‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে আলোচনা করবেন না’: আসিয়ানের প্রতি মিয়ানমারের জান্তা সরকার

মিয়ানমারে গত বছরে সংঘটিত সামরিক ক্যুর বিরোধিতাকারী কিছু দলের সঙ্গে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট অ্যাসিয়ান ন্যাশনসের (আসিয়ান) বিশেষ প্রতিনিধি বৈঠকে বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং। ফাইল ছবি: এপি

মিয়ানমারে গত বছরে সংঘটিত সামরিক ক্যুর বিরোধিতাকারী কিছু দলের সঙ্গে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট অ্যাসিয়ান ন্যাশনসের (আসিয়ান) বিশেষ প্রতিনিধি বৈঠকে বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সামরিক শাসকদের ভাষায়, এই দলগুলো 'সন্ত্রাসী।'

গত বছর আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে আসিয়ানের সঙ্গে একটি ৫ দফার চুক্তি করে মিয়ানমার। যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল শিগগির সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ করা এবং বিশেষ প্রতিনিধিকে সব মহলের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ করে দেওয়া। তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি এবং আসিয়ানের ১০ সদস্য দেশের মাঝে মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার কৌশল নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভাজন।

গত বৃহস্পতিবার আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ইন্দোনেশিয়া জানায়, সংঘর্ষের সঙ্গে জড়িত সব দলের সঙ্গে বিশেষ প্রতিনিধির বৈঠক হওয়া খুবই জরুরি। মালয়েশিয়া দেশটির উৎখাতকৃত প্রশাসনের সদস্যদের নিয়ে গঠিত দল জাতীয় ঐকমতের সরকার (এনইউজি) এবং অন্যান্য সামরিক সরকার বিরোধী দলগুলোর সঙ্গেও বৈঠকের ওপর জোর দেয়।

মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, 'মন্ত্রণালয় উল্লেখ করছে, ৫ দফা ঐকমত বাস্তবায়নে কিছু আলোচনা গঠনমূলক হলেও, ২টি সদস্য দেশে আসিয়ানের বিশেষ প্রতিনিধিকে বেআইনি সংস্থা ও সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে আলোচনা করার সুপারিশ করেছে। এই বিষয়টি নিয়েই মূলত মিয়ানমারের আপত্তি।'

গত সপ্তাহের আসিয়ান বৈঠকের বিপরীতে প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রণালয় জানায়, বিশেষ প্রতিনিধির এ ধরনের দলের সঙ্গে বৈঠকের ইচ্ছা প্রকাশ 'শুধুমাত্র আসিয়ানের সনদে উল্লেখিত নীতিরই পরিপন্থী নয়, বরং এটি আসিয়ানের সব সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকেও ক্ষুণ্ণ করে।'

গত বছরের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত আসিয়ানের কোনো বৈঠকে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

একটি থাইল্যান্ড ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এক বছর নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই সংকটে আছে মিয়ানমার। এ পর্যন্ত জান্তাবিরোধী আন্দোলনে প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

তবে সামরিক বাহিনী মৃতের এ সংখ্যা মেনে নেয়নি। তারা এখনো বিভিন্ন ফ্রন্টে সশস্ত্র গণতন্ত্র সমর্থক ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত দলের বিরুদ্ধে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।

এনিউজি'র পররাষ্ট্র মন্ত্রী জিন মার অং মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আব্দুল্লাহ'র এনইউজির সঙ্গে বিশেষ প্রতিনিধির বৈঠক আয়োজনের আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছেন।

এক টুইটার বার্তায় জিন মার অং সাইফুদ্দিনকে তার 'মিয়ানমারের জন্য সমাধান খুঁজে পেতে শক্তিশালী সমর্থন ও বিশেষ প্রতিনিধির প্রতি সুস্পষ্ট বার্তা' দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।

মিয়ানমারে আসিয়ানের বিশেষ প্রতিনিধি ও ক্যাম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখোন জানান, এনইউজির সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি সামরিক জান্তার আপত্তির কারণে বেশ জটিল হয়ে গেছে। তবে তিনি আশা করছেন দুই পক্ষের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করতে সমর্থ হবেন।

তিনি জানান, আসিয়ান প্রতিনিধি হিসেবে তার পূর্বসূরি মিয়ানমারে সরেজমিনে পরিদর্শনে যেতে পারেননি, কারণ কিছু আসিয়ান দেশের দেওয়া পূর্বশর্ত দেশটির সামরিক শাসকরা মেনে নেননি।

এসব শর্তের মাঝে ছিল ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রধান নেত্রী অং সান সুচির সঙ্গে দেখা করা ও আলোচনার সুযোগ। উল্লেখ্য, সুচির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা চলছে।

Comments

The Daily Star  | English

11 years on, cries for justice remain unheeded

Marking the 11th anniversary of the Rana Plaza collapse, Bangladesh's deadliest industrial disaster, survivors and relatives of the victims today gathered at the site in Savar demanding adequate compensation and maximum punishment for the culprits

39m ago