টেকনাফে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কক্সবাজারের টেকনাফে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে গতকাল রোববার এক চাকমা তরুণীকে উত্ত্যক্ত করাকে কেন্দ্র করে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
টেকনাফ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল হালিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, কাটাখালী গ্রামের বৌদ্ধপল্লীর যতীন চাকমা বাদী হয়ে আজ মামলা করেছেন। দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, রোববার বিকেলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক তরুণীকে স্থানীয় কয়েকজন যুবক উত্ত্যক্ত করেন। এর প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এই সংঘর্ষে দুই পক্ষের ১০ থেকে ১২ জন আহত হয়েছেন। আহত ৮ জনকে গতকাল রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া বেশ কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তিরা হলেন—মহলং চাকমা, উমংগি চাকমা, ভুবন চাকমা, বিজলী চাকমা, রিকি চাকমা, অংন্যাচিং চাকমা, আতুইমি চাকমা ও মংকুচিং চাকমা। তাদের বয়স ১৭ থেকে ৩৮ বছরের মধ্যে।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত গতকাল রাতে হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান। তিনি এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রকৃত দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মহলং চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, 'কাটাখালীর চাকমাপল্লীর অরণ্য বৌদ্ধ বিহারের নলকূপে কয়েকজন চাকমা তরুণী বাসন মাজছিলেন। এ সময় স্থানীয় নুরুল আমিন, সেলিম, আব্দুস ছালাম, কায়সার, তোফায়েল, মামুনসহ কিছু যুবক তরুণীদের উত্ত্যক্ত করেন। তরুণীরা প্রতিবাদ করলে স্থানীয় কয়েকজন চাকমা যুবক ঘটনাস্থলে আসেন। এর পর দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এই ঘটনার জের ধরে বিকেলে ৪০ থেকে ৫০ জন বাঙালি বৌদ্ধ বিহারের রান্নাঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তারা ধারালো অস্ত্র, বন্দুক ও লাঠি নিয়ে পাশের চাকমা পল্লীতে হামলা চালায়।
কক্সবাজার জেলা আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মংথ্রেলা রাখাইন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাটাখালীতে বৌদ্ধ মন্দিরটির কোনো সীমানা প্রাচীর নেই। মন্দিরের অদূরে একটি রান্নাঘর আছে। সেখানেই আগুন দেওয়া হয়েছে। তবে মন্দিরে হামলা হয়নি।'
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী বলেন, 'সংঘর্ষের খবর পেয়ে টেকনাফ থানা পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বৌদ্ধবিহারের পাশে একটি রান্নাঘর আগুনে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে এখানে আগুন দিয়েছে, তদন্তের মাধ্যমে বের করা হবে।'
Comments