ম্যাচ রিপোর্ট

ত্রিপাঠির ছক্কায় ফাইনালে সাকিবদের কলকাতা

বুধবার শারজাহতে রোমাঞ্চে ঠাসা ম্যাচ ১ বল হাতে রেখে কলকাতা জিতেছে ৩ উইকেটে
Rahul Tripathi

মন্থর উইকেটে দারুণ আঁটসাঁট বল করে দিল্লি ক্যাপিটালসকে নাগালের মধ্যে আটকে রেখেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। রান তাড়ায় ভেঙ্কেটেশ আইয়ার-শুভমান গিলের জুটিতেই চলে আসে ৯৬ রান, ম্যাচ হয়ে যায় সহজ। কিন্তু কে জানত নাটকের তখনো বাকি অনেক কিছু! সেই নাটকীয়তায় নায়ক হওয়ার সুযোগ ছিল সাকিব আল হাসানেরও, এবার পারেননি তিনি।  তবে ছক্কা মেরে দলকে ফাইনালে তুলে নায়ক বনেছেন রাহ্লল ত্রিপাঠি।

বুধবার শারজাহতে রোমাঞ্চে ঠাসা ম্যাচ ১ বল হাতে রেখে কলকাতা জিতেছে ৩ উইকেটে। দিল্লির ১৩৫ রান পেরুতে দারুণ শক্ত অবস্থা থেকে হঠাৎ পথ হারিয়ে শেষে গিয়ে তীরে তরি ভেড়ায় তারা।

ম্যাচ জিততে শেষ দুই ওভারে কলকাতার দরকার ছিল ১১ রান। আনরিক নরকিয়ার ১৯তম ওভারে ৪ রান তুলে কলকাতা হারায় মরগ্যানকে। শেষ ওভার করতে আসেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন। অভিজ্ঞ এই স্পিনারের প্রথম বল থেকে এক রান নেন ত্রিপাঠি। স্ট্রাইকে যাওয়া সাকিব পরের বল ব্যাটে নিতে পারেননি, পরের বলে সুইপের চেষ্টায় হয়ে যান এলবিডব্লিউ।  পরের বলে সুনিল নারাইন এসে ছক্কা মারতে গিয়ে ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। ক্রস হয়ে যাওয়ায় স্ট্রাইক পান ত্রিপাঠি। অশ্বিনের পঞ্চম বলটা তিনি উড়ান লঙ অফ দিয়ে।

১১ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলেই পুরো ম্যাচের মধ্যমণি ত্রিপাঠি। ৪১ বলে ৫৫ করেও আড়ালে পড়ে গেছেন আইয়ার।

অথচ এতকিছুর কোন আভাসই ছিল না।  ১৩৬ রান তাড়ায় নেমে উড়ন্ত সূচনা আনেন ভেঙ্কেটেশ, তাকে সঙ্গত করে যান শুভমান গিলও। পাওয়ার প্লেতেই তারা তুলে ফেলে ৫১ রান।

রান তাড়ায় হিসেব কষে এই জুটি ক্রমশ ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় দিল্লিকে। ১৩তম ওভারে ছক্কার চেষ্টায় ভেঙ্কেটেশ বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিলে ভাঙ্গে ৯৬ রানের জুটি। কিন্তু ততক্ষণে খেলা একদম কলকাতার মুঠোয়।

সেখান থেকেই বদলে যায় ছবি। গিল থামেন ৪৬ বলে ৪৬ করে। রান স্লথ হওয়ার পাশাপাশি পড়তে থাকে উইকেট। নরকিয়া, কাগিসো রাবাদা, অশ্বিনের তোপে ৭ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে কলকাতা। দীনেশ কার্তিক, মরগ্যান আর সাকিব ফেরেন শূন্য রানে।

ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বোলিংয়ে ৪ ওভারে কেবল ২৮ রান দেন সাকিব, নিয়েছেন দারুণ এক ক্যাচও।

এর আগে টস হেরে পৃথ্বী শ দিয়েছিলেন ঝড়ের আভাস। সাকিব প্রথম ওভারে ১ রান দিলেও দ্বিতীয় ওভার করতে এসে পৃথ্বীর হাতে খান ছয়-চার। কিন্তু উড়ন্ত পৃথ্বীর ডানা ভাঙ্গতে দেরি হয়নি।  বরুনের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ১২ বলে ১৮ করে থামেন তিনি।

শেখর ধাওয়ান টিকে থাকলেও রানের গতি বাড়াতে পারছিলেন না। তার সঙ্গে মিলে মার্কাস স্টয়নিস থিতু হয়েছিলেন। সাকিবের তৃতীয় ওভার তারা আনেন ১১ রান। কিন্তু বরুন, সুনিল নারাইনকে খেলা তাদের কঠিন হয়ে যায়।

২৩ বলে ১৮ করা স্টয়নিস ফিরলে ভাঙ্গে এই দুজনের ৩৯ রানের জুটি। এই ৩৯ রান তুলতে তারা লাগিয়ে দেন ৪৫ বল। এতেই খেলার গতিপথ ঠিক হয়ে যায়। ৩৯ বলে ৩৬ করে ফেরেন ধাওয়ান। বরুনের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে তার দারুণ ক্যাচ জমান সাকিব।

বাকি পথে রান এনেছেন শ্রেয়াস আইয়ার। তার গতিও ছিল প্রত্যাশার চেয়ে ধীর। শেষ দিকে নেমে পারেননি অধিনায়ক রিশভ পান্তও। শেমরন হেটমায়ার ১০ বলে ১৭ করলে কিছুটা লড়াইয়ের পুঁজি মিলেছিল কিন্তু কাছে গিয়েও পারেনি দিল্লি। 

আগামী ১৫ অক্টোবর ফাইনালে কলকাতার প্রতিপক্ষ চেন্নাই সুপার কিংস।

Comments