পদ্মার তীর রক্ষা বাঁধের ৫০ মিটার নদীগর্ভে
ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নে পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের ৫০ মিটার অংশ বোল্ডারসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ডিক্রির চর ইউনিয়নের শহরতলীর আয়জদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী সংলগ্ন সিএনবি ঘাট নৌ-বন্দর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ শুরু করলেও, আজ বৃহস্পতিবার দুপুরেও নদী তীরের বোল্ডারগুলোর ধসে যাওয়া অব্যাহত আছে।
এ সব তথ্য নিশ্চিত করে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, ওই এলাকায় পদ্মা নদীতে ধোলাইচর সংলগ্ন এলাকায় নয় বছর আগে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ও দেড় কিলোমিটার প্রস্থ বিশিষ্ট একটি চর তৈরি হয়। এটি চর শালদাহ নামে পরিচিত। চলতি বছর বন্যায় গত দেড় মাস আগে ওই চরের অন্তত ৭৫ ভাগ অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে পদ্মার মূল স্রোত সিএনবি ঘাট এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধে সরাসরি আঘাত করে।
পাউবো সূত্রে আরও জানা যায়, নৌ বন্দরের যে এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে সেখানে সিমেন্ট, পাথর বোঝাই বাল্কহেড এসে ভেড়ে। এতেও মাটিতে কম্পন সৃষ্টি হয়ে ভাঙন ত্বরান্বিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পদ্মার স্রোত এসে শহরের প্রান্তে ১২ বছর আগে নির্মিত শহর রক্ষা বাঁধে এসে আঘাত খাচ্ছে। এ আঘাতের ফলে পাড়ে ভাঙন ধরছে।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রথম ভাঙন দেখা দেয়। নদীর ভেতরে অন্তত ৩০ মিটার পর্যন্ত যে বোল্ডার বসানো ছিল, সেগুলো আগে ধসে পড়ে। এর কিছুক্ষণ পর থেকে পাড়ের বোল্ডারগুলো ধসে পড়তে শুরু করে।
ওই এলাকার বাসিন্দা শেখ জামাল (৪৯) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদীর স্রোত সরাসরি পাড়ে এসে আঘাত করছে। ভাঙন রোধে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া না হলে, ফরিদপুর শহর হুমকির মুখে পড়বে।'
ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহেদী হাসন বলেন, 'সোমবার রাতে ভাঙন শুরু হলে জেলা প্রশাসক ও পাউবোকে জানানো হয়। পাউবোর নির্বাহী কর্মকর্তা রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মঙ্গলবার সকাল থেকে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলানো শুরু করেন।'
জানতে চাইলে ফরিদপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার যে জায়গায় ভাঙন শুরু হয়েছিল, সেখানে গত বুধবার পর্যন্ত দুই হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানো গেছে। কিন্তু, আজ বৃহস্পতিবার তার পাশে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে।'
ভাঙন রোধে যা যা করার প্রয়োজন তা করা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণে এ কাজ ১২ বছর আগে করা হয়েছে। এরপর দীর্ঘদিন এ বাঁধের সংস্কার নিয়ে কোন কাজ করা হয়নি।
'বাঁধের ফিজিবিলিটি স্টাডি করে সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে,' বলেন তিনি।
Comments