‘গাড়িতে গুরুতর জখম সিনহার ছবি তুললে পুলিশ আমার ফোন কেড়ে নেয়’
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার তৃতীয় দফায় তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ বুধবার সাক্ষ্য দেন সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট আইয়ুব আলী, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শাহীন মো. আবদুর চৌধুরী ও টেকনাফের মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোকতার আহমদ।
বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় এবং বিকাল ৫ টায় শেষ হয়।
মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, সার্জেন্ট আইয়ুব আলী আদালতে বলেন, 'আমি রামু সেনানিবাসে কর্মরত ছিলাম। ঘটনার দিন ৩১ আগস্ট আমি কমান্ডারের নির্দেশ পেয়ে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে শামলাপুর পুলিশ চেকপোস্ট যাই।'
'সেখানে ওসি প্রদীপ, এসআই লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলালসহ এপিবিএনের তিন সদস্য ও থানা থেকে আসা এক দল পুলিশকে দেখতে পাই। পুলিশ চেকপোস্টের বাইরে চুল লম্বা এক ছেলেকে (সিফাত) হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পাই।'
সার্জেন্ট আইয়ুব আলী আরও বলেন, 'চেকপোস্টের উত্তর পাশে একটি ডামপার ট্রাক কক্সবাজারমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। গাড়ীতে আর্মির কমব্যাট পোশাক পড়া গুরুতর জখম এক লোককে শোয়া অবস্থায় দেখতে পাই। আমি কাছে গিয়ে তাকে ভালোভাবে চেনার চেষ্টা করি। মুখ দেখে তাকে সহজেই চিনতে পারি। আহত স্যার এসএসএফে চাকুরি করেছেন বিধায় তাকে অনেকবার দেখেছি। তার নাম মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। তখন আমি আমার ব্যক্তিগত মোবাইল দিয়ে ছবি তুলি। তখন পুলিশ সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং আমার পরিচয় জানতে চায়। আমার পরিচয় জানানোর পরও তারা মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে আমাকে ঘটনাস্থল থেকে তাড়িয়ে দেয়।'
সাক্ষ্য দিতে গিয়ে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. শাহীন বলেন, '৩১ আগস্ট রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত মেডিকেল অফিসার আমাকে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের মরদেহ সম্পর্কে অবহিত করে। মেডিকেল অফিসার তাকে "Brought dead" ঘোষণা করে লাশঘরে প্রেরণ করেন। ১ সেপ্টেম্বর বেলা দেড়টার সময় মরদেহের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তীতে ময়না তদন্ত রিপোর্ট আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠাই।'
এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টায় কড়া পুলিশ পাহারায় প্রিজন ভ্যানে করে আসামিদের কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আগামী ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর এবং ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন।
Comments