মুশফিক-নাঈমের ব্যাটে শ্রীলঙ্কাকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরু থেকেই যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন মুশফিকুর রহিম। তার সঙ্গে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিও ছিল একটি ভালো সূচনার সন্ধানে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ দুইয়েরই দেখা মিলেছে। শুরুতে অবশ্য বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের ভিত্তিটা গড়ে দেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তাতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বড় সংগ্রহই পেয়েছে বাংলাদেশ। লঙ্কানদের ১৭২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে দলটি।
রোববার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭১ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
অথচ আসর জুড়েই টাইগারদের মূল সমস্যা ছিল ওপেনিং জুটি। আগের তিন ম্যাচে সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল মাত্র ১১ রান। এদিন লিটন দাসকে নিয়ে ভালো সূচনা এনে দেন নাঈম। গড়েন ৪০ রানের জুটি। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার এক বল আগে ভাঙে এ জুটি। লাহিরু কুমারার বলে মিডঅফের উপর দিয়ে বাউন্ডারি মারতে গিয়ে দাসুন শানাকার হাতে ধরা পড়েন লিটন।
তবে লিটনকে আউট করে কিছু একটা বলেছিলেন কুমারা। তার জবাব তখনই কিছু একটা বলেন লিটন। এ নিয়ে দুইজনের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতে দেখা যায়। এ কারণেই হয়তো কিছুটা তেতে ছিলেন পরের দিকের ব্যাটসম্যানরা। উইকেটে নেমেই আগ্রাসী ব্যাট চালাতে থাকেন ব্যাটাররা।
সপ্তম ওভারে দারুণ দুটি বাউন্ডারি মেরে এদিনও দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন সাকিব। তার সঙ্গে যোগ দেন নাঈমও। তাতে রান আসছিল দ্রুত। তবে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব। এর পরের ওভারেই বিদায় নিয়েছেন চামিকা করুনারাত্নের বলে। তার লেগ স্টাম্পে রাখা বলটি পিছিয়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান এখন পর্যন্ত জয় পাওয়া দুই ম্যাচের নায়ক।
সাকিব বিদায় নিতে উইকেটে নামেন মুশফিক। বিশ্বকাপের তিন ম্যাচ তো বটেই, অনেক দিন থেকেই ব্যাটে রান খরা যাচ্ছিল তার। তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বরাবরই অসাধারণ ব্যাটিং করে থাকেন এ ব্যাটার। সে ধারাটা ধরে রাখলেন অফফর্মে থাকা সময়েও। শুরু থেকেই সাহসী ব্যাটিংয়ে খুঁজে পেলেন নিজের ছন্দ।
নাঈমের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন মুশফিক। তৃতীয় উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৭৩ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। মূলত এ জুটিতেই বড় সংগ্রহের ভিত পায় টাইগাররা। ১৭তম ওভারে বিনুরা ফার্নান্ডোর বলে নাঈম পুল করতে গিয়ে বল শূন্যে তুলে দিলে ভাঙে এ জুটি।
এদিন ব্যাটিং অর্ডারের কিছুটা প্রোমোশন পান আফিফ হোসেন। আগের তিন ম্যাচে ছয়ে নামলেও এদিন নেমেছেন পাঁচে। তবে দ্রুত রান তোলার তাগিদে রানআউট হয়ে যান তিনি। সাত নম্বরে নেমে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ চেষ্টা চালিয়েছেন। তাতে বড় পুঁজিই মিলেছে বাংলাদেশের।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬২ রানের ইনিংস খেলেন নাঈম। ৫২ বলে ৬টি চারের সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান এ ওপেনার। তবে অসাধারণ ব্যাটিং করে ৫৭ রানের ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেছেন মুশফিক। ৩৭ বলের ইনিংসটি সাজান ৫টি চার ও ২টি ছক্কা দিয়ে। শেষদিকে ৫ বলে ২টি চারে ১০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৭১/ ৪ (নাঈম ৬২, লিটন ১৬, সাকিব ১০, মুশফিক ৫৭*, আফিফ ৭, মাহমুদউল্লাহ ১০*; করুনারত্নে ১/১২, বিনুরা ১/২৭, চামিরা ০/৪১, কুমারা ১/২৯, আসালাঙ্কা ০/১৪, হাসারাঙ্গা ০/২৯, শানাকা ০/১৪)
Comments