অর্থ পাচারকারীদের বিচারের প্রক্রিয়া স্পষ্ট করুন

অর্থ পাচারকারীদের ব্যাপারে হাইকোর্টে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার নির্দেশ থাকার পরও এ ব্যাপারে দুদক ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার ব্যর্থতা আমাদেরকে ভীষণভাবে হতাশ করেছে।

অর্থ পাচারকারীদের ব্যাপারে হাইকোর্টে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার নির্দেশ থাকার পরও এ ব্যাপারে দুদক ও অন্যান্য সরকারি সংস্থার ব্যর্থতা আমাদেরকে ভীষণভাবে হতাশ করেছে।

খবরে প্রকাশ, অর্থ পাচারকারীদের বিচার করতে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গত এক বছর ধরে একটি সুয়ো মুটো রুল ও রিট আবেদনের শুনানি করলেও অর্থ পাচারকারীদের নাম, ঠিকানা, বিদেশি ব্যাংকে জমা করা অর্থের পরিমাণ, সম্পদের মতো যথাযথ তথ্যের অভাবে আদেশ দিতে পারছেন না।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ২০২০ সালের একটি প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রায় ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা অবৈধভাবে বিদেশে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) অর্থ পাচারের দিক থেকে বাংলাদেশকে শীর্ষ ৩০ দেশের তালিকায় রেখেছে। বাংলাদেশের অর্থ পাচারকারীদের নাম ২০১৬ ও ২০১৭ সালে যথাক্রমে পানামা পেপারস ও প্যারাডাইস পেপারসে এসেছে।

২০২০ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীও স্বীকার করেন যে, সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশে বিলাসবহুল বাড়ি কিনছেন। এসব তথ্য সামনে আসার পর হাইকোর্ট অর্থ পাচার বন্ধে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে ব্যবস্থা নিতে সুয়ো মুটো আদেশ দেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আদালতের আদেশে কেউ কর্ণপাত করেনি। হাইকোর্ট এরপর থেকে দুদকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বেশ কয়েকবার নির্দেশনা দিয়েছেন, কিন্তু তাতেও ফল আসেনি।

গত বছর দুদক ৪৩ জনের নামসহ একটি 'কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট' আদালতে জমা দিলেও তাতে তাদের নিজস্ব কোনো অনুসন্ধান ছিল না। এখন প্রশ্ন হলো: তারা কেন এটা পারল না? দুদকের আইনজীবীর ভাষ্য, অর্থ পাচারকারীদের ব্যাপারে তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে চেয়েও কোনো তথ্য পায়নি। আবার প্রশ্ন আসে: কেন এমন হলো? পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, অর্থ পাচারকারীদের অনুসন্ধান তার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়।

পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, অর্থ পাচারকারীদের ব্যাপারে অনুসন্ধান ও তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের গুরুতর ঘাটতি আছে। এ থেকে ধারণা করা যায়, অর্থ পাচারকারীরা প্রভাবশালী, তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো সংস্থা ব্যবস্থা নিতে চায় না।

Comments

The Daily Star  | English

Why planting as many trees as possible may not be the solution to the climate crisis

The heatwave currently searing Bangladesh has led to renewed focus on reforestation efforts. On social media, calls to take up tree-planting drives, and even take on the challenge of creating a world record for planting trees are being peddled

27m ago