বাগেরহাটে ‘ধর্ম অবমাননার’ গুজব ছড়িয়ে হিন্দু বাড়িতে হামলা
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ধর্ম অবমাননার গুজব ছড়িয়ে এক হিন্দু তরুণের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে সুন্দরবনের অদূরে আমারবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মোরেলগঞ্জ থানার ওসি সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০-১২ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান চলছে।
রাতেই পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও বাগেরহাট সদর থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ধর্ম অবমাননা করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন এমন অভিযোগে সোমবার বিকাল ৫টার দিকে ওই তরুণকে আমরবুনিয়া জামে মসজিদে ডেকে নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিচার করে। সন্ধ্যায় মোংলার আমরবুনিয়া, জিউধরা, গুলিশাখালী ও কচুবুনিয়া গ্রামের কয়েকশ মানুষ জড়ো হয়ে ওই তরুণের বাড়ির দিকে মিছিল নিয়ে যায়। এ সময় তারা বাড়িতে ভাঙচুর, খড়ের গাদায় আগুন দেয়।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী পরিদর্শক এস এম আশরাফুল আলম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তরুণকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল ইসলাম বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা জঘন্যতম একটি ঘটনা, দুঃখজনক ঘটনা। এ ঘটনার সঙ্গে প্রকৃতপক্ষে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বাড়ির মালিককে আশ্বস্ত করছি যে এর উপযুক্ত বিচার হবে। আর যে গুজব ছড়িয়েছে বা যে ঘটনাটা ঘটিয়েছে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যারা শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করেছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। তিনি আরও বলেন, যে ঘরটা ভাঙচুর করা হয়েছে আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে তার জন্য একটি পাকা ঘর তৈরি করে দেবো।
এ ঘটনায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে হিন্দু পরিবারগুলো জানিয়েছে, তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
Comments