মুশফিক-লিটনের ফিফটিতে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ

তৃতীয় দিনশেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১৮ রান।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

আগের দিন কোনো উইকেট না হারিয়েই দিনের খেলা শেষ করেছিল বাংলাদেশ। মাহমুদুল হাসান জয় ও তামিম ইকবাল তাদের উদ্বোধনী জুটিকে তৃতীয় দিনে টেনে নিলেন ১৬২ রান পর্যন্ত। জয় ফিফটি করে থামলেও তামিম তুলে নিলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি। হাতে পেশিতে টান লাগায় তিনি মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর দৃঢ়তা দেখালেন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। শেষ সেশনে দুজনই হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অবিচ্ছিন্ন থাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ দল।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনশেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১৮ রান। অভিজ্ঞ মুশফিক ১৩৪ বলে ৫৩ ও সাম্প্রতিক সময়ে ছন্দে থাকা লিটন ১১৩ বলে ৫৪ রানে ক্রিজে আছেন। তাদের জুটির সংগ্রহ ২১১ বলে ৯৮ রান। এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস থেমেছিল ৩৯৭ রানে। ফলে হাতে ৭ উইকেট নিয়ে তাদের চেয়ে মাত্র ৭৯ রানে পিছিয়ে আছে টাইগাররা।

২১৭ বলে ১৫ চারে ১৩৩ রান করে আহত অবসরে গেছেন তামিম। সবমিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের এটি তার ২৫তম সেঞ্চুরি। চা বিরতির পর আর মাঠে নামেননি তিনি। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে সেরে উঠে পরে কোনো এক সময় ব্যাট হাতে দেখা যেতে পারে তাকে। ১৬ ইনিংস পর ফের তামিম পেয়েছেন এই রাজকীয় স্বাদ। এর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি খেলেছিলেন ১২৬ রানের ইনিংস। তামিমের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে টেস্টে এদিন পাঁচ বছর পর ওপেনিংয়ে শতরানের জুটি দেখেছে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে ৬১ ইনিংস পর এসেছে শতরানের উদ্বোধনী জুটি। সবশেষ ২০১৭ সালের মার্চে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই গলে ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি গড়েছিলেন তামিম ও সৌম্য সরকার।

Tamim Iqbal
তামিমের সহায়তায় শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটাররা। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম সেশনে ২৮ ওভার খেলে বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে তোলে ৮১ রান। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ হারায় ৩ উইকেট। যার দুটোই নিয়ে নেন কনকাশন বদলি হিসেবে নামা পেসার কাসুন রাজিথা। ২৫ ওভারে বাংলাদেশ আনে ৬৩ রান। চা বিরতির পর আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি মুশফিক ও লিটন।

বিনা উইকেটে ১৫৭ রান নিয়ে লাঞ্চের পর নেমে আর ৫ রান যোগ করতেই প্রথম ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। জয়কে লেগ স্টাম্প বরাবর বাউন্সার দিয়ে আউট করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন আসিথা ফার্নান্দো। লাঞ্চের আগে একবার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি। বাউন্সারের এই ফাঁদই পরে ইতি টানে তার ইনিংসের। লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট লাগিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা দেন ১৪২ বলে ৯ চারে ৫৮ রান করা জয়।

তামিমের ব্যাট ছিল ছন্দময়। সেঞ্চুরি বের করতে তেমন একটা সময় নেননি তিনি। ১৬২ বলে ১২ চারে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন বাংলাদেশের সফলতম ওপেনার। সেঞ্চুরির পর গতি কিছুটা কমিয়ে আনেন তিনি, মন দেন টিকে থাকায়। অফ স্পিনার রমেশ মেন্ডিসের বলে আম্পায়ার তাকে আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান তিনি। পরে পানিশূন্যতায় পেশিতে টান লাগলে বিশ্রাম নিয়ে চাঙা হতে হয় তাকে।

তিনে নামা শান্ত প্রথম কয়েক বলে ছিলেন অতিরিক্ত 'শান্ত'। বেশ ভালো উইকেটেও রান বের করতে ধুঁকতে থাকেন এই বাঁহাতি। তিনি আউট হন বেশ দৃষ্টিকটুভাবে।  রাজিথার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করে ধরা দেন উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকভেলার গ্লাভসে। ২২ বলে ১ রানে শেষ হয় তার ইনিংস।

মুমিনুল হক ক্রিজে ছিলেন না সাবলীল। গত কয়েক টেস্ট ধরে রান খরায় ভুগতে থাকা বাংলাদেশ অধিনায়ক নেমেছিলেন নিজের প্রিয় মাঠে। ক্যারিয়ারের ১১ সেঞ্চুরির সাতটি তিনি করেছেন এই স্টেডিয়ামে। প্রিয় মাঠের মতো প্রতিপক্ষও ছিল প্রিয়। লঙ্কানদের বিপক্ষেই আছে তার চার সেঞ্চুরি। তবে এতকিছু পক্ষে থাকলেও রান পাওয়া হয়নি মুমিনুলের। সময় নিয়ে থিতু হওয়ার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। রাজিথার ভেতরে ঢোকা এক ডেলিভারি ভুলভাবে পড়ে ১৯ বলে ২ করে স্টাম্প খোয়ান তিনি।

প্রথমে তামিমের সঙ্গী জুটি গড়ে ২২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট খোয়ানোর চাপ সামলান মুশফিক। এরপর সঙ্গী হিসেবে তিনি পেয়েছেন লিটনকে। সাদা পোশাকের ক্যারিয়ারে নিজের দ্বাদশ ফিফটির স্বাদ নিয়েছেন লিটন। কিছুক্ষণ পর মুশফিকও পৌঁছে যান একই মাইলফলকে। ২৬তম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি করে সাকিব আল হাসানের পাশে বসেছেন তিনি। ৩১ ফিফটি নিয়ে সবার উপরে আছেন তামিম।

Comments

The Daily Star  | English

Submarine cable breakdown may disrupt Bangladesh internet

It will take at least 2 to 3 days to resume the connection

18m ago