বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য খুলছে গ্রিসের দরজা

বাংলাদেশি শ্রমিকেরা শিগগির বৈধ উপায়ে গ্রিসে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ আগামী মাসে এ বিষয়ে ২ দেশ একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) সই করতে পারে।

বাংলাদেশি শ্রমিকেরা শিগগির বৈধ উপায়ে গ্রিসে যেতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ আগামী মাসে এ বিষয়ে ২ দেশ একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) সই করতে পারে।

বাংলাদেশ ও গ্রিস ২০২০ সালের নভেম্বরে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে একটি 'আগ্রহপত্র' সই করে। যার উদ্দেশ্য ছিল কর্মীদের নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনের জন্য 'সহযোগিতা বৃদ্ধি'।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আগ্রহপত্রের ঘোষণাটি ছিল সমঝোতা স্মারকের প্রথম উদ্যোগ।

তিনি বলেন, 'আমরা আশা করছি ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ আমরা একটি সমঝোতা স্মারক সই করতে পারব।'

একবার সমঝোতা স্মারক হয়ে গেলে, পরবর্তী ধাপে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম করা হবে বলে তিনি জানান।

সমঝোতা স্মারক বাংলাদেশি শ্রমিকদের পাশাপাশি দক্ষ পেশাদার কর্মীদের গ্রিসে অভিবাসন নিশ্চিত করবে।

এথেন্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আশুদ আহমেদ বলেছেন, এই সমঝোতা স্মারকের অন্যতম উদ্দেশ্য হবে অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার রোধ।

বাংলাদেশিরা প্রায়ই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে নৌকায় গ্রিস ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পৌঁছানোর জন্য সাগরে মৃত্যুঝুঁকি পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। অনেককে বন্দিশালায় আটক থাকতে হয়।

এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মতে, গ্রিসে আনুমানিক ৩০ হাজার বাংলাদেশি বসবাস করেন, যাদের মধ্যে অনেকেরই বৈধ কাগজপত্র নেই। বাংলাদেশ মিশনের ওয়েবসাইট অনুসারে, তাদের অধিকাংশই কৃষি ও পর্যটনখাতে কাজ করেন এবং অনেকের নিজস্ব ব্যবসা আছে।

রাষ্ট্রদূত আশুদ বলেন, এমওইউ সই হলে আরও বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক এই খাতে কাজ করতে পারবেন। গ্রিসে বর্তমানে প্রচুর সংখ্যক বিদেশি কর্মী প্রয়োজন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপের অন্যান্য গন্তব্যে যেতে আগ্রহীদের জন্য গ্রিস একটি ট্রানজিট। কিন্তু এই ট্রানজিট নিতে তারা প্রায়ই ব্যর্থ হন এবং পশ্চিম গ্রিসে কৃষিকাজে নিয়োজিত হন।

গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে ৭ হাজার ৫৭৪ জন বাংলাদেশি জল ও স্থলপথে অবৈধভাবে ইউরোপে পাড়ি দিয়েছেন। তারা ইতালি, গ্রিস, স্পেন, সাইপ্রাস এবং মাল্টা উপকূলে গেছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, স্থলপথে তারা গ্রিস ও স্পেনে পাড়ি দিয়েছেন।

গত বছর ২৯ নভেম্বর ইমরান আহমেদ এবং গ্রিক অভিবাসন ও শরণার্থীমন্ত্রী নোটিস মিতারাচি আগ্রহপত্রে সই করেন। তারা নিয়মতান্ত্রিকভাবে নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল অভিবাসন জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন।

রাষ্ট্রদূত আশুদ বলেন, এই সমঝোতা স্মারক নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিত করবে। চুক্তির একটি খসড়া অনুলিপি জানুয়ারির শেষে চূড়ান্ত করা হবে। এটি হবে বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশের মধ্যে এ ধরনের প্রথম এমওইউ।

অভিবাসী কর্মী উন্নয়নের চেয়ারপারসন শাকিরুল ইসলাম বলেন, গ্রিসে নিয়মিত অভিবাসন চালু করা একটি 'গুরুত্বপূর্ণ' উন্নয়ন হবে। কারণ এটি অনিয়মিত অভিবাসন কমাবে।

তিনি বলেন, এটি অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলায় বাংলাদেশের বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতিকে শক্তিশালী করবে।

শাকিরুল বলেন, 'জিসিএম-এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো অভিবাসনের জন্য একটি বৈধ পথ তৈরি করা।'

চুক্তিটি ইতালির মতো অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোতে অনুরূপ সুযোগ উন্মুক্ত করার একটি উদ্যোগ হতে পারে বলে তিনি যোগ করেন।

অনুবাদ করেছেন সুমন আলী

Comments

The Daily Star  | English

First phase of India polls: Nearly 50pc voter turnout in first eight hours

An estimated voter turnout of 40 percent was recorded in the first six hours of voting today as India began a six-week polling in Lok Sabha elections covering 102 seats across 21 states and union territories, according to figures compiled from electoral offices in states

1h ago