সাকিবের জোড়া ধাক্কায় ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ
ইনিংসের প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর ঘুরে দাঁড়ায় লঙ্কানরা। স্কোরবোর্ডে ৬৯ রান যোগ করে ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিল দ্বিতীয় উইকেট জুটি। সেখান থেকে ব্রেক থ্রু এনে দিয়ে রীতিমতো জোড়া ধাক্কা দিয়েই টাইগারদের ম্যাচে ফেরান সাকিব আল হাসান।
রোববার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের দেওয়া ১৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১০ ওভারে ৪ উইকেটে ৮০ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। জিততে হলে পরের ১০ ওভারে ৯২ রান করতে হবে দলটিকে। হাতে রয়েছে ৬টি উইকেট। আসালাঙ্কা ৪৬ ও রাজাপাকসা ০ রানে উইকেটে আছেন।
এদিন বাংলাদেশকে প্রথম ওভারেই সাফল্য এনে দিয়েছিলেন নাসুম আহমেদ। বিশ্বকাপে অভিষেকের দিনে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বিপজ্জনক ব্যাটার কুশল পেরেরাকে বোল্ড করে দেন। যদিও দ্বিতীয় নিজের ওভারটা ভালো করতে পারেননি। চারিথ আসালাঙ্কার ব্যাটে দুটি ছক্কা হজম করে সে ওভারে ১৬ রান দেন তিনি।
ফলে শুরুটা স্পিনারদের দিয়ে করলেও চতুর্থ ওভারে পেসার আনেন টাইগার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তবে রানের গতিতে লাগাম দিতে পারেননি। সে ওভারে ৮ রান খরচ করেন সাইফউদ্দিন। এক ওভার পর শেখ মেহেদী হাসানের উপর চড়াও হন লঙ্কানরা। একটি করে চার ও ছক্কায় সে ওভারে আসে ১৫ রান। ফলে পাওয়ার প্লেতে ৫৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। যেখানে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৪১ রান।
সপ্তম ওভারে বল হাতে আসে মোস্তাফিজুর রহমান। আগের তিনটি ম্যাচেই পাওয়ার প্লেতে বোলিং করলেও এদিন তাকে আনেননি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তবে পাওয়ার প্লেতে শেষ বল করতে এসেও রানের গতিতে লাগাম দিতে পারেননি কাটার মাস্টার। সে ওভারে দুটি বাউন্ডারিতে ১৩ রান খরচ করেন মোস্তাফিজ।
নিসাঙ্কা-আসালাঙ্কার ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এ জুটি ভাঙেন সাকিব। তবে এর আগে স্কোরবোর্ডে ৬৯ রান যোগ করেন তারা। ইনিংসের নবম ওভারে ফের বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই নিসাঙ্কাকে সরাসরি বোল্ড করেন দেন। শুধু তাই নয়, এক বল পর আভিস্কা ফার্নান্ডোকেও বোল্ড করে দেন সাকিব। ফুলার লেংথের বলে লাইন মিস করেন আভিস্কা।
এরপর বল হাতে ফিরে আঘাত হানেন সাইফউদ্দিনও। দারুণ ছন্দে থাকা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ফেরান তিনি। তার স্লোয়ার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিতে মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দেন হাসারাঙ্গা। তবে এক প্রান্তে টাইগারদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উইকেটে টিকে আছেন আসালাঙ্কা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ ছিল বাংলাদেশের। এদিন কাঙ্ক্ষিত সূচনা এনে দিতে পেরেছেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও লিটন দাস। এ দুই ব্যাটার গড়েন ৪০ রানের জুটি। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার এক বল আগে ভাঙে এ জুটি।
তিন নম্বরে নামা সাকিব আল হাসান শুরু থেকেই খেলছিলেন হাতখুলে। সপ্তম ওভারে দারুণ দুটি বাউন্ডারি মারলেও আউট হয়েছেন এর পরের ওভারেই। চামিকা করুনারাত্নের লেগ স্টাম্পে রাখা বলটি পিছিয়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
দ্রুত দুটি উইকেট হারানো বাংলাদেশের হাল মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে ধরেন নাঈম। গড়েন ৭৩ রানের দারুণ এক জুটি। তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত পায় টাইগাররা। ১৭তম ওভারে নাঈম ফিরে গেলেও মুশফিক খেলেছেন শেষ পর্যন্ত। বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দিয়েই মাঠ ছাড়েন এ ব্যাটার। ৪ উইকেটে ১৭১ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রানের ইনিংস খেলেন নাঈম। ৫২ বলে ৬টি চারের সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান এ ওপেনার। তবে অসাধারণ ব্যাটিং করে ৫৭ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন মুশফিক। ৩৭ বলের ইনিংসটি সাজান ৫টি চার ও ২টি ছক্কা দিয়ে। শেষদিকে ৫ বলে ২টি চারে ১০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। ১৬ রান করেন লিটন।
Comments