রক্ষণের একগাদা ভুলে মোহনবাগানের কাছে বসুন্ধরার বড় হার

মুফতে পাওয়া সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে হ্যাটট্রিকের স্বাদ নিলেন মোহনবাগানের ফরোয়ার্ড লিস্টন কোলাচো।
ছবি: ফেসবুক

প্রচণ্ড বৃষ্টি, ঝড়ো বাতাস ও বজ্রপাতে শুরুর কিছুক্ষণ পর বন্ধ হয়ে গেল খেলা। ঘণ্টাখানেক বাদে ফের মাঠে গড়ালে দুবার গোলপোস্ট কাঁপিয়ে এটিকে মোহনবাগানকে বেকায়দায় ফেলে দিল বসুন্ধরা কিংস। তবে রক্ষণভাগের একের পর এক ভুলে ছেদ পড়ল বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগের শিরোপাধারীদের আধিপত্যে। মুফতে পাওয়া সুযোগ দারুণভাবে কাজে লাগিয়ে হ্যাটট্রিকের স্বাদ নিলেন মোহনবাগানের ফরোয়ার্ড লিস্টন কোলাচো। বড় ব্যবধানে হেরে এএফসি কাপের পরের পর্বে ওঠার আশা ফিকে হয়ে গেল বসুন্ধরার।

শনিবার কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে আসরের 'ডি' গ্রুপের ম্যাচে ৪-০ গোলে হেরেছে অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যরা। মোহনবাগানের হয়ে লিস্টন ছাড়াও জাল খুঁজে নেন ডেভিড উইলিয়ামস।

দুই ম্যাচে সমান একটি করে জয় ও হারে বসুন্ধরার পয়েন্ট ৩। গত বুধবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছিল তারা। সেদিনই গোকুলাম কেরালার কাছে ৪-২ গোলে হেরে যাওয়া মোহনবাগানের পয়েন্টও ৩। গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় তারা আছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। কিছুক্ষণ পর মাজিয়ার মুখোমুখি হতে যাওয়া গোকুলাম রয়েছে দুইয়ে। তিনে থাকা বসুন্ধরা গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আগামী মঙ্গলবার মুখোমুখি হবে গোকুলামের।

কিক-অফের পরপরই তাণ্ডব শুরু করে ঝড়-বৃষ্টি। প্রবল বাতাসে উড়ে যায় মাঠের বিলবোর্ড ও ব্যানার। সেগুলো ঠিকঠাক করে খেলা চালিয়ে যাওয়া হলেও হানা দিতে থাকে বজ্রপাত। ফলে একাদশ মিনিটে খেলা বন্ধ করে দেন রেফারি। তখন ফুটবলাররা ফিরে যান নিজেদের সাজঘরে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে ঘণ্টাখানেক পর আবার শুরু হয় দুই দলের লড়াই।

প্রথমার্ধের প্রথম মিনিটেই প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় বসুন্ধরা। নাইজেরিয়ান ম্যাথিউ চিনেডুর সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাম পায়ে শট নেন মিগেল ফেরেইরা। এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের প্রচেষ্টা হতাশা জাগিয়ে থাকেনি লক্ষ্যে।

অল্প সময়ের মধ্যে দুবার ভাগ্যের ফেরে আক্ষেপে পুড়তে হয় বসুন্ধরাকে। ১৮তম মিনিটে রবসন রবিনহোর ফ্রি-কিক ডি-বক্সের ভেতরের জটলা এড়িয়ে বাধা পায় দূরের পোস্টে। ফিরতি বলে হেড করতে পারেননি গোলমুখে থাকা তারিক কাজী। তিন মিনিট পর অবিশ্বাস্য এক গোল পেতে পারতেন রাইট-ব্যাক রিমন হোসেন। তার বাঁ পায়ের দূরপাল্লার কোণাকুণি ভলি প্রতিহত হয় পোস্টে।

২৪তম মিনিটে রক্ষণের বিস্ময়কর ভুলে গোল হজম করে বসে বসুন্ধরা। সতীর্থের পাস ভারতীয় তারকা লিস্টন নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হলে ডি-বক্সের ভেতরে বল বিপদমুক্ত করার সুযোগ ছিল বিশ্বনাথ ঘোষের। কিন্তু শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে বলে পা ছোঁয়ানোর আগেই পড়ে যান এই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। এরপর মোহনবাগানকে এগিয়ে দেওয়ার কাজটা অনায়াসে সারেন লিস্টন।

সাত মিনিট পর ব্যবধান বাড়ায় ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি। বসুন্ধরার ডিফেন্ডাররা মাঠের বেশ ওপরে উঠে গেলে জনি কাউকো নিজেদের অর্ধ থেকে লম্বা করে বল বাড়ান লিস্টনের উদ্দেশ্যে। বাধাহীনভাবে অনেকটা দৌড়ে ডি-বক্সে ঢুকে গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে কাটিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৫০তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে শট নেন বসুন্ধরার ইয়াসিন আরাফাত। তার প্রচেষ্টা ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন মোহনবাগানের গোলরক্ষক আর্শ শাইখ। কিন্তু এই ইঙ্গিতের পর রক্ষণভাগের দুর্বলতায় ভেস্তে যায় ব্রুজোনের দলের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন।

তিন মিনিট পর কর্নার লাইনের কাছে বল হারিয়ে ফেলেন ইরানের ডিফেন্ডার খালিদ শাফিই। তিনি ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে বল পেয়ে মানভীর সিং ক্রস করেন ডি-বক্সে। অরক্ষিত কোলাচো এরপর নিখুঁত শটে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন। ৭৭তম বসুন্ধরার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন উইলিয়ামস। সতীর্থের পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শরীর ঘুরিয়ে জিকোকে পরাস্ত করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Sajek accident: Death toll rises to 9

The death toll in the truck accident in Rangamati's Sajek increased to nine tonight

6h ago