ক্রীড়া লেখক, ক্রিকেট কোচ জালাল আহমেদ চৌধুরী আর নেই
দেশের স্বনামধন্য ক্রীড়া লেখক ও ক্রিকেট কোচ জালাল আহমেদ চৌধুরী আর নেই। বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার।
ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল দ্য ডেইলি স্টারকে এই খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান সকাল ১১টা ৫ মিনিটে জীবনাবসান হয়েছে ৭৪ বছর বয়েসী প্রতিথযশা এই ক্রিকেট ব্যক্তিত্বের।
সব্যসাচী এই ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, 'বিসিবি মরহুমের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহানুভূতি প্রকাশ করছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার জীবনব্যাপী নিবেদনের জন্য এবং অবদানের জন্য বোর্ড তাকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে।'
জালাল আহমেদের স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন আগেই। ছেলে-মেয়েরা বাস করতেন দেশের বাইরে। ঢাকার ফ্লাটে একাই থাকতেন তিনি। তবে অসুস্থতার খবর পেয়ে তার সন্তানরা ঢাকায় চলে এসেছিলেন।
বেশ কয়েকদিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তার আগে করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠেছিলেন এই গুণী লেখক। গত ১ সেপ্টেম্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রথম দফায় আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন। তখন ফেসবুকে লিখেছিলেন, 'আটদিন পর হসপিটাল বাইরে। মুঠোমুঠো ঔষধ,বাড়তি অক্সিজেনের ব্যবস্থা আর নানা বিধিনিষেধ দিয়ে ডাক্তার বাড়ী পাঠিয়েছেন। বাড়ী বলতে বোনের বাসা,আমার বিপত্নীকের ডেরায় ফেরা যাবে না ,সেবাযত্নের অভাবের কারণে। বিপন্ন ফুসফুস নিয়ে আরো কিছুদিন ঠেলা ধাক্কার জীবনযাপনের অনুশীলন করতে হবে। আমার মাঠতুতো অনুজেরা এ কদিন আমাকে প্রচন্ড মানসিক শক্তি যুগিয়েছেন। আমার পায়ের নিচের মাটি হয়ে,মাথার উপর আকাশ হয়ে ছিলেন এবং আছেন পুত্রকন্যা,ভাইবোন সহ সকল আত্মীয়স্বজনেরা। নিকটজনদের এই আত্মিক বন্ধন, আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত, আলহামদুলিল্লাহ।'
তবে এরপর আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এই দফায় হাসপাতালে নেওয়ার পর আর ফেরা হলো না ক্রিকেটার, ক্রিকেট কোচ থেকে সাংবাদিক- নানাভাবে দেশের ক্রিকেটে অবদান রাখা এই ব্যক্তিত্বের।
সত্তর ও আশির দশকে দেশের শীর্ষ পর্যায়ে ক্রিকেট খেলেছেন জালাল চৌধুরী। পরে হয়ে যান দেশের একজন স্বনামধন্য ক্রিকেট কোচ। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা অনেক নামী ক্রিকেটারের গুরু ছিলেন তিনি। ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ী দলের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। গর্ডন গ্রিনিজ দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত কোচ ছিলেন জালাল।
খেলাধুলো নিয়ে বিস্তর জানাশোনা ও লেখালেখির প্যাশন থেকে যুক্ত হন ক্রীড়া সাংবাদিকতায়ও। তার লেখনী শক্তি দিয়ে দেশের খেলাধুলোর পাঠকদের কাছে হয়েছিলেন ভীষণ সমাদৃত।
আজ বিকেল তিনটায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে আজিমপুরে আরেকটি জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানেই তাকে শায়িত করা হবে।
Comments