
অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমীন হকের অনুরোধে ১৬৩ ঘণ্টার অনশন ভেঙেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। দুই শিক্ষকের অনুরোধে অনশন ভাঙলেও সরকারের কাছে ৫ দফা দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত ১১টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একজন মুখপাত্র সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
ওই শিক্ষার্থী বলেন, 'তাদের ৫টি দাবির মধ্যে একটি ইতোমধ্যে পূরণ হয়েছে। আরও ৩টি দাবি শিগগিরই পূরণ হবে। তবে উপাচার্যের পদত্যাগের মূল দাবি পূরণে কিছুটা সময় লাগতে পারে।'
তাদের দাবিগুলো হলো- উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগসহ ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ, ক্যাম্পাসের সবগুলো আবাসিক হল সচল রাখার বিষয়ে উদ্যোগ, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ সাহায্য দেওয়া ৫ সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন, অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং অনশনরত শিক্ষার্থী ও উপাচার্যের নির্দেশে পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায়ভার বহন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ওই মুখপাত্র আরও জানান, তাদের ৩ নম্বর দাবি অনুযায়ী ৫ সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন হয়েছে এবং ৪ নম্বর দাবি অনুযায়ী মামলা প্রত্যাহারের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার হবে বলে জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র জানান, তাদের ৫ নম্বর দাবি অনুযায়ী ইতোমধ্যে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সব ব্যয় মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় দাবি অনুযায়ী সবগুলো আবাসিক হল দ্রুত সচল করার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের মূল দাবি, অর্থাৎ উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণের দায়িত্ব জাফর ইকবাল স্যার ও ইয়াসমীন হক ম্যাম শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নিয়েছেন।'
এ ছাড়া বুধবার সন্ধ্যায় অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওই মুখপাত্র বলেন, 'আমাদের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে যে, উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে আমাদের যে দাবি তা এখনই বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও খুব শিগগিরই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া শিক্ষামন্ত্রী আমাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের সমস্যা নিয়ে আরও আলোচনা করতে চেয়েছেন এবং তিনি নিজে এসে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।'
গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া প্রাধ্যক্ষবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের হামলার পর ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলনে রূপ নেওয়ার পরদিন থেকেই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। পরে ২৩ জানুয়ারি উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে পুলিশ ও সাংবাদিক ছাড়া বাইরে থেকে কারও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে অবরোধ সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীরা। এর আগে ১৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বাইরে পুলিশের জলকামান ও সাজোয়া যান অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে ফেলেন।
Comments