নিজেকে মেলে ধরার মৌসুমকে পূর্ণতা দিলেন ভিনিসিয়ুস

কোর্তোয়ার আড়ালে ঢাকা পড়ে গেলেও লিভারপুলের বিপক্ষে ফাইনালে রিয়ালের জয়োৎসব নিশ্চিত হয় ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের একমাত্র লক্ষ্যভেদে।
ছবি: টুইটার

ফাইনালের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব আলো নিজের ওপর রাখলেন গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া। অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে পেলেন ম্যাচসেরার পুরস্কার। রিয়াল মাদ্রিদের রেকর্ড ১৪তম উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পর তাকে নিয়েই সব মহলে চলছে বন্দনা। তবে গোলের খেলা ফুটবল। কোর্তোয়ার আড়ালে ঢাকা পড়ে গেলেও লিভারপুলের বিপক্ষে ফাইনালে রিয়ালের জয়োৎসব নিশ্চিত হয় ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের একমাত্র লক্ষ্যভেদে। ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে ব্রাজিলিয়ান এই তরুণ ফরোয়ার্ড নিজেকে মেলে ধরার মৌসুমকে দিলেন পূর্ণতা।

শনিবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে প্যারিসের স্তাদে দে ফ্রান্সে ১-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রিয়াল। ইউরোপের সর্বোচ্চ এই ক্লাব আসরে এটি তাদের রেকর্ড ১৪তম শিরোপা। ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে ফেদেরিকো ভালভার্দের ক্রসে বল জালে পাঠিয়ে লস ব্লাঙ্কোসদের উল্লাসে মাতান ভিনিসিয়ুস।

এক বছর আগেও রিয়ালের ভক্ত-সমর্থক ও বিশেষজ্ঞদের অভিযোগের লক্ষ্যবস্তু ছিলেন ভিনিসিয়ুস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচুর ট্রলের শিকারও হতে হয়েছে তাকে। প্রশ্ন উঠেছিল, আসলেই কি ৪৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে কেনার যোগ্য ছিলেন তিনি? তবে ২১ বছর বয়সী এই ফুটবলার সদ্যসমাপ্ত মৌসুমে সমস্ত সমালোচনার জবাব দিয়েছেন পায়ের কারিকুরি দেখিয়ে। তার পাদপ্রদীপের আলোয় আসার মধুর সমাপ্তি হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তার জয়সূচক গোলে।

ভিনিসিয়ুসকে গত মৌসুমে ভুগতে হয়েছে তার বাজে সিদ্ধান্ত ও ফিনিশিংয়ের দুর্বলতার কারণে। গোলমুখে গেলেই খেই হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৯ ম্যাচে মাত্র ছয়টি গোল ও সাতটি অ্যাসিস্ট করেছিলেন তিনি। ধারাবাহিকতার অভাবে রিয়ালে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার কাল মেঘ জমতে শুরু করেছিল। সবচেয়ে বিব্রতকর অভিজ্ঞতার শিকার ভিনিসিয়ুস হয়েছিলেন ২০২০ সালের অক্টোবরে। বরুসিয়া মনচেনগ্লাডবাখের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচের বিরতির সময় করিম বেনজেমা সতীর্থ ফারলান্দ মেন্দিকে বলেছিলেন, 'তাকে (ভিনিসিয়ুস) পাস দিও না। সে আমাদের বিপক্ষে খেলছে।' বেনজেমার এমন মন্তব্যের কারণ ছিল বল পায়ে ভিনিসিয়ুসের মলিন প্রদর্শনী।

সাবেক কোচ জিনেদিন জিদানের আস্থাও হারিয়ে ফেলেছিলেন ভিনিসিয়ুস। তবে গত বছরের জুনে কার্লো আনচেলত্তি রিয়ালের দায়িত্বে ফিরে আসার পর পাল্টে যায় পরিস্থিতি। ঘষেমেজে ভিনিসিয়ুসকে হীরার টুকরোতে পরিণত করার পরিকল্পনা করেন তিনি। ফলও মিলেছে হাতেনাতে। আনচেলত্তির দেখানো পথে হেঁটে নিজের যোগ্যতা ও সামর্থ্য মাঠে প্রমাণের আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছেন ভিনিসিয়ুস। ২০২১-২২ মৌসুমে রিয়ালের অন্যতম সেরা পারফর্মারে পরিণত হয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে ২২ গোল ও ২০ অ্যাসিস্ট রয়েছে তার নামের পাশে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানোর আগে রিয়ালের লা লিগার শিরোপা জয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

ধীরে ধীরে ক্লাবের ভক্তদের প্রিয় পাত্রের একজন হয়ে ওঠার পাশাপাশি কোচ ও সতীর্থদের সম্মান ও আস্থা আদায় করে নিয়েছেন ভিনিসিয়ুস। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের যেসব গল্পের অংশীদার তিনি হয়েছেন, তা নিয়ে নিশ্চিতভাবেই চর্চা হবে আগামীতে।

Comments

The Daily Star  | English

Create right conditions for Rohingya repatriation: G7

Foreign ministers from the Group of Seven (G7) countries have stressed the need to create conditions for the voluntary, safe, dignified, and sustainable return of all Rohingya refugees and displaced persons to Myanmar

1h ago