হত্যার পাঁচ বছর

‘পাখির মত মুক্ত’ জুবায়েরের খুনিরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খান মোহাম্মদ রইস ওরফে সোহান কয়েক মাস আগে ফেসবুকে এরকম একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
মালয়েশিয়ার জেনটিং হাইল্যান্ডসে তোলা সেলফিতে জুবায়ের হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী, বাম দিক থেকে, সোহান, আকরাম, আশিক এবং অরূপ। ছবিটি গত ১৩ ডিসেম্বর ফেসবুকে পোস্ট করেন অরূপ। ছবিতে থাকা অপর দুজন হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট না হওয়ায় চেহারা ঝাপসা করে দেওয়া হয়েছে।

“আমি পাখির মত মুক্ত... এখন আমি উড়তে পারি...”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খান মোহাম্মদ রইস ওরফে সোহান কয়েক মাস আগে ফেসবুকে এরকম একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

ফেসবুকে দেওয়া তথ্য বলছে দেশ থেকে পালিয়ে তিনি এখন মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।

জুবায়ের হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত ইশতিয়াক মাবুব ওরফে অরূপ গত বছর ১৮ অক্টোবর ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেন। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, টেবিলে কফির কাপ নিয়ে চেয়ারে বসে রয়েছেন তিনি। ক্যাপশনে দেওয়া তথ্য বলছে, ছবিটি কুয়ালালামপুরের একটি স্টারবাকস স্টোরে তোলা।

প্রায় দুই বছর হলো জুবায়ের হত্যার রায় দিয়েছে আদালত। অথচ এই দুজনসহ সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ জনই ধরাছোঁয়ার বাইরে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অপর তিন জন হলেন খন্দকার আশিকুল ইসলাম ওরফে আশিক, মাহবুব আকরাম এবং জাহিদ হাসান।

২০১২ সালের এই দিনে, জাবির ইংরেজি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহত হওয়ার পর হাসপাতালে মারা যান। এর একদিন আগে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের হাতে ছুরিকাহত হন তিনি।

এই ঘটনা ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিহত জুবায়ের আহমেদ

অভিযোগ রয়েছে, পটুয়াখালীর খেপুপুরার তোফায়েল আহমেদের ছেলে জুবায়ের ছাত্রলীগের যে গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তার প্রতিপক্ষ গ্রুপটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরের মদদপুষ্ট ছিলো।

এক বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ বিচার কাজ চলার পর গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি দর্শন বিভাগের রাশিদুল ইসলাম রাজু; প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আশিক, সোহান, জাহিদ এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের আকরামকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়ে আদালত রায় ঘোষণা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর ছয় শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। এরা হলেন, দর্শন বিভাগের অরূপ ও কামরুজ্জামান সোহাগ, প্রাণ রসায়ন বিভাগের নাজমুস সাকিব তপু, পরিসংখ্যান বিভাগের অভিনন্দন কুণ্ডু ও সফিউল আলম সেতু এবং ইতিহাস বিভাগের মাজহারুল ইসলাম। এদের মধ্যে সোহাগ, মাজহারুল, সেতু, অভিনন্দন ও তপু আদালতে রায় ঘোষণার সময় হাজির ছিলেন। পরবর্তীতে এদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর ঢাকার আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেলে প্রেরণের নির্দেশ দিলে আশিক, আকরাম, অরূপ ও সোহান কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যান। তখন থেকে পলাতক রয়েছেন তারা।

অভিযুক্তদের মধ্যে রাজু ও জাহিদ সেদিন আদালতে হাজির হননি। রাজু পরবর্তীতে আত্মসমর্পণ করলেও জাহিদ পলাতক রয়েছেন।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হত্যার বহু ঘটনার মধ্যে এটাই ছিলো প্রথম রায় যেখানে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলভাবে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English

Create right conditions for Rohingya repatriation: G7

Foreign ministers from the Group of Seven (G7) countries have stressed the need to create conditions for the voluntary, safe, dignified, and sustainable return of all Rohingya refugees and displaced persons to Myanmar

7h ago