সাকিব- নাঈমের ব্যাটে বাংলাদেশের লড়াইয়ের পুঁজি
প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করতে না পারায় জায়গা হারিয়েছিলেন নাঈম শেখ। তার জায়গায় খেলতে নেমে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষেই ফিরলেন এ ওপেনার। বাঁচা-মরার ম্যাচে মন্থর শুরু করলেও দুবার জীবন পেয়ে তিনি বাংলাদেশকে এনে দিলেন লড়াইয়ের পুঁজি। তার হাফসেঞ্চুরি আর সাকিব আল হাসানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ওমানকে ১৫৪ রানের লক্ষ্য দিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
ওমানের মাসকাটের আল-আমেরাত স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৩ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। নাঈম ৫০ বলে করেন ৬৪ রান। সাকিব ২৯ বলে করে যান ৪২ রান।
নাঈমের সঙ্গে বড় জুটি পাওয়া সাকিব পছন্দের তিন নম্বর পজিশন ছেড়ে দিয়েছিলেন শেখ মেহেদী হাসানের জন্য। নামলেন চার নম্বরে। তবে এ পজিশনেও সাবলীল ব্যাট করেছেন সাকিব। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে এদিনই যেন বেশ আত্মবিশ্বাসী লেগেছে তাকে। কিন্তু ইনিংস লম্বা করতে পারেননি রানআউট হয়ে। ফাইয়াজ বাটের বলটি কোনো মতে আটকে দ্রুত রান নিয়ে চেয়েছিলেন। কিন্তু বোলিং প্রান্তে সরাসরি থ্রোতে তাকে চমকে দেন আকিব ইলিয়াস।
তবে এদিনের শুরুতে বেশ চাপে ছিল বাংলাদেশ। মেহেদীকে তিনে নামানোর ফটকা কাজে লাগেনি। সৌম্যর জায়গায় সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগিয়েছেন নাঈম। যদিও তাতে ছিল ওমানি ফিল্ডারদের অবদান। তার তুলে দেওয়া দুটি সহজ ক্যাচ ধরতে পারেননি স্বাগতিকরা। শুরুটাও বেশ মন্থর ছিল এই বাঁহাতির। পাওয়ার প্লেতে ১৯ বল খেলে করেন ১৫ রান। ১৮ রানে তার ক্যাচ ছেড়ে দেন জতিন্দর সিং। পরের ওভারে ২৫ রানে আবার জীবন পান নাঈম। এবার ক্যাচ ফেলেন প্রজাপতি ক্যাশপ।
এদিন দলীয় ২১ রানে দুটি উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম তিন ওভারে রান আসে মাত্র ১১। যার দুটি অতিরিক্ত থেকে এবং একটি ওভার থ্রো থেকে। কিন্তু তারপরও নিজেদের উইকেট অক্ষত রাখতে পারেননি ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত পাওয়ার প্লেতে ২২টি ডট দেওয়ায় ২৯ রানের বেশি তুলতে পারে দলটি।
দুটি জীবন পেয়েছিলেন লিটন। রিভিউ নিয়ে একবার বাঁচলেন এলবিডাব্লিউ থেকে। এরপর থার্ডম্যান সীমানায় কাশ্যাপ প্রজাপতির হাতে ক্যাচ তুলেও বেঁচেছেন। কিন্তু জীবন কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। বিলাল খানের ইয়র্কারে পড়েছেন সেই এলবিডাব্লিউর ফাঁদে।
তবে লিটন না পারলেও পেরেছেন নাঈম। সপ্তম ও অষ্টম ওভারে দুই দফা ক্যাচ তুলে দিয়ে বেঁচে গেলেও ১৭তম ওভারে আর বাঁচতে পারেননি। দুনোমনো হয়ে খেলতে গিয়ে মিডউইকেটে ধরা পড়েন আয়ান খানের হাতে। তবে এর আগে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। আর সাকিবের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে করেছেন ৮০ রানের জুটি। মূলত এ জুটিতেই লড়াইয়ের পুঁজি মিলে বাংলাদেশের।
রানের গতি বাড়াতে এদিন ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তন এনে কিছুটা আগে নেমেছিলেন নুরুল হাসান সোহান ও আফিফ হোসেনরা। তাতে লাভ হয়নি। দুইজনই আউট হয়েছেন লংঅফ সীমানায় ছক্কা মারতে গিয়ে। রানের গতি বাড়ানোর দায়িত্ব পড়ে অভিজ্ঞ দুই সেনানী মুশফিকুর রহিম ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কাঁধে। মুশফিক হতাশ করলেও মাহমুদউল্লাহ একটি করে চার ও ছক্কায় খেলেন ১৭ রানের ইনিংস।
টাইগারদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন নাঈম। ৫০ বলের ইনিংসটি সাজাতে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা মেরেছেন এ ওপেনার। সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। ২৯ বলে ৬টি চারের সাহায্যে এ রান করেছেন তিনি। এ দুই ব্যাটার ছাড়া কেবল মাহমুদউল্লাহই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন।
বাংলাদেশের বিপক্ষে এদিন দারুণ বোলিং করেছেন ওমানের তিন পেসার বিল্লাল খান, কলিমুল্লাহ ও ফাইয়াজ বাট। ৩০ রানের খরচায় ৩টি উইকেট তুলে মিডল অর্ডার ধসিয়ে দেন ফাইয়াজ। মাত্র ১৮ রান খরচ করে ৩টি উইকেট পেয়েছেন বিলাল। ২টি শিকার কলিমুল্লাহর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৩ (নাঈম ৬৪, লিটন ৬, মেহেদি ০, সাকিব ৪২, সোহান ৩, আফিফ ১, মাহমুদউল্লাহ ১৭, মুশফিক ৬, সাইফউদ্দিন ০, তাসকিন ১*, মোস্তাফিজ ২; বিলাল ৩/১৮, কলিমুল্লাহ ২/৩০, ফাইয়াজ ০/৩০, নাদিম ০/৩৫, আকিব ০/১৬, জিসান ১/১৭)
Comments