বাংলাদেশের সামনে সহজ লক্ষ্য

রোববার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাঁচা মরার লড়াইয়ে আগে ব্যাট করে কেবল  ২৪০ রান করতে পেরেছে জিম্বাবুয়ে।

রেজিস চাকাভা, ব্র্যান্ডন টেইলর, ডিওন মায়ার্সরা প্রত্যেকেই ভালো শুরু পেয়েছিলেন। টেইলর দুর্ভাগ্যের শিকার হলেও বাকিরা হারিয়েছেন সুযোগ। ছয়ে নেমে তবু দারুণ ফিফটিতে আশা জাগালেন ওয়েসলি মাধভেরে। কাজ অসমাপ্ত থাকল তারও। অনেকদিন পর ফিরে সিকান্দার রাজা থিতু হলেও ঝড় তুলতে পারলেন না। জিম্বাবুয়েও পেল না চ্যালেঞ্জিং পুঁজি।

রোববার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে বাঁচা মরার লড়াইয়ে আগে ব্যাট করে কেবল  ২৪০ রান করতে পেরেছে জিম্বাবুয়ে।  আহামরি বল না করেও ৪ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের সফল বোলার শরিফুল ইসলাম।

এই ম্যাচ জিতলে ২০০৯ সালের পর জিম্বাবুয়েতে ওয়ানডে সিরিজ জিতবে তামিম ইকবালের দল।

আগের ম্যাচে উইকেটে ঘাসের বাড়তি ছোঁয়া দেখে আগে বোলিং নিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। এদিন টেইলর উইকেটে দেখতে পাননি ঘাস। সেইসঙ্গে তরুণ একাদশকে রান তাড়ার চাপে না ফেলতে নেন আগে ব্যাটিং।

কিন্তু শুরুটা এবারও হলো না ভালো। একাদশে এসে সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পারেননি টিনাশে  কামুনহুকামুয়ে। তাসকিন আহমেদের প্রথম ওভারে অফ স্টাম্পের বাইরের বল বারবার তাড়া করে যাচ্ছিলেন। পরাস্ত হলেও হুশ ফিরল না তার। অনেক বাইরের এক বলে ক্যাচ দেন পয়েন্টে।

৩ রানে প্রথম উইকেট হারানো দল দিশে পাচ্ছিল তিনে নামা রেজিস চাকাভার ব্যাটে। আরেক ওপেনার তাদিওয়ানশে মারুমানি এক বার ক্যাচ দিয়ে বেঁচেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ৩০ রানের জুটির পর মারুমানি আত্মাহুতি দেন মেহেদী হাসান মিরাজের বলে।  পাওয়ার প্লেতে বল করতে আসা মিরাজকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে খোয়ান স্টাম্প। ১৮ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান।

এরপর অধিনায়ক টেইলর নেমে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন। চাকাভাও ছিলেন সতর্ক। তৃতীয় উইকেটে তাই দুজনে পেয়ে যান জুটি। ঘুরে দাঁড়ানোর অবস্থাও পায় জিম্বাবুয়ে।

বড় কোন সমস্যাই ছাড়াই এগুচ্ছিলেন তারা। চাকাভা থিতু হয়ে ভুল করেন সাকিব আল হাসানের আর্মার পড়তে। জিম্বাবুয়ের কিপার-ব্যাটসম্যান ৩২ বলে ২৬ করে বোল্ড হয়ে গেলে ভাঙ্গে ৪৭ রানের জুটি।

তবে টেইলর খেলছিলেন দারুণ। দলে আশা-ভরসা হয়ে টিকেছিলেন তিনিই। ডিয়ন মায়ার্সকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটেও যোগ করে ফেলেছিলেন ৩১ রান। কিন্তু চরম দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিদায় হয় তার।

শরিফুলের বাউন্সে আপার কাট করতে গিয়ে মিস করেন। বল কিপারের কাছে যাওয়ার পর শ্যাডো করছিলেন। তা করতে গিয়ে ক্যাজুয়ালভাবে ব্যাট স্পর্শ করে স্টাম্প।

টিভি আম্পায়ার হিট উইকেটের রায় দিলে মাথা নাড়তে নাড়তে বেরিয়ে যান। স্টাম্পে ব্যাট লাগার আগে বল ডেড হয়ে গিয়েছিল কিনা, এই প্রশ্ন তখন দেখা দেয় বড় হয়ে।  

ওয়েসলি মাধভেরেকে নিয়েও একটি জুটি পেয়ে গিয়েছিলেন মায়ার্স। থিতু হয়ে এগুচ্ছিলেন প্রথম ফিফটির দিকেই। কিন্তু সাকিবের অনেক শর্ট বল পুল করতে গিয়ে ধরা পড়েন ওয়াইড লং অনে।

৫৯ বলে ৩৪ করে মায়ার্স ফিরলে ভেঙ্গে যায় ৩৫ রানের জুটি। বিপদ ঘনিয়ে আসা অবস্থায় সিকান্দার রাজাকে নিয়ে দারুণ এক জুটি পান  মাধভেরে। ৬ষ্ঠ উইকেটে আসে ৬৩ রান। যার ৪১ রানই আসে মাধেভেরের ব্যাটে।

ক্যারিয়ারের তৃতীয় ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ফিফটি করে তিনিই দেখাচ্ছিল লড়াইয়ের পুঁজি পাওয়ার আশা।

স্পিনারদের বল ভালোভাবে সামলানোর পর স্লগ ওভারে আশায় ছিলেন ঝড় তুলার। সেই চেষ্টায়  শরিফুলের বলে হাঁকাতে গিয়ে তামিমের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন তিনি।

লং অফ থেকে অনেকখানি ছুটে এসে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ জমান বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাধভেরে ফিরে যান ৬৩ বলে ৫৬ করে। জিম্বাবুয়ের শক্ত পুঁজির আশাও তখনই মিইয়ে যায়।

খানিক পর লুক জঙ্গুই আর  ব্লেসিং মুজারাবানি মারতে গিয়ে  পরপর শিকার হন শরিফুলের। রাজা শেষ ওভার পর্যন্ত থাকলে আরও কিছু রান হতে পারত।   কিন্তু তিনি অনেকটা সময় নিয়েও পারেননি কুলাতে। লম্বা সময় পর ফেরার জড়তা দেখা গেছে তার ব্যাটে। ৪৮তম ওভারে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বলে আউট হওয়ার আগে করেন  ৩০ রান। দ্রুত রান আনার পরিস্থিতিতে এই ৩০ রান করতে তিনি লাগিয়ে দেন ৪৪ বল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

জিম্বাবুয়ে:  ৫০ ওভারে ২৪০/৯  (কামুনহুকামুয়ে ১, মারুমানি ১৩, চাকাভা ২৬, টেইলর  ৪৬ , মায়ার্স ৩৪, মাধভেরে ৫৬, সিকান্দার ৩০ , জঙ্গুই ৮, মুজারাবানি ০, চাতারা ৪* , এনগারাভা ৭*;  তাসকিন ০/৩৮ , সাইফুদ্দিন ১/৫৪, মিরাজ ১/৩৪, শরিফুল ৪/৪৬, সাকিব ২/৪২, মোসাদ্দেক ০/৭, আফিফ ০/১১ )

Comments

The Daily Star  | English

Faridpur bus-pickup collision: The law violations that led to 13 deaths

Thirteen people died in Faridpur this morning in a head-on collision that would not have happened if operators of the vehicles involved had followed existing laws and rules

1h ago