আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়: মানবদরদী এক অনন্য মনীষী

বাংলায় বিজ্ঞান চর্চার সুফল তিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন গণমানুষের মাঝে। তার জীবনের সবটুকু জুড়েই ছিল এদেশের মানুষ। বলতেন, 'আমার সমস্ত কিছুর কেন্দ্রবিন্দুই এদেশের মানুষ ভালো থাকবে বলে।' আমরা আজ যে সমবায়ের কথা বলি তার জনক ছিলেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। একসময় তার মাসিক আয় ছিল পৌনে দুই হাজার টাকা। অথচ তিনি তার সকালের নাস্তার জন্য বরাদ্দ রাখতেন ১ পয়সা। ১ পয়সার বেশি নাস্তা হলে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠতেন। মাসিক আয় থেকে নিজের জন্য মাত্র ৪০ টাকা রেখে দান করে দিতেন সব। ১৯২৬ থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত এই দশ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি একাই দান করেছিলেন ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়।

বাংলায় বিজ্ঞান চর্চার সুফল তিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন গণমানুষের মাঝে। তার জীবনের সবটুকু জুড়েই ছিল এদেশের মানুষ। বলতেন, 'আমার সমস্ত কিছুর কেন্দ্রবিন্দুই এদেশের মানুষ ভালো থাকবে বলে।' আমরা আজ যে সমবায়ের কথা বলি তার জনক ছিলেন আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। একসময় তার মাসিক আয় ছিল পৌনে দুই হাজার টাকা। অথচ তিনি তার সকালের নাস্তার জন্য বরাদ্দ রাখতেন ১ পয়সা। ১ পয়সার বেশি নাস্তা হলে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠতেন। মাসিক আয় থেকে নিজের জন্য মাত্র ৪০ টাকা রেখে দান করে দিতেন সব। ১৯২৬ থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত এই দশ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি একাই দান করেছিলেন ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
রবীন্দ্রনাথ তার সম্পর্কে লিখেছিলেন, 'সংসারে জ্ঞানী তপস্বী দুর্লভ নয়, কিন্তু মানুষের মনের মধ্যে চরিত্রে ক্রিয়া প্রভাবে তাকে ক্রিয়াবান করতে পারে এমন মনীষী সংসারে কদাচ দেখতে পাওয়া যায়।' 
আজ যে আমরা মারকিউরাস নাইট্রাইড ব্যবহার করি তার জনকও তিনি, কেবল তাই নয় ১২টি যৌগিক লবণ এবং ৫টি থায়োএস্টারের আবিস্কারক তিনি। তার হাতেই সৃষ্টি হয়েছিল ভারতবর্ষের প্রথম ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। একজন বিজ্ঞানী হলেও স্বদেশি আন্দোলনের প্রথম পর্যায় থেকেই আন্দোলনে যুক্ত থাকায় ব্রিটিশ গোয়েন্দা দপ্তরে তার নাম লেখা ছিল 'বিজ্ঞানী বেশে বিপ্লবী'। তিনি কিংবদন্তী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়।
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জন্ম ১৮৬১ সালের ২ আগস্ট, খুলনার পাইকগাছার রাড়ুলি গ্রামের জমিদার পরিবারে।

খুলনার পাইকগাছার রাড়ুলি গ্রামের এই বাড়িতেই জন্ম আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের। ছবি: সংগৃহীত

তার বাবা হরিশচন্দ্র রায় ছিলেন স্থানীয় জমিদার। বনেদি পরিবারের সন্তান প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছোটবেলা থেকেই ছিলেন সকল বিষয়ে তুখোড় মেধাবী। বাবার প্রতিষ্ঠিত স্কুলেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সূচনা। সেখান থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাশের পর কলকাতার বিখ্যাত হেয়ার স্কুলে যাত্রা। সালটা তখন ১৮৭২। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই প্রচণ্ড রক্ত আমাশয়ে ভুগে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শেষমেশ বাধ্য হয়ে তাকে নিজ গ্রামে ফিরিয়ে আনা হয়। হরিশচন্দ্র রায়ের ছিল বিশাল লাইব্রেরি। সাহিত্য, রাজনীতি, বিজ্ঞান, ইতিহাস এমন কোনো বিষয় নেই যার বই সেই লাইব্রেরিতে ছিল না। গ্রামে থাকাকালীন এই সময়টাতেই তার জীবনে জ্ঞান বিকাশের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছিল। সুস্থ হয়ে উঠলে প্রায় দেড় বছর পর আবার গ্রাম ছেড়ে কলকাতায় ফেরা। অ্যালবার্ট স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। এরপর বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে এফ এ পরীক্ষায় পাশের পর প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন বিএ'তে।
এক বছরের মধ্যেই প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে গিলক্রিস্ট বৃত্তি নিয়ে স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। বিশ্বখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই বিএসসি করার পর ডিএসসি ডিগ্রি লাভ। সেখানে তার গবেষণার বিষয় ছিল কপার ম্যাগনেসিয়াম শ্রেণির সম্মিলিত সংযুক্তি পর্যবেক্ষণ। দুই বছরের কঠোর পরিশ্রমে রাত দিন খেটে ডি এসসি ও সবশেষে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন। তার ওই গবেষণাপত্রটি তৎকালীন সময়ে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশ্রেষ্ঠ গবেষণাপত্র হিসেবে মনোনীত হয়েছিল। আর তারই স্বরূপ পেয়েছিলেন হোপ প্রাইজে। 
কিন্তু দেশ ছেড়ে ইউরোপে পড়ে থাকতে ভালো লাগছিল না প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের। এদেশ এই মাটি ছিল তার আত্মার অন্তরের অন্তরস্থলে। তাই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে ১৮৮৮ সালে প্রফুল্লচন্দ্র রায় চলে এলেন স্বদেশে। দেশে ফিরে যোগ দিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে।

আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়।

ঠিক এমন সময়ই তিনি দেখলেন বাঙালিদের ব্যবসা নিয়ে হীনমন্যতা। ভাবলেন দেশীয় সম্পদ আর দেশীয় শিল্প বিপ্লবের কথা। তাই ১৮৯২ সালে কলকাতায় মাত্র ৭০০ টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তুলেছিলেন বেঙ্গল কেমিক্যাল এন্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড।
বর্তমান যে খুলনা টেক্সটাইল মিলস এটি তার হাতেই গড়া। তরুণদের ব্যবসা করতে দারুণভাবে উদ্বুব্ধ করতেন তিনি। বলতেন 'লক্ষ্য স্থির করো। ঝুঁকি নাও। কেবল মুখস্ত বিদ্যার জন্য নয়, পড়ো কারিগরি শিক্ষা অর্জনের জন্য। চাকরি না করে ব্যবসা করো। একটা সমগ্র জাতি শুধুমাত্র কেরানী বা মসীজীবী হয়ে টিকে থাকতে পারে না।' 
তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কিংবা কলেজে বিজ্ঞান ক্লাসে ইংরেজিতে পাঠদান করতেন শিক্ষকেরা। একমাত্র তিনিই পাঠদান করাতেন বাংলায়। বাংলা ভাষা ছিল তার অস্তিত্বের সাথে মিশে। প্রতিটি ছাত্রের প্রতি ছিলেন ভীষণ যত্নবান।
সবার আগে ছিল তার মানবতাবোধ। ১৯২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় সমগ্র বাংলা ঘুরে ঘুরে অর্থসংগ্রহ এবং ত্রাণকার্য করেছিলেন নিজে। শুধু ১৯২২ নয়, তার আগের বছর চতুর্থ বার ইংল্যান্ড ভ্রমণ শেষে তিনি দেশে ফিরে খুলনার সুন্দরবন অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের খবর পেয়েই ছুটে গিয়েছিলেন। নিজের আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছিলেন, 'দুর্গতদের সেবাকার্যের ব্যবস্থা এবং দেশবাসীর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিবার দায়িত্ব আমি গ্রহণ করিলাম। দেশবাসী সর্বান্তকরণে সাড়া দিল— যদিও গবর্নমেন্ট সরকারীভাবে খুলনার দুর্ভিক্ষকে স্বীকার করেন নাই।'
প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছিলেন প্রচন্ড অসাম্প্রদায়িক। বলতেন 'সবার আগে মানুষ, তারপর ধর্ম।' ১৯২৫ সালে ড. কুদরতে খুদা প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে রসায়নে প্রথম বিভাগ পেয়েছিলেন। বহু শিক্ষক এর বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু শত বিরোধিতা সত্ত্বেও প্রফুল্লচন্দ্র বলেছিলেন, 'ও যোগ্য। ও অবশ্যই পাবে। ও মেধাবী, ওর মেধার পরিচয় ওর খাতায়। ধর্মে নয়। ধর্ম কখনো মেধার নির্ণায়ক না।' 
আজীবন প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছিলেন মানবিক ও যুক্তিনির্ভর। একবার রসায়ন ক্লাস চলছে। এক ছাত্র হাড় দিয়ে তন্ত্র সাধনার কথা বলতো। তিনি শুনে ছাত্রদের সামনে এক টুকরো হাড় হাতে নিয়ে বুনসেন বার্নারে পুড়িয়ে মুখে পুরে দিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়। বললেন, 'এটা ক্যালসিয়াম ফসফেট। এছাড়া আর কিছুই নয়। সেটা কোন প্রাণীর হাড় তা-ও আর চেনার উপায় নেই।' রসায়ন দিয়ে শুধু রসায়ন শিক্ষাই নয়, ছাত্রদের মনে ধর্মান্ধতার মূল উপড়ে ফেলেছিলেন তিনি।
একবার শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ৫-৬ দিন ক্লাসে না আসায় একদিন বিকেলে প্রফুল্ল চন্দ্র রায় তার বাসায় যান। ফজলুল হক তখনও খেলার মাঠে থাকায় তিনি তার জন্য অপেক্ষা করেন। ফজলুল হক ফিরে এসে প্রফুল্লচন্দ্রকে দেখে তিনি কতক্ষণ হলো এসেছেন জানতে চাইলে বলেন 'তোমাদের হিসেবে এক ঘণ্টা আর আমার হিসেবে ষাট মিনিট।' ভীষণ সময়ানুবর্তিতা ছিল আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের। তার ছাত্ররাও ছিলেন জগদ্বিখ্যাত। সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ, নীলরতন ধর, পুলিন বিহারী সরকার, মেঘনাদ সাহা, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, বিজ্ঞানী কুদরত-ই খুদা, হেমেন্দ্র কুমার সেন, জ্ঞানেন্দ্র নাথ রায়।
প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের মূল মন্ত্র ছিল তার দেশসেবা। চিত্তরঞ্জন দাশের স্ত্রী বাসন্তী দেবীকে লেখা তার চিঠি পড়লেই বোঝা যায়। তিনি লিখেছিলেন 'প্রিয় ভগিনী, আমি আপনাকে নিশ্চিতরূপে বলিতে পারি যে, যখন বিজ্ঞান চর্চা করি, তখন বিজ্ঞানের মধ্য দিয়া দেশকেই সেবা করি। আমার জীবনের অন্য কোনও উদ্দেশ্য নাই।' 
প্রফুল্লচন্দ্র রায় থাকতেন কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের দোতলার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের একটি অতি সাধারণ ঘরে। আসবাবপত্রের মধ্যে ছিল একটি খাটিয়া, দুটি চেয়ার, ছোট একটি খাবার টেবিল, একটি পড়ার টেবিল ও জামাকাপড় রাখার একটি সস্তা আলনা। এই ছিল তার আসবাবপত্র। তার পরনের কাপড় ছিল মোটা খোটা ধুতি, চাদর, গেঞ্জি অথবা গায়ে একটি কোট। খাওয়া দাওয়াও ছিল একবারেই সাধারণ। 
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ৭০তম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেই মঞ্চেই প্রফুল্লচন্দ্র রায় পড়েছিলেন 'পূরবী', 'বলাকা', 'কথা ও কাহিনী' কাব্যগ্রন্থ থেকে অসংখ্য কবিতা। সম্পূর্ণ নিজের স্মৃতি থেকে মুখস্থ বলেছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ মজা করে লিখেছিলেন 'যেসব জন্ম সাহিত্যিক গোলমেলে ল্যাবরেটরির মধ্যে ঢুকে পড়ে জাত খুইয়ে বৈজ্ঞানিকের হাটে হারিয়ে গিয়েছেন তাদের ফের জাতে তুলবো।' 
শিক্ষার সঙ্গে সংগীতকে মিলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। আর রবীন্দ্রনাথ নিজেও তো বিজ্ঞানের সমাদর করতে অবহেলা করেননি কখনও। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় একাধারে ছিলেন একজন কবিও। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর পর তিনি রবীন্দ্রনাথের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছিলেন বিখ্যাত কবিতা রবি- প্রয়াণ। রবীন্দ্রনাথের জন্মের মাত্র তিন মাস পরে জন্ম নিয়েছিলেন প্রফুল্লচন্দ্র রায়। তার মৃত্যু রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর তিন বছর পরে।
ব্রিটিশ গোয়েন্দা দপ্তরে প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের নাম লেখা ছিল 'বিজ্ঞানী বেশে বিপ্লবী'। স্বদেশি আন্দোলনের প্রথম পর্যায় থেকেই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তিনি। ১৯০৫ এ বঙ্গভঙ্গের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যখন বাংলায় বিপ্লবী আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে, তখন গোপনে অস্ত্র ক্রয়ের জন্য তিনি বিপ্লবীদের অর্থ সাহায্য করতেন। একবার ভারতের অবস্থা জানার জন্য ইংল্যান্ডে সাইমন কমিশন গঠন করা হয়। লন্ডনেই তারা কলকাতা বিজ্ঞান কলেজের অনেক সুনাম শুনেছেন। তারা আরও জানতে পারেন বিজ্ঞান কলেজে একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী আছেন। এবং তখনই তারা বিজ্ঞান কলেজ পরিদর্শনে আসতে চাইলেন। একদিন দুপুরের দিকে কমিশনের সদস্যরা বিজ্ঞান কলেজে এসে দেখেন পিসি রায় গামছা পরে ধুতিখানা রোদে শুকাচ্ছেন। ঘরে ঢুকে দেখেন এক কোণে স্টোভে রান্না হচ্ছিল। অন্যদিকে সাদামাটা একটা খাট। ঘরের মাঝখানে একটা টেবিল আর একটা সাধারণ চেয়ার। পোশাক রাখার জন্য একটা কমদামি আলনা। ঘরের অবস্থা দেখে তারা বলেই ফেললেন, 'একি মানুষ নাকি দেবতা?'
আজ কিংবদন্তি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের জন্মদিন। জন্মদিনে বিনম্রশ্রদ্ধায় নত চিত্তে স্মরণ করি এই মনীষীকে।
তথ্যসূত্র:
জীবনস্মৃতি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়/ জয়ন্ত কুমার ঘোষ।
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় জীবন ও সাধনা/ অধ্যাপক এম কে আলী।

আহমাদ ইশতিয়াক [email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Sajek accident: Death toll rises to 9

The death toll in the truck accident in Rangamati's Sajek increased to nine tonight

6h ago