বিদ্যুৎ ‘উন্নয়ন’ দর্শনে ত্রুটি

বিদ্যুতের চাহিদা ছিল যোগান বা উৎপাদন ছিল না। উৎপাদন বাড়ানো অপরিহার্য ছিল। ২০০৯ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সামনে বাস্তবতা ছিল এমনই।
ছবি: স্টার ফাইল ফটো

বিদ্যুতের চাহিদা ছিল যোগান বা উৎপাদন ছিল না। উৎপাদন বাড়ানো অপরিহার্য ছিল। ২০০৯ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সামনে বাস্তবতা ছিল এমনই। উদ্যোগ বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ই নেওয়া হয়েছিল, ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী লীগ সরকার উৎপাদন বাড়ানোর অংশ হিসেবে তেল ও গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ এগিয়ে নিতে শুরু করে। দলীয় নেতা, সংসদ সদস্য, ব্যবসায়ীদের রেন্টাল-কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়। যাদের অনেকের বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, তারাও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন পায়। দক্ষতা বিচার না করা, বেশি মূল্য, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে টাকা দেওয়ার সুযোগ রেখে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অনুমোদন দেওয়ার পরিপ্রক্ষিতে তখনই প্রশ্ন ওঠে। সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল থাকে। দ্রুত গতিতে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তুলতেই গিয়ে ভবিষ্যতেও কোনো আইনি জটিলতায় যেন পড়তে না হয়, তার জন্যে জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাতের 'দায়মুক্তি আইন-২০১০' পাস করে সংসদে। শত সমালোচনা সত্ত্বেও বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ে, মানুষ চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ পেতে শুরু করে। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি ও দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, জনমনে এক ধরনের স্বস্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প কারখানা বিদ্যুৎ পেতে থাকে। দুঃসহ লোড শেডিং থেকে মুক্তি পায় দেশের মানুষ।

কিন্তু সেই স্বস্তিও এখন দেশের মানুষের জন্যে অস্বস্তির কারণ হয়ে সামনে এসেছে। বিদ্যুৎখাতের 'উন্নয়ন' দর্শনে বড় রকমের ত্রুটি রয়ে গেছে, বলছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। বিদ্যুৎ ছিল না, এখন বিদ্যুৎ আছে। কত বিদ্যুৎ দরকার, উৎপাদন সক্ষমতা কত বাড়ানো হবে, বিজ্ঞানভিত্তিক এই 'উন্নয়ন' দর্শন আমাদের বিদ্যুৎ খাতে অনুপস্থিত।

২০০৮-০৯ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিল কমবেশি ৩ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। চাহিদা ছিল কমবেশি ৭ হাজার মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট। বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ৯ হাজার থেকে ১২ হাজার মেগাওয়াট। উৎপাদন সক্ষমতা কমবেশি ২২ হাজার মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ ১৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। গড় উৎপাদন ৯ হাজার মেগাওয়াট। কারণ সব সময় এর চেয়ে বেশি চাহিদা নেই। সঞ্চালন লাইনের দুর্বলতাও আছে।

সক্ষমতার চেয়ে প্রতিদিন কমবেশি ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম উৎপাদন করতে হচ্ছে।

চুক্তির শর্তানুযায়ী উৎপাদন না হওয়া ১২ হাজার মেগাওয়াটের জন্যেও 'ক্যাপাসিটি চার্জ' মানে বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে টাকা দেওয়া হচ্ছে। টাকার অঙ্কে প্রতি বছর যা প্রায় ৯ হাজার কোটি।

২০২০ সালে সিপিডি জানিয়েছিল প্রায় ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে 'ক্যাপাসিটি চার্জ'র নামে অর্থ দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা সংস্থা আইইইএফ'র গত বছরের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বসিয়ে রেখে অর্থ দেওয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা সক্ষমতার ৫৭ শতাংশ।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ খাতের অভ্যন্তরে ইউটিলিটি বিভাগ থেকে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে। যা প্রকাশিত হয়নি। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা যায়, প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে ২০২৩-২৪ সালে সক্ষমতার ৬৬ শতাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসিয়ে রাখতে হবে। অর্থাৎ 'ক্যাপাসিটি চার্জ'র টাকার অংক আরও বড় হবে।

রেন্টাল, কুইক রেন্টালের মতো ছোট বিদ্যুৎকেন্দ্রের পর, বাংলাদেশ বিপুল অর্থ ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। কিন্তু সেই বিদ্যুৎ কোথায় ব্যবহার হবে, চাহিদা আছে কি না, জাতীয় গ্রিডে কীভাবে আনা হবে, সেই পরিকল্পনা দৃশ্যমান নয়। বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সুবিধা হলো, উৎপাদন খরচ কম পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে ঘটছে তার উল্টো ঘটনা।

১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের বাংলাদেশ-চীন পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুই ইউনিটের প্রথম ইউনিট গত বছর মে মাসে, দ্বিতীয় ইউনিট ডিসেম্বর মাসে বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমোদন পেয়েছে।

৪০০ কিলোভোল্টের সঞ্চালন লাইনের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে আনার সুযোগ নেই। ফলে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না।

একারণে প্রতি মাসে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ১০০ কোটি টাকা 'ক্যাপাসিটি চার্জ' প্রদান করতে হচ্ছে।

যে প্রতিষ্ঠানকে সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ দেওয়া হয়েছিল তারা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি। ঠিকাদার পরিবর্তন করে এখন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চায়না মেশিনারিজ কোম্পানিকে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেছেন, 'আমরা আশা করছি আগামী বছর সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ শেষ হবে। করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কাজে বিঘ্ন ঘটেছে। যত দিন বিদ্যুৎ নিতে না পারব, তত দিন আমাদের ক্যাপাসিটি চার্জ (বসিয়ে ভাড়া) দিতে হবে।' (প্রথম আলো, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১)।

প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় অনুযায়ী যদি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হয়ও, আগে আরও প্রায় দেড় বছর প্রতি মাসে ১০০ কোটি টাকা করে ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান করতে হবে। আবার সঞ্চালন লাইন নির্মিত হলেও যে এই বিদ্যুতের ব্যবহার হবে, তাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

বাণিজ্যিক অনুমোদন দেওয়ার ও সঞ্চালন লাইনের বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম। তিনি বলছেন, 'পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদনের বিষয়টি পরীক্ষায় প্রমাণিত হলেই বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। যেহেতু সঞ্চালন লাইন নেই সেহেতু এক সঙ্গে দুই ইউনিট চালিয়ে সক্ষমতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু বাণিজ্যিক উৎপাদনের অনুমোদন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়ার কারণে পায়রার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়ছে প্রায় ১০ টাকা। অথচ কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অন্যতম যুক্তি ছিল, কম দামে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ না দেখে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্বার্থ দেখা হয়েছে। '

'সঞ্চালন লাইন নির্মিত হলেও এই বিদ্যুতের ব্যবহার হবে না' উল্লেখ করে এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, 'অজুহাত হিসাবে আনা হচ্ছে সঞ্চালন লাইনের বিষয়টি। সঞ্চালন লাইন তৈরি হলেও পায়রার ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের পুরোটা ব্যবহার করা যাবে না। উপরন্তু পায়রায় দ্বিতীয় পর্যায়ের আরও ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যা ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা। সেই বিদ্যুতের ব্যবহার নিয়ে সম্পূর্ণ অস্বচ্ছতা রয়েছে। অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ার বিপুল অর্থ ব্যয়ে অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। কয়লার প্রভাবে জীববৈচিত্র্য যেমন ধ্বংস হচ্ছে, দুর্নীতি-অপচয় হচ্ছে অর্থেরও।'

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম তামিমের বিশ্লেষণ, 'বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২২ হাজার মেগাওয়াট বলা হলেও বাস্তবে সক্ষমতা ১৫-১৬ হাজার মেগাওয়াট। তবে বসিয়ে রেখে ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের ব্যর্থতা বড় ক্ষতির কারণ হয়ে সামনে আসছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সঙ্গে মিল রেখে অবশ্যই সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা দরকার।'

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতি টন ১০০ ডলার মূল্যে কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। বড় পুকুরিয়া কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশে উত্তোলিত কয়লা প্রতি টন ১৫০ ডলার মূল্যে কিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। চীনা কোম্পানি বড় পুকুরিয়া থেকে কয়লা উত্তোলন করে বিক্রি করছে বাংলাদেশ কোল মাইনিং কোম্পানির কাছে। বাংলাদেশ কোল মাইনিং কোম্পানির থেকে বিদেশ থেকে আমদানি করা কয়লার চেয়ে প্রতিটনে ৫০ ডলার বেশি দামে কিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বড় পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র। কয়লার অভাবে বড় পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র সক্ষমতার ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে। তারপরও বড় পুকুরিয়ার উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের দাম পড়ছে সাড়ে ৬ টাকা। পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত প্রতি ইউনিটের দাম পড়ছে ১০ টাকা। প্রশ্ন উঠছে 'দায়মুক্তি' আইনের সুযোগ নিয়ে অনেক বেশি অর্থ ব্যয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।

দেশে আরও কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ চলছে। রামপালে বাংলাদেশ-ভারত নির্মাণ করছে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র। জাপানি অর্থায়নে মহেশখালীর মাতারবাড়িত নির্মিত হচ্ছে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র । রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ চলছে। ২ ইউনিটের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০২৩ সালে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সরকারে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে এ বছরই। এর মধ্যে আবার পিডিবি গ্যাসভিত্তিক ৫টি রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে পুনরায় চুক্তি করার প্রস্তাব পাঠিয়েছে বিইআরসিতে।

বাংলাদেশ ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানিও করছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি রয়েছে ভারতের সঙ্গে। ভারত থেকে কয়লা বিদ্যুৎ প্রতি ইউনিট ৬ টাকা এবং গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রতি ইউনিট ৭ টাকা মূল্যে কিনছে বাংলাদেশ।

নেপাল থেকে বাংলাদেশ জলবিদ্যুৎ কিনবে তৃতীয় পক্ষ ভারতের মাধ্যমে। কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনবে তা জানা না গেলেও, জানা গেছে প্রতি ইউনিটের দাম পড়বে প্রায় ৮ টাকা।

বিদ্যুৎ ছিল না, এখন বিদ্যুৎ আছে। এটাই হয়ে গেছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল দর্শন। দর্শনের সঙ্গে সুচিন্তিত বিজ্ঞানভিত্তিক কর্মপরিকল্পনার ঘাটতি থাকায়, স্বস্তিদায়ক সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের মানুষ। বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র, পরিবেশের জন্যে অত্যন্ত ক্ষতিকর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আসার পরও বিদ্যুতের মূল্য কমছে না, কমার সম্ভাবনাও থাকছে না। 'ক্যাপাসিটি চার্জ'র নামে ব্যয় হচ্ছে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা। একদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই টাকা নিয়ে যাচ্ছে কিছু মানুষ, অন্যদিকে জনগণকে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে অনেক বেশি মূল্য দিয়ে।

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English
IMF lowers Bangladesh’s economic growth

IMF calls for smaller budget amid low revenue receipts

The IMF mission suggested that the upcoming budget, which will be unveiled in the first week of June, should be smaller than the projection, citing a low revenue collection, according to a number of finance ministry officials who attended the meeting.

39m ago