আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন খন্দকার মোশাররফের এপিএস ফোয়াদ

ফরিদপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এপিএস এ এইচ এম ফোয়াদ।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর ফোয়াদকে ফরিদপুরে ছোটন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ছবি: স্টার

ফরিদপুরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এপিএস এ এইচ এম ফোয়াদ।

আজ রোববার সন্ধ্যায় ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক হোসেন তার জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। 

জবানবন্দি গ্রহণের পর ফোয়াদকে আদালতের নির্দেশে ফরিদপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। দুই দফায় চার দিন রিমান্ড শেষে আজ বিকেলে ফোয়াদকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

মানি লন্ডারিং ও ছোটন বিশ্বাস হত্যা মামলাসহ মোট ৮টি মামলার আসামি এ এইচ এম ফোয়াদকে গত ১২ আক্টোবর রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ফরিদপুরের গোয়েন্দা পুলিশ। 

২০১৬ সালের ১২ জুলাই সংঘটিত ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এলাকায় ছোটন বিশ্বাস হত্যা মামলার আসামি হিসেবে পরদিন ফোয়াদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। দুই দফায় মোট চার দিন রিমান্ড শেষে আজ তাকে এক নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মো. ফারুক হোসেনের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল গফফার সত্যতা নিশ্চিত করে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মো. ফারুক হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আজ রাতে আদালতের নির্দেশে ফোয়াদকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।'

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই—শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি (পরে বহিস্কৃত) ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে ঢাকার সিআইডির দায়ের করা ২ হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ফোয়াদ। 

ওই মামলা এবং ছোটন বিশ্বাস হত্যা মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও ছয়টি মামলা রয়েছে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায়। অন্যান্য মামলাগুলোর মধ্যে মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামলা, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলমের ওপর হামলা, জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক দীপক মজুমদারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও সরকারি চাল আত্মসাতের মামলা রয়েছে।

পুলিশ জানায়, ফোয়াদের বিরুদ্ধে যে ৮টি মামলা রয়েছে তার মধ্যে সাতটি মামলার অভিযোগপত্রের (চার্জশিট) আসামি এ এইচ এম ফোয়াদ। এর মধ্যে তিনটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরওয়ানা রয়েছে। একটি মামলায় তার বাড়ির অস্থাবর মালামাল ক্রোক করার পরওয়ানা রয়েছে। 

পুলিশ জানায়, এ এইচ এম ফোয়াদ দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ধরে ফরিদপুর শহরে হেলমেট বাহিনী, হাতুরি বাহিনীসহ বিভিন্ন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ অফিসসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ইজারা, বালু মহল নিয়ন্ত্রণ, ভূমি দখল, বাসস্ট্যান্ড ও সিঅ্যান্ডবি ঘাট দখলসহ বিভিন্ন সরকারি অফিসে ত্রাস সৃষ্টি করে অঢেল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেন।

এ এইচ এম ফোয়াদ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ছিলেন। তবে, পরে তাকে ওই পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English
books on Bangladesh Liberation War

The war that we need to know so much more about

Our Liberation War is something we are proud to talk about, read about, and reminisce about but have not done much research on.

12h ago