১৪ মন্দিরে ভাঙচুরের অভিযোগ, মামলা হয়েছে ২টি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৪টি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় থানায় ৬টি অভিযোগ হয়েছে যার মধ্যে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে ২টি। অভিযোগ আছে, থানায় অভিযোগ দিলেও মামলা রেকর্ড হয়নি।
কমলগঞ্জের পতনউষারের বৃন্দাবনপুর সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের ভাঙচুর হওয়া গেট। ছবি: সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৪টি পূজামণ্ডপে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় থানায় ৬টি অভিযোগ হয়েছে যার মধ্যে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে ২টি। অভিযোগ আছে, থানায় অভিযোগ দিলেও মামলা রেকর্ড হয়নি।

বাসুদেবপুর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মলয় মালাকার জানান, গত ১৩ অক্টোবর আমাদের মন্দিরে হামলা ভাঙচুর হয়। পরদিন থানায় অভিযোগ দিই। তবে আজও মামলা রেকর্ড হয়নি। বারবার তাগাদা দিলেও কাজ হচ্ছে না।

অন্যদিকে যে দুটি মন্দিরের মামলা হয়েছে তার একটি মইডাইল সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি গোবিন্দ শব্দকর জানান, মামলার পর পুলিশ দুই জনকে আটক করে। আটকের পর থেকে আমরা আতঙ্কে আছি। আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে আবার হামলা হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে আমাদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভাঙচুর হয়েছে এমন একটি মন্দিরের সভাপতি জানান, কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে মামলা করার জন্য কিন্তু আমরা ভয়ে মামলা করছি না। কারণ মামলা করলে আমরা আর বাড়িতে থাকতে পারব না।

কমলগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল চন্দ্র দাস এই প্রতিবেদককে জানান, আমাদের উপজেলায় সবশেষ গত মঙ্গলবার রাতে রামপাশা সার্বজনীন পূজামণ্ডপে চুরি হয়। এ নিয়ে মোট ১৪টি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর হলো।

তিনি জানান, আমরা এসব ঘটনায় পূজামণ্ডপের সবাইকে মামলা করতে বলেছি কিন্তু ভয়ে অনেকে মামলা করছেন না। তবে ৬টি মন্দির পূজা উদযাপন কমিটি অভিযোগ করেছে কিন্তু মাত্র দুটি মামলা হয়েছে।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) সোহেল রানা এই প্রতিবেদককে জানান, মইডাইল সার্বজনীন দুর্গামন্দির ও কামারছড়া চা বাগান পূজামণ্ডপে হামলা-ভাঙচুরের বিষযে দুটি মামলা হয়েছে। তিন জনকে আটক করেছি এ পর্যন্ত। আমাদের জানামতে কমলগঞ্জ উপজেলায় মোট ৮টি পূজামণ্ডপের হামলা-ভাঙচুর হয়।

অন্য পূজামণ্ডপের হামলা-ভাঙচুর বিষয়ে মামলা নেওয়া হলো না কেন এমন প্রশ্নে তিনি জানান, মামলা গ্রহণ করেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, তিনিই বলতে পারবেন।

ওসি (তদন্ত) বলেন, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান ও গ্রেপ্তার অব্যাহত আছে। পুলিশ সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

তিনি ৮টি মন্দিরে ভাঙচুরের কথা বললেও কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ারদৌস হাসান এই প্রতিবেদককে জানান, সব মিলিয়ে ৪টা মন্দিরে হামলা ভাঙচুর হয়েছে।

পূজা কমিটির নেতারা ১৪টি মন্দিরে হামলা ভাংচুর হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এই তথ্য সঠিক নয়।

তিনি বলেন, রাস্তার কাছে বেড়া ছিল সেটা ফেলে দিয়েছে। এতে মন্দিরের কোনো ক্ষতি হয়নি।

আমরা ২টি অভিযোগ পেয়েছি, ২টি মামলা নিয়েছি আরও ২টি জিডি এন্ট্রি করেছি।

অন্য মন্দিরের হামলা-ভাঙচুরের বিষয়ে মামলা না নেওয়ার কারণ কী এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এগুলো মামলার ঘটনা না, তাই আমরা মামলা নেইনি।

Comments