ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ২২ জনের যাবজ্জীবন

রাজশাহীতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ২২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
রাজশাহী
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

রাজশাহীতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ২২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

বিচারিক আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মো. মুসাব্বিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মো. মুনসুর রহমান, হাসানুজ্জমান হিমেল, তৌফিকুল ইসলাম চাঁদ, মো. মহাসীন, মো. সাইরুল, রজব, বিপ্লব, মো. মমিন ও মো. আরিফুল ইসলাম।

নিহত শাহেন শাহ রাজশাহী কোর্ট কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানবীশ আইনজীবী ছিলেন। তার বাড়ি নগরীর গুড়িপাড়ায়। তার বাবা মৃত মোয়াজ্জেম হোসেন।

শাহেন শাহর বড় ভাই রজব আলী রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আওয়ামী লীগ নেতা রজব আলী রাসিকের প্যানেল মেয়র-২ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন নিহত শাহেন শাহর বড় ভাই রজব আলী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন বিএনপি নেতা মুনসুর রহমান। নির্বাচনে মুনসুর রহমান নির্বাচিত হন। নির্বাচন চলাকালে মুনসুর রহমান আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন। এ নিয়ে রজব আলী ও ছাত্রলীগ নেতা শাহেন শাহ নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মুনসুর রহমান ঘোষণা দেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার সাধ নির্বাচনের পরই মেটানো হবে। এর জের ধরে ২০১৩ সালের ২৭ আগস্ট মুনসুর ও তার সমর্থকেরা রজব আলীর মালিকানাধীন রজব অ্যান্ড ব্রাদার্স এর গুদাম ঘর ও ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এ ছাড়া, শহীদ কামারুজ্জামান স্মৃতি সংঘ ভাঙচুর করে তাদের বাড়িতে আক্রমণ করা হয়। রজবসহ তার ভাইদের খুঁজে না পেয়ে হামলাকারীরা ঘোষণা দেন তাদের যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই হত্যা করা হবে। পরদিন ২৮ আগস্ট গুড়িপাড়া সাকিনের ক্লাব মোড়ে শাহেন শাহকে পেয়ে আসামিরা তাকে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তার মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়। এরপর পিস্তলের ফাঁকা গুলি করতে করতে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা শাহেন শাহকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই ঘটনায় নিহতের ভাই নাহিদ আক্তার নাহান বাদী হয়ে ২৯ আগস্ট নগরীর রাজপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া, অজ্ঞাতনামা আরও ২৫ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান তদন্ত শেষে ৩১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

এরপর মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মামলাটি বিচারের জন্য রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। গত বছরের ১১ নভেম্বর আদালতে উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এই মামলায় ২৪ জনের মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Road crash deaths during Eid rush 21.1% lower than last year

Road Safety: Maladies every step of the way

The entire road transport sector has long been plagued by multifaceted problems, which are worsening every day amid sheer apathy from the authorities responsible for ensuring road safety.

6h ago