার্থী রশিদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মেলা প্রাঙ্গণে সীমান্ত এলাকা ও স্থলবন্দর থেকে আসা অনেক দর্শনার্থী দেখা গেছে। শরীরের সঙ্গে শরীর লেগে যাচ্ছে তাদের। ভিড় ঠেলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মেলা ঘুরতে হয়েছে।'
মেলাটি অবিলম্বে বন্ধের দাবি জানান তিনি।
লালমনিরহাট জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) রবিউল ইসলাম গতরাতে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মেলাটির ১ মাসের অনুমোদন রয়েছে। করোনার উচ্চ ঝুঁকিতে লালমনিরহাট থাকায় মেলা বন্ধে এখনো কোনো সরকারি নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।'
এ বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা আসলে অবশ্যই তা মানা হবে বলেও জানান তিনি।
তবে লালমনিরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় মেলা সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টিএমএ মমিন শুক্রবার রাতে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সরকারের পরিপত্র পাওয়া গেছে। শিগগির সভা আহ্বান করে পুনাকের মেলা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। লালমনিরহাট সীমান্তবর্তী জেলা, আর এখানে স্থলবন্দর থাকায় কোভিড-১৯ এর উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রয়েছে এ জেলা।'
কোভিড-১৯ এর উচ্চ ঝুঁকি ঠেকাতে পুনাকের শিল্পপণ্য মেলাটি বন্ধ রাখতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন লালমনিরহাটবাসী।
Comments