বাংলাদেশকে ১৪১ রানের লক্ষ্য দিয়েছে স্কটল্যান্ড
শুরুর ধাক্কা সামলে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন জর্জ মানজি। কিন্তু স্পিনারদের ঘূর্ণিতে স্কটল্যান্ডকে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ চাপের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি টাইগাররা। ক্রিস গ্রিভসের ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে যায় স্কটল্যান্ড।
ওমানের মাসকাটের আল-আমিরাত স্টেডিয়ামে রোববার বাংলাদেশকে ১৪১ রানের লক্ষ্য দিয়েছে স্কটল্যান্ড। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪০ রান সংগ্রহ করে দলটি।
তিন পেসারের সুবাদে বাংলাদেশের শুরুটা হয় দারুণ। প্রথম তিন ওভারে রান আসে মাত্র ৭। তৃতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে স্কটিশ অধিনায়ক কাইল কোয়ার্টজারকে ফেরান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এরপর অবশ্য আরেক ওপেনার মানজির ব্যাটে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল স্কটিশরা।
তাসকিনের করা চতুর্থ ওভারে টানা দুটি ছক্কা হাঁকান মানজি। মোস্তাফিজুর রহমানের করা পাওয়ার প্লের শেষ ওভারেও দারুণ এক ছক্কা হাঁকান এ ওপেনার। তাতে পরের তিন ওভারে ৩১ রান তুলে নেয় স্কটল্যান্ড। ফলে পাওয়ার প্লেতে সবমিলিয়ে ১ উইকেট হারিয়ে ৩৮ রান সংগ্রহ করেছিল দলটি।
এরপর মঞ্চে আসেন বাংলাদেশের দুই স্পিনার। ইনিংসের সপ্তম ওভারে বল করতে এসে রানের গতিতে লাগাম দেন সাকিব। পরের ওভারে বল করতে এসে বাংলাদেশকে জোড়া সাফল্য এনে দেন মাহেদি। প্রথমে ম্যাথিউ ক্রসকে ফেলেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। এর দুই বল পর ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা মানজিকে বোল্ড করে দেন তিনি। ২৩ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৯ রান আসে মানজির ব্যাট থেকে।
সে ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতে একাদশ ওভারে আবারো জোড়া ধাক্কা খায় স্কটল্যান্ড। এবার তাদের ঘূর্ণির মায়াজাল দেখান সাকিব। বাংলাদেশের বিপক্ষে একমাত্র ম্যাচ জয়ের নায়ক রিচি বেরিংটনকে বাউন্ডারি লাইনে আফিফ হোসেনের তালুবন্দি করে ফেরান তিনি। একই সঙ্গে টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ শিকারি শ্রীলঙ্কান পেসার লাসিথ মালিঙ্গাকে স্পর্শ করেন এ অলরাউন্ডার।
অবশ্য এর আগের ওভারেই মালিঙ্গার পাশে যেতে পারতেন সাকিব। তার বলে সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন কালাম ম্যাকলয়েড। কিন্তু বলের লাইনেই যেতে পারেননি তাসকিন। নষ্ট হয় একটি সহজ সুযোগ।
মালিঙ্গাকে ছাড়িয়ে যেতে অবশ্য খুব বেশি সময় নেননি সাকিব। সে ওভারেই ফেরান মাইকেল লিস্ককে। নিজের দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅফে ধরা পড়েন লিটন দাসের হাতে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বোচ্চ শিকারি হন সাকিব। এ সংস্করণে এখন তার উইকেট সংখ্যা ১০৮টি। ৮৯ ম্যাচে এ কীর্তি গড়েন এ অলরাউন্ডার।
পরের ওভারে কালাম ম্যাকলয়েডকে ফিরিয়ে চাপটা আরও বাড়ান মাহেদি। তবে সপ্তম উইকেটে মার্ক ওয়াটকে নিয়ে ইনিংস মেরামতের কাজে নামেন ক্রিস গ্রিভস। নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে রানের গতি সচল রাখেন তারা। গড়েন ৫১ রানের দারুণ এক জুটি। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে যায় দলটি।
১৮তম ওভারে এ জুটি ভাঙেন তাসকিন। কিন্তু এরপরই তার উপর চড়াও হন গ্রিভস। টানা তিনটি বাউন্ডারি তুলে নেন তিনি। এরমধ্যে রয়েছে একটি ছক্কা। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন গ্রিভস। ২৭ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২২ রান আসে ওয়াটের ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের পক্ষে ৪ ওভার বল করে ১৯ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নিয়েছেন মাহেদি। ১৭ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান সাকিব। মোস্তাফিজের শিকারও ২টি। তবে ৩২ রান খরচ করেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
স্কটল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৪০/৯ (মানজি ২৯, কোয়ার্টজার ০, ক্রস ১১, বেরিংটন ২, ম্যাকলাউড ৫, লিস্ক ০, গ্রিভস ৪৫, ওয়াট ২২, ডেভি ৮, শরিফ ৮*, হুইল ১*; তাসকিন ১/২৮, মোস্তাফিজ ২/৩২, সাইফুদ্দিন ১/৩০, সাকিব ২/১৭, শেখ মেহেদী ৩/১৯, আফিফ ০/১০)
Comments