১০ জনের দল নিয়ে ভারতকে রুখে দিল বাংলাদেশ

এক গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় একটি লাল কার্ড ১০ জনের দলে পরিণত করে বাংলাদেশকে। তাতে বড় হারের শঙ্কা পেয়ে বসেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। কিন্তু এরপর অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। গোলও আদায় করে নেয়। তাতে শক্তিশালী ভারতকে রুখে দিয়ে মূল্যবান একটি পয়েন্ট আদায় করে নিয়েছে জামাল ভুঁইয়ার দল।

এক গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় একটি লাল কার্ড ১০ জনের দলে পরিণত করে বাংলাদেশকে। তাতে বড় হারের শঙ্কায় পেয়ে বসেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। কিন্তু এরপর অসাধারণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। গোলও আদায় করে নেয়। তাতে শক্তিশালী ভারতকে রুখে দিয়ে মূল্যবান একটি পয়েন্ট আদায় করে নিয়েছে জামাল ভুঁইয়ার দল।

সোমবার মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ভারতের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ। ম্যাচের ২৬তম মিনিটে সুনীল ছেত্রির গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধের ৭৩তম মিনিটে ইয়াসিন আরাফাতের গোল সমতায় ফেরে তারা।

এদিন ম্যাচের গল্পটা পুরোটাই হতে পারতো বাংলাদেশের। ১০ জনের দল নিয়েও জয় পেতে পারতো তারা। বেশ কিছু সহজ সুযোগ নষ্ট করেন ফরোয়ার্ডরা। একজন ভালো মানের ফিনিশারের অভাবে ভুগেছে দলটি। তিনটি নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেছেন রাকিব হাসান-বিপলু আহমেদরা।

মাঝমাঠের দখল অবশ্য ভারতেরই বেশি ছিল। ৬৮ শতাংশ সময় বল নিয়ন্ত্রণে ছিল তাদের। ১২টি শট নিয়ে ৮টি লক্ষ্যে রাখে ব্লু টাইগাররা। অন্যদিকে ৭টি শটের মধ্যে ২টি লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের। 

তবে শক্তির বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়েই ছিল ভারত। ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের পার্থক্যটা অনেক। বাংলাদেশের চেয়ে ৮২ ধাপ এগিয়ে। ১৮৯তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, যেখানে ভারতের অবস্থান ১০৭ নম্বরে।

এদিন দলে দুটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। সাদউদ্দিন ও মতিন মিয়াকে নিয়ে মাঠে নামা দলটি শুরুতে কিছুটা এলোমেলো থাকলেও ধীরে ধীরে গুছিয়ে নেয় নিজেদের। গোল করার মতো প্রথম সুযোগটা তৈরি করে বাংলাদেশই। জামাল ভুঁইয়ার ফ্রি-কিক ভারতের রক্ষণ সৃষ্ট জটলা থেকে বাই সাইকেল কিক নিয়েছিলেন বিপলু আহমেদ। কিন্তু ভারতীয় রক্ষণ চিড়তে পারেনি। এরপর আলগা বলে সুযোগ ছিল সাদের। তার হেড অল্পের জন্য লক্ষে থাকেনি।

পাল্টা আক্রমণ থেকে এগিয়ে যায় ভারত। মূলত বাংলাদেশের রক্ষণভাগের দুর্বলতার কারণেই গোল হজম করে বাংলাদেশ। সুনীল ছেত্রিকে ঠিকভাবে মার্কিং করতে পারেননি তপু বর্মণ। ডান প্রান্তে সতীর্থের থ্রু পাস ফাঁকায় পেয়ে ছেত্রিকে কাটব্যাক করেন উদান্তা সিং। আলতো শটে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা এ ফুটবলারের।

এক মিনিট পরই সমতায় ফিরতে পারতো বাংলাদেশ। ফাঁকায় বল পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি বিপলু। ডান প্রান্ত থেকে দারুণ কাটব্যাক করেছিলেন মতিন। কিন্তু বিপলুর শট লক্ষ্যেই থাকেনি। ৩৫তম মিনিটে লিস্টন কোলাচু জোরালো শট নিতে পারলে বিপদ হতে পারতো বাংলাদেশের। দুর্বল শট ধরতে কোনো সমস্যা হয়নি জিকোর।

৩৮তম মিনিটে সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে অসাধারণ এক শট নিয়েছিলেন ছেত্রি। তবে দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান বাংলাদেশ গোলরক্ষক জিকো। পাল্টা আক্রমণ থেকে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। চার খেলোয়াড় ফাঁকায় ঢুকে পড়েছিলেন। এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডান প্রান্তে সাদকে বল দেন মতিন। ডি-বক্সের সামনে থেকে তিনি বলটা ঠেলে দেন বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় থাকা বিপলুর সামনে। কিন্তু বুদ্ধিদীপ্ত শট নিতে পারেননি তিনি। তার শট গোলরক্ষক বরাবর গেলে ঝাঁপিয়ে ঠেকান গ্রুরপ্রিত সিং সিন্ধু।

৪১তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো ভারত। সতীর্থের ক্রস থেকে দারুণ এক হেডে ছোট ডি-বক্সে থাকা রাহুল ভেকেকে দিয়েছিলেন ছেত্রি। তবে রাহুলের অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ফলে এক গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

৫১তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন রাকিব হোসেন। সাদউদ্দিনের নিখুঁত কাটব্যাক একেবারে ফাঁকা পোস্টে বল পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার ভলি লক্ষ্যেই থাকলো না। উল্টো পরের মিনিটে বল দখলের লড়াইয়ে অযথাই মেজাজ হারিয়ে দেখলেন হলুদ কার্ড। তিন মিনিট পর বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। নিজের ভুলে ফাঁকায় ঢুকে পড়া লিস্টন কোলাচুকে পেছন থেকে ধরে আটকাতে চেয়েছিলেন বিশ্বনাথ ঘোষ। ফলে সরাসরি লাল কার্ড দেখান রেফারি।

৫৮তম মিনিটে মতিন মিয়াও ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বল নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারায় নষ্ট হয় সে সুযোগ। দুই মিনিট পর বড় বাঁচা বেঁচে যায় বাংলাদেশ। লাল-সবুজদের দুই দফা বাংলাদেশকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। প্রথমে মানবির সিংয়ের শট ঠেকান। এরপর আলগা বল ফাঁকায় থাকা উদান্তের কাছে দিয়েছিলেন ছেত্রি। কিন্তু তার শট দারুণ দক্ষতায় ফেরান বাংলাদেশ গোলরক্ষক।

৭১তম মিনিটে একসঙ্গে দুটি পরিবর্তন করেন বাংলাদেশ কোচ অস্কার ব্রুজান। সোহেল রানা ও সুমন রেজাকে নামালে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ বাড়ে বাংলাদেশের। দুই মিনিট পর তার সুফলও পায় দলটি। সমতায় ফেরে তারা। জামালের কর্নার থেকে রাকিবের হেড ফাঁকায় পেয়ে যান ইয়াসিন আরাফাত। ফাঁকা পোস্টে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি এ ডিফেন্ডারের।

৮৫তম গোললাইন মানবিরের শট অনেকটা গোললাইন থেকে থেকে ঠেকান তপু বর্মণ। এরপর আর সে অর্থে জোরালো কোনো আক্রমণ করতে পারেনি কেউই। ফলে ড্র মেনেই মাঠ ছাড়ে দুই দল।

Comments

The Daily Star  | English

Trade at centre stage between Dhaka, Doha

Looking to diversify trade and investments in a changed geopolitical atmosphere, Qatar and Bangladesh yesterday signed 10 deals, including agreements on cooperation on ports, and manpower employment and welfare.

1h ago