আন্তর্জাতিক রিফুয়েলিংয়ের জায়গা হবে কক্সবাজার: প্রধানমন্ত্রী

কক্সবাজার হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিংয়ের একটি জায়গা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রিফুয়েলিংয়ের ক্ষেত্রে একেক সময়, একেক দেশ অগ্রাধিকার পায়। এক সময় হংকং ছিল। এরপর থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, এখন দুবাই। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিংয়ের একটি জায়গা।
pm.jpg
ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজার হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিংয়ের একটি জায়গা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রিফুয়েলিংয়ের ক্ষেত্রে একেক সময়, একেক দেশ অগ্রাধিকার পায়। এক সময় হংকং ছিল। এরপর থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, এখন দুবাই। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিংয়ের একটি জায়গা।

আজ বুধবার সকালে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বহুতল ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের সার্বিক উন্নয়ন আমাদের লক্ষ্য। সবচেয়ে বড় কথা সারা বিশ্বে এমন চমৎকার একটা সমুদ্র সৈকত নেই। ৮০ মাইল লম্বা এবং দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত যেটা বালুকাময়। অনেক সমুদ্র সৈকত থাকে মরু পাথর দেওয়া, কিন্তু কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এটা বালুকাময় এক চমৎকার সমুদ্র সৈকত। পাশাপাশি এক দিকে পাহাড়, এক দিকে সাগর। এখানে আন্তর্জাতিক এয়ার রুট আছে। এই অঞ্চলের উন্নয়ের দিকে সব সময় আমাদের দৃষ্টি আছে।

এ সময় আওয়ামী লীগ সরকারের ইতোমধ্যে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, কক্সবাজারকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়া তোলে একান্তভাবে অপরিহার্য। সে জন্য কক্সবাজারবাসীর কাছে অনুরোধ থাকবে, যেখানে-সেখানে যত্রতত্র অপরিকল্পিতভাবে কোনো স্থাপনা করবেন না। ইতোমধ্যে কক্সবাজারে আমরা অনেকগুলো প্রকল্প নিয়েছি। মহেষখালীসহ দ্বীপ এলাকাগুলো উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। বলতে গেলে মহেষখালীকে ডিজিটাল আইল্যান্ড হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে ইনশাআল্লাহ আপনারা দেখবেন, মহেষখালীর উন্নয়ন যারা দেখবেন দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে সবাই বিস্মিত হবে যে, এ রকম উন্নয়ন করা যায়। একইভাবে টেকনাফেও আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। টেকনাফে সমুদ্র সৈকত যাতে আন্তর্জাতিক মানের হয় তারও ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। তাছাড়া একটি মাস্টার প্ল্যান করার আমরা নির্দেশ দিয়েছি পুরো কক্সবাজারটা ঘিরে এর উন্নয়ন অপরিকল্পিতভাবে না হয়ে যেন মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী হয়।

আমাদের এই যে বিশাল সমুদ্রসীমা রয়েছে, এটাকে পর্যটনের ক্ষেত্রটাকে আরও প্রসারিত করা; দেশীয় পর্যটকদের সুযোগ সৃষ্টি করা; পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ আমরা নিতে চাচ্ছি। যেহেতু আন্তর্জাতিক বিমান রুট, তাই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর করার কাজ চলমান। এই বিমানবন্দর যখন হবে, আজকে যারা পশ্চিমা দেশ থেকে প্রাচ্যের দেশে যায় তারা কিন্তু এই কক্সবাজার থেকে রিফুয়েলিং করবে। রিফুয়েলিংয়ের ক্ষেত্রে একেক সময়, একেক দেশ অগ্রাধিকার পায়। এক সময় হংকং ছিল। এরপর থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর- এখন দুবাই। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিংয়ের একটি জায়গা—বলেন প্রধানমন্ত্রী।

কক্সাবাজারে আধুনিক শুঁটকিহাট করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, কক্সবাজারে আমাদের লবণ চাষিরা আমাদের চাহিদা মেটাতে পারে। প্রথমবার সরকারে এসে আমরা লবণ চাষিদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করি, সুযোগ-সুবিধা দেই। লবণের চাহিদা কিন্তু কোনো দিন ফুরাবে না। বিদেশে যেখানে বরফ পড়ে সেখানে বরফ গলানোর জন্য তারা অপরিশোধিত লবণ ব্যবহার করে। আমরা যদি সেভাবে লবণ উৎপাদন বাড়াতে পারি, আমরা কিন্তু রপ্তানিও করতে পারবো। দেশের চাহিদা মেটাতে পারবো; যেটা পরিশোধিত লবণ-যেসব দেশ লবণ ব্যবহার করে বরফ সরানোর জন্য সেখানে আমাদের পাঠানোর ব্যবস্থা আছে। আমরা করতে পারি, সে সুযোগ আমাদের আছে। আমাদের লবণ উৎপাদনের ক্ষেত্রটা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে এবং লবণ চাষিদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে লবণ উৎপাদন করতে পারে সেই সুযোগটাও করে দিতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন এবং আমি মনে করি যে, এ ব্যাপারে আমরা উদ্যোগ নিতে পারি।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষ করে পর্যটনের বিকাশ করার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসে আমাদের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে এটা ঠিক কিন্তু একটা উপকার আমরা পেয়েছি। যেহেতু কোনো পর্যটক সেখানে যেতে পারেনি, কক্সবাজারে হারিয়ে যাওয়া লাল কাঁকড়া যেমন ফিরে এসেছে, কিছু দিন ডলফিনও দেখা গেছে। কাছিমের প্রজনন ক্ষেত্র ছিল সেগুলোও হারিয়ে যাচ্ছিল। যখন সেখানে কেউ যাচ্ছিল না আমি খবর পেলাম, কিছু ছবিও পেয়েছিলাম লাল কাঁকড়াগুলো আবার ফিরে এসেছে। তখন আমি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম, যেসব জায়গায় লাল কাঁকড়া দেখা যাচ্ছে সেসব জায়গা বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়া এবং এটাকে রক্ষা করা। আষাঢ় মাসে আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নেই। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যদি আমরা ঝাউবন দিয়ে ঘিরে দিতে পারি তাহলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সমুদ্র সৈকত উন্নয়নে আমরা যে পরিকল্পনা নেব তা শুধু ইট-কাঠ না, প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গাছপালাছায়া ঘেরা ব্যবস্থা রেখেই করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Create right conditions for Rohingya repatriation: G7

Foreign ministers from the Group of Seven (G7) countries have stressed the need to create conditions for the voluntary, safe, dignified, and sustainable return of all Rohingya refugees and displaced persons to Myanmar

3h ago