অথচ মানচিনিকে ‘পাগল’ ভেবেছিলেন কিয়েলিনিরা

মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে তাদের ইউরোপের সেরা হওয়ার পেছনে মূল কারিগর কোচ মানচিনি।
chiellini_and_mancini
ছবি: টুইটার

রবার্তো মানচিনি যখন ২০১৮ সালের মে মাসে ইতালির দায়িত্ব নেন, তখন চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ফুটবলে চলছিল ঘোর অমানিশা। বিশ্বকাপে জায়গা না পাওয়া তো তাদের জন্য ব্যর্থতার তলানিতে নেমে যাওয়ারই নামান্তর!

সেই নিকষ কালো আঁধার পেরিয়ে উজ্জ্বল আলোর স্পর্শ গায়ে মাখছে আজ্জুরিরা, করছে উপভোগ। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে তাদের ইউরোপের সেরা হওয়ার পেছনে মূল কারিগর কোচ মানচিনি। অথচ শুরুর দিকে তাকে ‘পাগল’ ভাবতেন ইতালির ফুটবলাররা!

দায়িত্বের প্রথম দিন থেকেই খেলোয়াড়দের মনের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের বীজ আর জয়ের মন্ত্র বুনে দেওয়ার কাজ করেছেন মানচিনি। তার অভিপ্রায় ছিল স্পষ্ট, ‘ইতালিকে ফিরিয়ে নিতে হবে তাদের যোগ্য স্থানে।  ইউরোপের চূড়ায়, বিশ্বের চূড়ায়। আমরা বহু বছর ধরে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতিনি। সুতরাং, এটা জয়ই হবে আমাদের প্রথম লক্ষ্য।’

ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে রবিবারের রাতটা মানচিনি মনে রাখবেন আলাদা করে। শিষ্যদের যে স্বপ্ন তিনি দেখিয়ে আসছিলেন, তারা সেটাতে পূর্ণতা দিতে পেরেছেন। রোমাঞ্চকর ফাইনালে টাইব্রেকারে গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুমার বীরত্বে ইংল্যান্ডের স্বপ্ন ভেঙে ৫৩ বছর পর ইউরোর শিরোপা জিতেছে ইতালি।

পরে অধিনায়ক জর্জিও কিয়েলিনি বলেছেন, ‘শুরুতে যখন মানচিনি বলেছিলেন, আমাদের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের ব্যাপারে ভাবতে হবে, আমরা তখন ভেবেছিলাম, তিনি পাগল।’

কিয়েলিনিদের দোষারোপ করার উপায় নেই। যে দলটি ৩২ দলের বিশ্বকাপের টিকিট পায়নি, তারা পরের বড় আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য খেলবে, এটা তো অবিশ্বাস্যই ঠেকে!

তবে মানচিনি স্বপ্ন পূরণের উপায়ও জানেন। তার ছোঁয়া বদলে দিয়েছে ইতালির খেলার ধরনকে। রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণে খেলার চিরায়ত ঘরানা ছেড়ে তারা পূজারী হয়েছে গতিময় ও আক্রমণাত্মক ফুটবলের। তাদের নতুন এই কৌশলে একের পর এক কুপোকাত হচ্ছে প্রতিপক্ষ। সবশেষ টানা ৩৪ ম্যাচে হারেনি তারা।

পালাবদলের নায়ক মানচিনিকে নিয়ে কিয়েলিনি যোগ করেছেন, ‘তিনি খুবই কম কথা বলেন। তবে দুর্দান্ত একটি দল তিনি তৈরি করেছেন। তিনি পুনরুজ্জীবিত করেছেন এমন একটি দলকে, যারা গত ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বাজে অবস্থায় ছিল।’

ইতালিয়ান কোচ আনন্দে উদ্বেল হলেও ইতোমধ্যে হয়তো নতুন ছক কষতে শুরু করেছেন। নইলে ফাইনালের পর কেন তিনি বলবেন, ‘একটা চক্র পূরণ হয়েছে। তিন বছরের চক্র।’

২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাকি নেই আর দেড় বছরও। নতুন চক্রটা কি তাহলে ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরকে ঘিরে?
 

Comments

The Daily Star  | English
Civil society in Bangladesh

Our civil society needs to do more to challenge power structures

Over the last year, human rights defenders, demonstrators, and dissenters have been met with harassment, physical aggression, detainment, and maltreatment by the authorities.

9h ago