ভেঙ্কেটেশ-ত্রিপাঠিদের ঝড়ে উড়ে গেল রোহিতের মুম্বাই
কুইন্টেন ডি ককের ঝড়ে ভালো শুরু পেয়েছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, কিন্তু তার সঙ্গে মিলে দ্রুত রান আনার চাহিদা মেটাতে পারেননি রোহিত শর্মা। মিডল অর্ডারেও এলো না বলার মতো রান। মুম্বাইকে নাগালের মধ্যে আটকে দিয়ে উত্তাল হয়ে উঠল ভেঙ্কেটেশ আইয়ার, রাহুল ত্রিপাঠিদের ব্যাট। একপেশে লড়াইয়ে জিতল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
বৃহস্পতিবার আবুধাবিতে আইপিএলের ম্যাচে মুম্বাইকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে কলকাতা। মুম্বাইর করা ১৫৫ রান ওয়েন মরগ্যানের দল পেরিয়ে যায় ২৯ বল বাকি রেখে। দলের জয়ে ৩০ বলে ৫৩ করেন নবাগত ভেঙ্কেটেশ। ত্রিপাঠি অপরাজিত ছিলেন ৪২ বলে ৭৪ রানে। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে উঠে এসেছে কলকাতা।
১৫৬ রানের লক্ষ্যে বিস্ফোরক শুরু আনেন কলকাতার দুই ওপেনার। বিশেষ করে ভেঙ্কেটেশ আইয়ার ছিলেন দুর্নিবার। ৯ বলে ১৩ করে শুভমান গিল যখন ফিরছেন, ৩ ওভারে দলের রান তখন ৪০।
এরপর ত্রিপাঠিকে নিয়ে ছুটে চলা শুরু তার। চোখ ধাঁধানো সব ক্লিন হিট, গ্যাপ বের করা শট, বলের গতি বুঝে মানিয়ে নেওয়া ব্যাটিং করে এই দুজন এলোমেলো করে দেন মুম্বাইকে। আগের ম্যাচে আইপিএলে প্রথমবার নেমে ২৭ বলে ৪১ করেছিলেন, এবার আরও উত্তাল হয়ে উঠে ভেঙ্কেটশের ব্যাট। প্রথম ১৫ বলেই তুলে ফেলেন ৩৯ রান।
বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান মাত্র দুই ম্যাচেই নজর কেড়েছেন। ২৫ বলে পেয়ে যান নিজের প্রথম ফিফটি। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ত্রিপাঠির ব্যাটও ছিল দুর্বার। দ্বিতীয় উইকেটে মাত্র ৫২ বলেই দুজনে আনেন ৮৮ রান।
৩০ বলে ৫৩ করে বুমরাহর বলে বোল্ড হয়ে থামে ভেঙ্কেটশের ইনিংস। ততক্ষণে ম্যাচ অনেকটাই কলকাতার মুঠোয়। অধিনায়ক মরগ্যান নেমে শেষ দিকে আউট হলেও সমস্যা হয়নি। অনেক আগেই খেলা শেষ করে দেন ৮ চার ৩ ছয়ে ৭৪ করা ত্রিপাঠি।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই ছিল মুম্বাইর। দারুণ আগ্রাসী মেজাজে সময়ের দাবি মেটাচ্ছিলেন ডি কক। অধিনায়ক রোহিত শুরুতে কিছু বাউন্ডারি পেলেও ডট বল নিজের উপর চাপ বাড়ান অনেকখানি। ডি ককের সঙ্গে তাল মিলিয়ে রান আনতে না পারায় কিছুটা শ্লথ করে দেন রানের গতি। স্লগ সুইপের চেষ্টায় লঙ অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৩৩ রান করেন ৩০ বল খেলে।
আগের ম্যাচের মতো এদিনও ব্যর্থ সূর্যকুমার যাদব। ডি ককের উপর ছিল দলকে টানার ভার। দক্ষিণ আফ্রিকান কিপার ব্যাটসম্যান ফিফটি তুলে থামান তার দৌড়। তরুণ ঈশান কিশান লুকি ফার্গুসেনের শিকার হলে বড় রানের ভিত নড়ে যায় মুম্বাইর।
এদিনও দারুণ করেছেন বরুণ চক্রবর্তী। ৪ ওভারে দিয়েছেন কেবল ২২ রান। সুনিল নারাইন আরও কৃপণ। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে তিনি তুলেছেন রোহিতের উইকেট। প্রসিদ কৃষ্ণের বাজে দিনে কিউই পেসার ফার্গুসেন রেখেছেন বড় ভূমিকা।
প্রথম ১০ ওভারে বড় কিছুর আভাস দেওয়া মুম্বাইর ডানা অনেকটাই ছাঁটা পড়ে মাঝপথে। কাইরন পোলার্ড তবু ১৫ বলে ২১ করে দলকে পার করান দেড়শো। তবে ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে তা মোটেও যথেষ্ট ছিল না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স: ২০ ওভারে ১৫৫/৬ (রোহিত ৩৩, ডি কক ৫৫, সূর্যকুমার ৫, ঈশান ১৪, পোলার্ড ২১, ক্রিনাল ১২, সৌরভ ৫*, মিলনে ১* ; নিতিশ ০/৫, চক্রবর্তী ০/২২, নারাইন ১/২০, ফার্গুসেন ২/২৭, প্রসিদ ২/৪৩, রাসেল ০/৩৭)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৫.১ ওভারে ১৫৯/৩ ( গিল ১৩, ভেঙ্কেটশ ৫৩ , ত্রিপাঠি ৭৪৮ , মরগ্যান ৭, রানা ৫* ; বোল্ট ০/২৩, মিলনে ০/২৯ , বুমরাহ ৩/৪৩, ক্রুনাল ০/২৫, চাহার ০/৩৪, রোহিত ০/৪ )
ফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ৭ উইকেটে জয়ী।
Comments