বিদেশে বাড়ি কেনা বাংলাদেশিদের খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়েছে দুদক: হাইকোর্টে স্বীকারোক্তি
বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বিদেশে টাকা পাচার করে বাড়ি কিনেছেন কি না তা খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এক বছর আগে হাইকোর্ট দুদকের কাছে তালিকা চেয়েছিলেন, যে সমস্ত বাংলাদেশি কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বাড়ি কিনেছেন।
আজ রোববার দুদক হাইকোর্টে একটি কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট পেশ করেছে যার মধ্যে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে প্যারাডাইস পেপারস ও পানামা পেপার্সে অর্থ পাচারকারী হিসেবে প্রকাশিত ৪৩ জনের নাম রয়েছে।
হাইকোর্টে ওই প্রতিবেদন উপস্থাপনকারী দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কিছু আইনি জটিলতার কারণে এ ধরনের বাংলাদেশিদের নাম খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।'
তিনি আরও বলেন, 'এগমন্ট চুক্তি অনুযায়ী, যে দেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে সে দেশের অনুমতি ছাড়া কোনো দেশ অর্থ পাচারকারীদের নাম প্রকাশ করতে পারে না।'
তিনি জানান, দুদক চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) এবং চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশেষ পুলিশ সুপারকে (ইমিগ্রেশন) নোটিশ পাঠিয়ে বিদেশে সম্পত্তি কিনেছেন এমন অর্থ পাচারকারীদের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য চাওয়া হলেও দুদকের নোটিশের কোনো জবাব দেয়নি।
বাংলাদেশি নাগরিক যারা অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে বাড়ি ও সম্পত্তি কিনেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জারি করা দুটি পৃথক রুলের শুনানির সময় আগের নির্দেশনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের বেঞ্চে সম্মতি প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
এর মধ্যে গত বছরের ২২ নভেম্বর দ্য ডেইলি স্টারসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাচারের টাকা দিয়ে বিদেশে বিলাসবহুল বাড়ি কেনার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর একটি রুল জারি করা হয়েছিল। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী আবদুল কাইউম খান ও সুবীর নন্দী দাসের দায়ের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১ ফেব্রুয়ারি আরেকটি রুল জারি করা হয়।
শুনানির সময় বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার নির্মূলে সবার সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয় হাইকোর্ট বেঞ্চ।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
আগামীকাল সোমবার দুপুর ১টায় আবারও শুনানি শুরু হবে।
Comments