নাগরিক অধিকার নিয়ে হাইকোর্টের সময়োপযোগী আদেশ

পরীমনির মামলা নিয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণগুলোর ব্যাপারে জানতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। কারণ, সেগুলোতে বর্তমান বিচার ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের উদ্বেগের প্রতিফলন ঘটেছে।
পরীমনিকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার ফাইল ফটো। ছবি: সংগৃহীত

পরীমনির মামলা নিয়ে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণগুলোর ব্যাপারে জানতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। কারণ, সেগুলোতে বর্তমান বিচার ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের উদ্বেগের প্রতিফলন ঘটেছে।

এই পত্রিকার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাইকোর্ট জানিয়েছেন, মাদক মামলায় দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারের মত পরীমনিকে রিমান্ডে নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশনা ও আইন অমান্য করেছেন। হাইকোর্ট একইসঙ্গে রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করার জন্য নিম্ন আদালতের দুই বিচারকের সমালোচনা করেছেন।

হাইকোর্টের আদেশটির পূর্ণাঙ্গ টেক্সট গত বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, 'অভিযুক্তকে রিমান্ডে নেওয়ার ক্ষেত্রে একজন পুলিশ অফিসারের প্রাথমিক ও আইনী বিষয়গুলোর দিকে নজর রাখতে হবে' এবং 'সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটরা যেভাবে কয়েক দফায় রিমান্ড মঞ্জুর করলেন, তা আমাদের বিচারিক বিবেককে নাড়া দিয়েছে।'

আমরা হাইকোর্টের এই সময়োপযোগী আদেশকে সাধুবাদ জানাই। এটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিম্ন আদালতের বিভিন্ন কার্যক্রম মানুষের মনে প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। সাম্প্রতিক কালে মানুষ এমন অনেক ঘটনা দেখেছে, যার ফলশ্রুতিতে মনে হতে পারে দেশে কেউ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। যথেচ্ছভাবে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর এবং বাছবিচার ছাড়াই রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করার কারণে পুরো বিষয়টি বিচার ব্যবস্থার খেলনায় পরিণত হয়েছে এবং ন্যায়বিচারের পথকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ থেকে ধারণা করা যায়, পুরো ব্যবস্থায় অসাধু উপকরণের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সেখানে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের অভিযোগও এসেছে, যা ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ হওয়ার সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে।

এ ক্ষেত্রে বলা যায়, হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণগুলো আসার জন্য এটাই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। তবে, আমরা আরও জানতে চাই, এখান থেকে আমরা কোনদিকে অগ্রসর হব?

হাইকোর্ট  স্পষ্টতই সব নাগরিকের ন্যায্য ও স্বচ্ছ বিচার পাওয়ার অধিকার এবং নির্যাতন, নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ থেকে সুরক্ষা পাওয়ার সাংবিধানিক অধিকারের স্বপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের এই উদ্যোগে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার একটি সুযোগ এসেছে। আমরা হাইকোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করছি, এই সুযোগটি গ্রহণ করে আইনের অপব্যবহারের ব্যাপারে একটি তদন্ত পরিচালনা করতে, বিশেষ করে নিম্ন আদালতের ক্ষেত্রে। আমরা আবারও হাইকোর্টকে তাদের সময়োপযোগী পর্যবেক্ষণের জন্য অভিনন্দন জানাই। আশা করছি, এর ফলশ্রুতিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং তা আমাদের আইনি ব্যবস্থায় জবাবদিহিতা নিয়ে আসবে,যেটি খুবই প্রয়োজনীয়।  

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Create right conditions for Rohingya repatriation: G7

Foreign ministers from the Group of Seven (G7) countries have stressed the need to create conditions for the voluntary, safe, dignified, and sustainable return of all Rohingya refugees and displaced persons to Myanmar

4h ago