সাম্প্রদায়িক সহিংসতা: ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন

চট্টগ্রাম অঞ্চলে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলার ভুক্তভোগীরা গত রোববার এক গণশুনানিতে অভিযোগ করেছেন যে গেল মাসে দুর্গাপূজার সময় পূজামণ্ডপে দুর্বৃত্তরা যখন হামলা চালায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তখন নীরব ভূমিকা নেয়।

চট্টগ্রাম অঞ্চলে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলার ভুক্তভোগীরা গত রোববার এক গণশুনানিতে অভিযোগ করেছেন যে গেল মাসে দুর্গাপূজার সময় পূজামণ্ডপে দুর্বৃত্তরা যখন হামলা চালায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তখন নীরব ভূমিকা নেয়।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য, তাদের সাহায্যের আবেদনে পুলিশ ও প্রশাসন সাড়া না দেওয়ায় দুর্বৃত্তরা বিনা বাধায় সহিংসতা চালায়।

এই অভিযোগগুলো অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের উচিৎ এ বিষয়ে গভীর তদন্ত করা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসব সহিংস ঘটনার মূল আসামিদের পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তারা নিজ নিজ এলাকায় অবাধে ঘোরাফেরা করছেন এবং মামলা প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার কারণে এভাবে ভুক্তভোগীদের আবারো নিপীড়নের শিকার হওয়া বা হুমকির মুখে পড়া বাংলাদেশে খুবই সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর এসব সহিংস হামলার বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রতিবাদ হয়েছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল থেকে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বড় বড় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এখনও চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার না করতে পারা খুবই উদ্বেগজনক। এতে অনেক প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। যেমন, কেন এই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এবং কারা তাদের রক্ষা করছে?

ভুক্তভোগীরা বলছেন, হামলাকারীরা এলাকার ছিল না, বহিরাগত ছিল। তাদের অভিযোগ, দুর্বৃত্তরা জেনারেটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করে, যেন রাতের অন্ধকারে হামলা চালানো যায়। অনেক ক্ষেত্রে তারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কার্যালয়ে মিটিং করে নিজেদের সংগঠিত করে।

এসব অভিযোগ কেবল এই ইঙ্গিত করছে না যে হামলাগুলো সুসংগঠিত ছিল, বরং সেগুলো অনেকটা পরিকল্পিতও ছিল। কেবল ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে স্বতঃস্ফূর্ত আক্রমণ নয় এগুলো।

এসব হামলার মূল পরিকল্পনাকারী কারা? তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল? যথাযথ কর্তৃপক্ষকে এসব প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই দিতে হবে। স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হামলার সময় কেন তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে, কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তা তদন্ত করে বের করতে হবে।

কেন হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না, কেন কিছু স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা ভুক্তভোগীদের মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ করছেন, এ সবের তদন্ত হতে হবে। তা না হলে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ যেমন গত কয়েক দশক ধরে বেড়ে চলেছে, এমন চলতেই থাকবে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।

এতে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আরও অবনতি হবে। আর এ ধরনের হামলার মূল হোতারা, উস্কানিদাতারা বীরদর্পে ঘুরে বেড়াবে এবং তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা চালাবে।

অনুবাদ করেছেন শরীফ এম শফিক

Comments

The Daily Star  | English

The war that we need to know so much more about

Our Liberation War is something we are proud to talk about, read about, and reminisce about but have not done much research on.

7h ago