সিনহা হত্যা মামলা: আজ সাক্ষ্য দিচ্ছেন বিচারক তামান্না ফারাহ

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় ষষ্ঠ দফায় তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আজ বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহকে দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
সিনহা মো. রাশেদ খান। ছবি: সংগৃহীত

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় ষষ্ঠ দফায় তৃতীয় দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। আজ বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহকে দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আসামিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও বিচারিক আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৩ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট প্রথম দফায় পর পর তিন দিন মামলার বাদী অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী সাহিদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্য গ্রহণের পাশাপাশি আসামি পক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষীদের জেরা করেন।

আদালতের বিচারক আলোচিত এই হত্যা মামলার দ্বিতীয় দফা সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন গত ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর। ওই ৪ দিনে ৪ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন এবং তাদের জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। এ দফায় যে ৪ জন সাক্ষ্য দেন তারা সবাই ছিলেন হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী।

ওই ৪ সাক্ষী হলেন, মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক কামাল হোসেন, মসজিদের মুয়াজ্জিন হাফেজ মোহাম্মদ আমিন ও মসজিদের ইমাম শহীদুল ইসলাম।

এরপর ২০ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ৩ দিনের ৮ জন সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবদুল হামিদ, ফিরোজ মাহমুদ, শওকত আলী ও মাওলানা জহিরুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা রনধীর দেবনাথ, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শাহীন মো. আবদুর রহমান চৌধুরী, সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট আইয়ুব আলী ও টেকনাফের মারিশবুনিয়া গ্রামের মোকতার আহমদ।

এই মামলার মোট ১৫ আসামি হলেন, টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার তৎসময়ে কর্মরত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, তার দেহরক্ষী কনস্টেবল রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার আওতাধীন বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, ওই তদন্ত কেন্দ্রের কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, টেকনাফ থানার কনস্টেবল সাগর দেব, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, টেকনাফ থানায় সিফাতদের নামে পুলিশের এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত বাদী হয়ে দায়ের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর সংলগ্ন মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

এ মামলায় আদালত গৃহীত অভিযোগপত্রে তালিকাভুক্ত মোট সাক্ষী ৮৩ জন। গত ২৭ জুন ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে আদালতে সব আসামির উপস্থিতিতে দুপক্ষের শুনানি এবং যুক্তি-তর্ক শেষে মামলাটির চার্জগঠন করেন আদালত।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের দিন আনুমানিক রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। হত্যার ৫ দিন পর ৫ আগস্ট সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামি করে কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় ৪ মাসেরও বেশি সময় তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত আসামি ও ৮৩ জনকে সাক্ষী করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কক্সবাজারে র‌্যাব-১৫-এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে একটি 'পরিকল্পিত ঘটনা' হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Why do you need Tk 1,769.21cr for consultancy?

The Planning Commission has asked for an explanation regarding the amount metro rail authorities sought for consultancy services for the construction of a new metro line.

17h ago