চাকাভা ঝড়ের পর ঘুরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সহজ লক্ষ্য
রেজিস চাকাভার ঝড়ে জিম্বাবুয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল বড় পুঁজির দিকে। তাকে থামানোর পর শেষের দশ ওভারে দারুণ বোলিং-ফিল্ডিংয়ে স্বাগতিকদের রাশ টেনে ধরল বাংলাদেশ। ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে মাহমুদউল্লাহর দল পেল সহজ লক্ষ্য।
বৃহস্পতিবার হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে জিম্বাবুয়ে করেছে ১৫২ রান। তাদের হয়ে ২২ বলে ৪৩ করেন চাকাভা। মোস্তাফিজুর রহমান নেন ৩১ রানে ৩ উইকেট। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ২৩ রানে ২ আর ১৭ রানে ২ উইকেট পান দারুণ বল করা শরিফুল ইসলাম।
টস হেরে বল করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য পায় বাংলাদেশ। মোস্তাফিজের ওই ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরেছিলেন টাডিওয়ানশে মারুমানি। কিন্তু এরপরে আর সুবিধা করতে পারেননি। পঞ্চম বলে আরেকটি ছয়ের নেশায় ক্রিজ থেকে বেরিয়ে মেরেছিলেন। কিন্তু বল উঠে যায় অনেক উপরে। ডিপ মিড উইকেট থেকে অনেকখানি ছুটে লাফিয়ে দারুণ ক্যাচ হাতে জমান সৌম্য সরকার।
১০ রানে প্রথম উইকেট হারালেও ওয়েসলি মাধভেরে-রেজিস চাকভা মিলে আনেন উড়ন্ত শুরু। চার-ছক্কায় প্রথম ৪ ওভারেই এসে যায় ৪০ রান। যদিও পাওয়ার প্লের বাকি দুই ওভারে এসেছে কেবল আর ১০ রান।
তবে সেটা পুষিয়ে যায় পরে। শেখ মেহেদীর করা ৮ম ওভার থেকে তারা আনেন ১৮ রান। এরমধ্যে ২ ছয় আর ১ চারে চাকাভাই এনেছেন ১৭।
নবম ওভারে গিয়ে বিপদজনক জুটিতে ভাঙ্গতে পারে বাংলাদেশ। ৬৪ রানের জুটির পর মাধভেরে সাকিবকে ফিরতে ক্যাচ দিয়ে ফেরত যান। এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার করেছেন ২৩ বলে ২৩ রান।
চাকাভা চালিয়ে রাখেন তার ব্যাট। সঙ্গে যোগ দেন ডিওন মেয়ার্স। প্রথম ১০ ওভারে স্বাগতিকদের বোর্ডে আসে ৯১ রান। এরপরই বিপদ বাড়াতে থাকা চাকাভার উইকেট পায় বাংলাদেশ। তাকে ফেরানোর পুরো কৃতিত্ব কিপার নুরুল হাসান সোহানের। শরিফুলের বল স্কুপ করতে গিয়ে ঠিকমতো ব্যাটে লাগাতে না পারলেও ক্যাচের মতো উঠেছিল। এক বাউন্সে যাওয়া বল কিপারের হাতে রেখে রান নিতে ছুটেছিলেন চাকাভা। সোহান দারুণ ক্ষিপ্রতায় বল ধরে সরাসরি থ্রোতে করেন রান আউট। মাত্র ২২ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৪৩ আসে চাকাভার ব্যাট থেকে।
ওই ওভারেই আসে আরেক সাফল্য। জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক রাজা কাট করতে গিয়ে ধরা দেন সোহানের গ্লাভসে। ৯২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দারুণ শুরুটা তখন তাদের ভেস্তে যাওয়ার পথে। একাদশ ওভার থেকে আসে কেবল ১ রান, পড়ে ২ উইকেট।
অভিষিক্ত মেয়ার্স টিকে থেকে রান বাড়াচ্ছিলেন। তার সঙ্গে মিলে জুটি গড়তে পারেননি টারাসাই মুসাকান্দা। সৌম্যের বলে ৬ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি। মেয়ার্সের কাঁধে ছিল দলকে বড় পুঁজিতে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব। কিন্তু থিতু হয়ে ওয়ানডের মতো আবারও কাজটা সেরে আসতে পারেননি তিনি।
১৫তম ওভারের প্রথম বলে শরিফুলের ফুল লেন্থের বল আড়াআড়ি ঘুরাতে গিয়ে খোয়ান স্টাম্প। ২২ বলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ এসেছে তার ব্যাটে।
সাইফুদ্দিনের বলে ৩ রানে কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছিলেন লুক জঙ্গুই। আরও ১৫ রান যোগ করে সাইফুদ্দিনেরই শিকার তিনি। স্কুপ করতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে বোল্ড হন তিনি।
শেষ ওয়ানডেতে ঝড় তুলা রায়ান বার্ল শেষে আরও কিছু রান বাড়াতে পারতেন। তিনি ফিরেছেন বদলি ফিল্ডার শামীম হোসেন পাটোয়ারির এক দুর্দান্ত ক্যাচে। সাইফুদ্দিনের বলে ওয়াইড লং অন দিয়ে উড়িয়েছিলেন বার্ল। লং অন থেকে অনেকখানি ছুটে গিয়ে প্রায় ছক্কা হতে যাওয়া বল ক্যাচ বানিয়ে শরীরের অসাধারণ ভারসাম্য রাখেন শামীম।
১৯তম ওভার বল করতে এসে ইনিংস মুড়ে দেন মোস্তাফিজ। প্রথম ১০ ওভারে ৯১ তুলা জিম্বাবুয়ে শেষ ১০ ওভারে আনতে পারে আর কেবল ৬১ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে: ১৯ ওভার ১৫২ (মাধভেরে ২৩, মারুমানি ৭, চাকাভা ৪৩, মেয়ার্স ৩৫, রাজা ০, মুসাকান্দা ৬ , বার্ল ৪ , জঙ্গুই ১৮, ওয়েলিংটন ৪* , এনগারাভা ০, মুজারাবানি ৮; সাইফুদ্দিন ২/২৩, মোস্তাফিজ ৩/৩১, সাকিব ১/২৮, শরিফুল ২/১৭, শেখ মেহেদী ০/১৮, মাহমুদউল্লাহ ০/১৪, সৌম্য ১/১৮)
Comments