'এখন তোদেরকে বাড়ি থেকে বের করে ইচ্ছামতো পেটাবো’
'বেটারা ভোটের আগে খুব জ্বালাইছে। কত বলছি আমাদের প্রার্থীর পক্ষে তোরা কাজ কর, আমার কথা শুনিস, 'এখন তোদেরকে বাড়ি থেকে বের করে ইচ্ছামতো পেটাবো,' হাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের ধাওয়া দিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আসাদুল ইসলাম (২৮), অভিযোগ এলাকাবাসীর।
স্থানীয়রা জানান, আসাদুল লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের খোকা মিয়ার ছেলে। ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বারপদে বিজয়ী আসাদুজ্জামান আসাদের সমর্থক।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে আসাদুল একাই ৬ জনকে কুপিয়ে আহত করেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। আহতরা বর্তমানে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহতরা হলেন-- শালমারা গ্রামের জয়নাল আবেদীন বিষু (৫২) ও তার স্ত্রী জোসনা বেগম (৪৬), মিন্টু ইসলাম (২৫) ও তার বড় ভাই মহুবর রহমান (৩০) ও মহুবরের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (২৪) এবং নুরুল হকের ছেলে আফছার আলী (৪৪)।
শালমারা গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারুল ইসলাম আনার (৩৪) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বিজয়ী ইউপি সদস্য আসাদুজ্জামানের সমর্থকদের মারমুখি আচরণের কারণে তিনি বাড়িছাড়া।
'আমার মতো অনেকেই বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন,' তিনি বলেন।
অভিযুক্ত আসাদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'নির্বাচনে আসাদুজ্জামানের পক্ষে কাজ করেছি এবং আমাদের প্রার্থী জয়লাভ করেছে।'
ধাওয়া ও কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয় এতে অনেকেই হাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বেড়িয়ে ছিলেন।
তিনি দাবি করেন 'আমি অস্ত্র দিয়ে কাউকে আঘাত করিনি।'
পরাজিত প্রার্থী হাফিজার রহমান ডেইলি স্টরকে বলেন, বিজয়ী প্রার্থী ও তার লোকজনের মারমুখি আচরণে তিনিও ভীত হয়ে পড়েছেন। আসাদুজ্জামানের উপস্থিতিতে আসাদুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন আমার সমর্থক ও কর্মীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল।
'এখনো তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিচ্ছে। অনেকে ঘর থেকে বাইরে বেড়ানোর সাহসও পাচ্ছেন না। তাদের ভয়ে থানায় অভিযোগ করার সাহসও পাচ্ছি না,' তিনি বলেন।
বিজয়ী প্রার্থী আসাদুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না এবং এ হামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।'
তিনি বলেন, 'আসাদুল নির্বাচনে আমার সমর্থক ও কর্মী ছিলেন কিন্তু এখন নন।'
'আমি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখেছি এবং তাদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তাও দিয়েছি।'
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুল ইসলাম আজ শনিবার বিকেলে ডেইলি স্টারকে বলেন, এখনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে তিনি জানান।
গত ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভেলাবাড়ীসহ আদিতমারী উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
Comments