‘চা বাগানে নারীর অবস্থা পরিবর্তনে সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে’

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেছেন, ‘চা বাগানে বিরাজমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। এখানে নারীদেরকে অনেকটা অবদমন করে রাখা হয়। চা বাগানে নারীর সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তনে বাগানের পুরুষসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। নারীদের বঞ্চনা ও বৈষম্যের জায়গাগুলো সামনে তুলে ধরতে এখানে পুরুষদেরকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেছেন, 'চা বাগানে বিরাজমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। এখানে নারীদেরকে অনেকটা অবদমন করে রাখা হয়। চা বাগানে নারীর সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তনে বাগানের পুরুষসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে। নারীদের বঞ্চনা ও বৈষম্যের জায়গাগুলো সামনে তুলে ধরতে এখানে পুরুষদেরকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।'

নারীর প্রতি সহিংসতা সমাধানে প্রচারাভিযান পালন উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে 'চা বাগানের নারীর সুরক্ষায় জীবন দক্ষতা সহায়িকা' শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

বইয়ের লেখক ফিলিপ গাইন বলেন, 'চা বাগানের নারী শ্রমিক, ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে আলোচনা করে গবেষণাধর্মী এ বই প্রকাশ করা হয়েছে। এতে নারীর অবস্থা এবং তার প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা, পঞ্চায়েত ও শ্রমিক ইউনিয়নে নারীর প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ, শ্রম আইন ও নারীর কর্মপরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত ও পর্যালোচনা সন্নিবেশিত হয়েছে।'

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের (বিসিএসইউ) সহ-সভাপতি জেসমিন আক্তার বলেন, 'চা বাগানে নারীর উন্নয়নে প্রধান অন্তরায় পুরুষতান্ত্রিক সমাজ, সামাজিক কুসংস্কার এবং শিক্ষার অভাব। নারীদের উন্নয়ন ঘটাতে হলে আমাদের শিক্ষিত হতে হবে এবং নিজেদের বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিষয়সমূহ সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।'

শ্রীমঙ্গল উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত বলেন, 'চা বাগানে ধীরে ধীরে হলেও পরিবর্তন আসছে। এক সময় ইউনিয়ন ও প্রশাসনে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ অনেক কম ছিল। কিন্তু এখন তা বাড়ছে।'

নিজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, 'এক সময় আমি সভা-সমাবেশে কথা বলতে পারতাম না। কিন্তু এখন আমি উপজেলা প্রশাসনে নারীদের প্রতিনিধিত্ব করছি। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পুরুষদের উচিত নারীদের সমান চোখে দেখা।'

বিসিএসইউ এর নির্বাহী উপদেষ্টা রামভজন কৈরী বলেন, 'চা বাগানের পঞ্চায়েত ও ইউনিয়নে পুরুষদের চেয়ে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও অংশগ্রহণ কম। তবে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে ইউনিয়নের প্রচেষ্টা আছে। যেমন, চা বাগানে ভ্যালী ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সহ-সভাপতি ও সহ-সম্পাদক পদগুলো নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এছাড়া অন্যান্য পদেও নারীদের অংশগ্রহণ উন্মুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি শিগগির নারী সর্দার নিয়োগের জন্য কাজ করা হচ্ছে।'

মজুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'চা বাগানে ৩টি বড় সমস্যা হচ্ছে ন্যায্য মজুরি, ভূমির অধিকার এবং উচ্চশিক্ষার অভাব। ২০১৯ সালে চুক্তির মাধ্যমে ঠিক হওয়া মজুরি কাঠামো মালিকেরা ২০২১ সালে ঘোষণা করতে চায়। অথচ চলতি বছরে চায়ের উৎপাদন ও দাম অনেক বেড়েছে। কিন্তু মালিকরা বেআইনিভাবে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাদি বিবেচনায় নিয়ে আমাদের মজুরির হিসাব দেয় ৪০০ টাকা। এটি সম্পূর্ণভাবে শ্রম আইনের লঙ্ঘন।'

Comments

The Daily Star  | English
Representational image of Bangladeshi migrant workers.

UN experts express dismay over situation of Bangladeshi migrants in Malaysia

UN experts today expressed dismay about the situation of Bangladeshi migrants in Malaysia, who had travelled there in the hope of employment after engaging in the official labour migration process

13m ago