প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, শিক্ষামন্ত্রীকে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে পুলিশি হামলায় আহত এবং উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশনে থাকা অসুস্থ্ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব খরচ পরিশোধ করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আজ শুক্রবার বিকেলে শাবিপ্রবিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে চিকিৎসার ব্যয়বহন ছাড়াও আহত শিক্ষার্থী সৌরভকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের একজন মুখপাত্র ব্রিফিংয়ে বলেন, 'সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের মূল দাবিসহ অন্যান্য দবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা সকল শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। শিক্ষামন্ত্রী আলোচনার উদ্দেশ্যে শাবিপ্রবি আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমরাও তার সাথে সরাসরি আমাদের দাবি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি।'
তিনি আরও বলেন, 'এর মধ্যেই শিক্ষার্থীরা তার (শিক্ষামন্ত্রী) সামনে উপস্থাপনের জন্য বেশকিছু সমস্যা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে। আমরা শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রীকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা আশা করবো তিনি দ্রুতই আমাদের ক্যাম্পাসে এসে আমাদের সাথে আলোচনায় অংশ নেবেন।'
উপাচার্যের পদত্যাগের মূল দাবিসহ অন্যান্য ব্যাপারে যে সমস্ত আশ্বাস দেয়া হয়েছে সেগুলোও অতিসত্ত্বর পূরণ করা হবে বলেও আশা জানান তিনি।
গত বুধবার ১৬৩ ঘন্টা অনশনে থাকার পর অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন হকের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন ২৮ শিক্ষার্থী।
উপাচার্যের বাসভবনের সামনের সেই অনশনস্থলেই গতরাতে আঁকা হয়েছে আল্পনা– 'মৃত্যু অথবা মুক্তি'। এ ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদী আল্পনা আঁকছেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাত ৮টায় ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে 'কেমন শাবিপ্রবি চাই' শীর্ষক একটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা। আলোচনায় শিক্ষার্থীরা শাবিপ্রবির বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন এবং উপাচার্যের পদত্যাগের পর শাবিপ্রবি পুনর্গঠনে এসব সমস্যার সমাধানের দাবি জানান।
গত ১৩ জানুয়ারি বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৩ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। পরে এ আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন।
এরপর ১৬ জানুয়ারি দুপুরে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যায় অবরুদ্ধ উপাচার্যকে মুক্ত করতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ করে এবং রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। সেদিন অন্তত ৩০জন শিক্ষার্থী আহত হয়।
সেই রাতেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। পরে ১৯ জানুয়ারি বিকেল ২টা ৫০ মিনিট থেকে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।
পরবর্তীতে এর মধ্যে ১জন শিক্ষার্থীর বাবার অসুস্থতার কারণে অনশন ত্যাগ করেন এবং আরও ৫ শিক্ষার্থী অনশনে বসেন।
গত বুধবার ভোররাতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের আশ্বাস নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক দম্পতি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমীন হক।
শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেবে সরকার, এমন আশ্বাসে গত বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা।
Comments