‘শ্রমবাজারে নারীর জন্য পরোক্ষ প্ল্যাটফর্ম হতে পারে পোশাক খাত’

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো পরিপূরক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে আরও বেশি নারীকে শ্রমবাজারে যুক্ত করতে একটি পরোক্ষ লঞ্চিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পোশাক শিল্পের সুবিধা নিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো পরিপূরক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে আরও বেশি নারীকে শ্রমবাজারে যুক্ত করতে একটি পরোক্ষ লঞ্চিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে পোশাক শিল্পের সুবিধা নিতে পারে।

তাবে তাদের মতে, তবে নারীর ক্যারিয়ারের সুযোগ বাড়াতে দেশগুলোকে অবশ্যই ৩টি বাধা মোকাবিলা করতে হবে। এর মধ্যে আছে অপর্যাপ্ত জাতীয় আয়ের কারণে সেবাখাতের কম চাহিদা, নিম্ন শিক্ষার হার এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিধি বাধা যা নারীদের কাজ করতে বাধা সৃষ্টি করে।

নারীদের গতিশীলতা এবং শ্রম বাজারের ফলাফল নির্ধারণে নিরাপত্তা সম্পর্কিত উদ্বেগগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উল্লেখ করে তারা জানান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনে কর্মক্ষেত্রে সমান প্রবেশাধিকার ও নারীদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ প্রতিষ্ঠার উপর জোর দিতে হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) তিন দিনের বার্ষিক সম্মেলনের তৃতীয় দিনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র উপস্থাপনের সময় এ অভিমত ব্যক্ত করেন বিশেষজ্ঞরা।

যুক্তরাজ্যের আলস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিক্সের অধ্যাপক এসআর ওসমানি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। অধিবেশনে ৪টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।

বিশ্বব্যাংকের দারিদ্র্য ও ইক্যুইটি গ্লোবাল প্র্যাকটিসের পরামর্শক মেক্সিকো এ ভেরগারা 'ফ্রম জবস টু ক্যারিয়ার: অ্যাপারেল এক্সপোর্টস অ্যান্ড ক্যারিয়ার পাথস ফর উইমেন ইন ডেভেলপিং কান্ট্রিজ' শিরোনামে একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।

তিনি গবেষণাপত্রে বাংলাদেশসহ ৬টি দেশের ওপর দৃষ্টিপাত করেছেন। যেসব দেশে নারীরা পোশাক শিল্প রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গবেষণাপত্রে ভেরগারা বলেছেন, অপর্যাপ্ত জাতীয় আয়ের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিম্ন শিক্ষার হার সেবা খাতে নারীদের কাজকে পেশায় রূপান্তর করা কঠিন করে তোলে।

গবেষণা পত্রে আরও বলা হয়েছে, অন্যান্য শিল্পসম্প্রসারণ এবং শিক্ষা বা দক্ষতা উন্নয়নে আরও বিনিয়োগ ছাড়া পোশাক রপ্তানিতে নিয়োজিত নারীদের কাজকে পেশায় রূপান্তর সম্ভব নয়।

ভেরগারা তার গবেষণাপত্রে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য কিছু নীতিগত সুপারিশ করেছেন। যার মধ্যে আছে পোশাক উৎপাদন ও সংশ্লিষ্ট শিল্পে নারী উৎপাদন কর্মীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং উচ্চ-মাধ্যমিক শিক্ষায় নারীদের তালিকাভুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে ক্যারিয়ার বৃদ্ধিতে সুবিধা বৃদ্ধি করা।

তিনি সেসব আইনি বাধাগুলো সংস্কারের ওপরও জোর দিয়েছেন। যেগুলো কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিতে নারীদের প্রবেশাধিকার এবং স্থায়ীত্ব হ্রাস করে।

বিশ্বব্যাংকের তানিমা আহমেদ 'ওমেন'স এমপ্লেয়মেন্ট অ্যান্ড সেফটি পারসেডশনস: এভিডেন্স ফ্রম লো-ইনকাম নেইবারহুডস অব ঢাকা, বাংলাদেশ' নিয়ে একটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।

২০১৬ সালে অ্যাকশনএইড পরিচালিত এক জরিপের কথা উল্লেখ করে তানিমা তার গবেষণাপত্র উপস্থাপনের সময় জানান, ৮৪ শতাংশ বাংলাদেশি নারী নিয়মিতভাবে পাবলিক স্পেসে থাকাকালীন অপমান বা যৌন মন্তব্যের সম্মুখীন হন।

নিরাপত্তা উপলব্ধিতে লিঙ্গ ব্যবধানের ওপর তাদের গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে তানিমা জানিয়েছেন, সাক্ষাৎকার দেওয়া ৬৯ শতাংশ নারী নিজেদের সম্প্রদায়ের বাইরে গিয়েয নিরাপদ বোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন। যেখানে ৯৬ শতাংশ পুরুষ নিরাপদ বলে জানিয়েছেন।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জনে নারীরা নিরাপদ বোধ করে এমন পরিবেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে উন্নতি লাভের সমান সুযোগ প্রদান করা আবশ্যক।

তিনি শহরের রাস্তাঘাটে পর্যাপ্ত আলো নিশ্চিত করা, আইন প্রয়োগকারী ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মধ্যে লিঙ্গ-সংবেদনশীল প্রশিক্ষণ প্রদান এবং শহরের নজরদারি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাসহ কিছু তাৎক্ষণিক ব্যবস্থার পরামর্শ দিয়েছেন।

অধিবেশনে আরও দুটি গবেষণা উপস্থাপন করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Trade at centre stage between Dhaka, Doha

Looking to diversify trade and investments in a changed geopolitical atmosphere, Qatar and Bangladesh yesterday signed 10 deals, including agreements on cooperation on ports, and manpower employment and welfare.

1h ago