লাউয়াছড়া বনে বিরল প্রজাতির দুটি বাঁশ ভাল্লুক অবমুক্ত
বন বিভাগ ও র্যাবের যৌথ অভিযানে উদ্ধার বিরল প্রজাতির দুটি বাঁশ ভাল্লুক মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের উপস্থিতিতে বাঁশ ভাল্লুক দুটি অবমুক্ত করা হয়।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ৪ আগস্ট শ্রীমঙ্গল শহরের জালালিয়া সড়কের বার্ড পার্ক অ্যান্ড ব্রিডিং সেন্টারে বন বিভাগ ও র্যাব যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে একটি শকুন, একটি বানর ও দুটি বিরল প্রজাতির বাঁশ ভাল্লুক উদ্ধার করে। পরে ওই প্রাণীগুলোকে লাউয়াছড়া রেসকিউ সেন্টারে পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়। আজ বাঁশ ভাল্লুক দুটি অবমুক্ত করা হয়েছে।'
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাঁশ ভাল্লুক দুটি ভাইবেরিটি গোত্রের অর্থাৎ ভোঁদড়ের কিছুটা কাছাকাছি এবং বিড়াল বা কুকুর থেকে আলাদা।'
তিনি বলেন, 'এই প্রাণী মানুষকে আক্রমণ করে না কিন্তু অনেক সময় মানুষ না বুঝে এদের মেরে ফেলে।'
একটি বাঁশ ভাল্লুক প্রায় ১০ বছর পর্যন্ত বাঁচে উল্লেখ করে সজল দেব বলেন, 'প্রজননকাল ছাড়া এরা একাকী থাকতে বা চলাচল করতে পছন্দ করে। এরা মূলত রাতের প্রাণী এবং কিছুটা লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে। দিনের বেলা গাছের ওপরে ঘুমায়, আর রাত হলে নেমে আসে। এরা এক গাছ থেকে আরেক গাছে লাফিয়ে যেতে পারে।'
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ড. কামরুল হাসান বলেন, 'এটি খুবই বিরল প্রজাতির প্রাণী। এর ইংরেজি নাম Binturang এবং বৈজ্ঞানিক নাম Arctictis binturang। সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের গভীর জঙ্গলের বাঁশ বনে এদের পাওয়া যায়। এরা গেছো স্বভাবের এবং সর্বভুক।'
ভাল্লুক দুটি লাউয়াছড়া বনে অবমুক্ত করার সময় উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোস্তফা ফিরোজ ও ড. কামরুল হাসান, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, রেঞ্জ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম, লাউয়াছড়া বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ ও বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব।
Comments