সুপ্রিম কোর্টে হাজী সেলিমের আপিল, জামিন আবেদন

দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্ট বিভাগের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম।
হাজী সেলিম। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্ট বিভাগের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিম।

আজ মঙ্গলবার সকালে তার আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া শেষে আজ আপিল আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় নিবন্ধিত হবে। আগামী রোববার শুনানির জন্য চেম্বার আদালতে উঠতে পারে।

হাজী সেলিমের পক্ষে গতকাল প্রায় ১ হাজার ২০০ পৃষ্ঠার আপিল আবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে জামিন চেয়েও আবেদন করা হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় দণ্ডিত হাজী সেলিম গত রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এ আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক শহীদুল ইসলাম জামিন আবেদন নাকচ করে হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে পাঠানোর এক দিন পর ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সাঈদ আহমেদ আরও বলেন, আমরা আপিলে প্রয়োজনীয় নথি সংযুক্ত করেছি। এর আগেও হাজী সেলিম জামিনে ছিলেন এবং তিনি জামিনের অপব্যবহার করেননি। বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ। যে কারণে তাকে জামিন দেওয়া প্রয়োজন।

চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন এবং রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণ করতে আদেশ দেন। এই সময়সীমার মধ্যেই আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য গত ২ মে দেশ ছাড়েন।

হাজী সেলিম ও তার স্ত্রী গুলশান আরার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মামলা করে দুদক। পরের বছরের ২৭ এপ্রিল বিচারিক আদালত ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন। দুটি অভিযোগে আদালত হাজী সেলিমকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে আদালত তাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। রায়ে উল্লেখ করা হয়, উভয় দণ্ড একসঙ্গে চলবে।

অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করায় তার স্ত্রী গুলশান আরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড, ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত।

একইসঙ্গে অবৈধভাবে তাদের অর্জিত প্রায় ২৭ কোটি টাকার সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেওয়া হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে হাজী সেলিম এবং ২০১৩ সালে তার স্ত্রী পৃথক আপিল করেন। হাজী সেলিমের আপিল শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগ তার সাজা বাতিল করে রায় দেন। দুদক সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে আবেদন করে।

শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে হাজী সেলিমের আপিলের ওপর পুনরায় শুনানির আদেশ দেন।

হাজী সেলিমের স্ত্রী গুলশান আরা ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English
books on Bangladesh Liberation War

The war that we need to know so much more about

Our Liberation War is something we are proud to talk about, read about, and reminisce about but have not done much research on.

13h ago